শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সম্রাট আকবর ছিলেন সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল

সম্রাট আকবর ছিলেন সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল

অধ্যাপক ইরফান হাবিব (জন্ম ১৯৩১) খ্যাতিমান ভারতীয় ইতিহাসবিদ, তাত্ত্বিক। ভারতীয় ইতিহাসের প্রাচীন ও মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গবেষক। ‘অ্যান টেলস অব এনসিয়েট ইন্ডিয়ান হিস্ট্ররি’, ‘আকবর অ্যান্ড হিজস ইন্ডিয়া’, ‘মাইরোয়ান ইন্ডিয়া’, ‘কনফ্লোটিং কলনিয়জম’, ‘ইন্ডিয়ান ইকনোমি’ গ্রন্থসমূহ বিশ্বজুড়ে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রিধারী অধ্যাপক হাবিব বর্তমানে ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। সম্প্রতি আলীগড়ে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের—রাশেদুর রহমান

কেমন আছেন?

ভালো আছি। (মৃদু হেসে) এ বয়সে যতটা ভালো থাকা যায়।

স্যার, ‘আগ্রারিয়ান সিস্টেম অব মোগল ইন্ডিয়া ১৫৫৬-১৭০৭’ গ্রন্থটি আপনার প্রথম জীবনের গবেষণা।

‘আগ্রারিয়ান সিস্টেম অব মোগল ইন্ডিয়া ১৫৫৬-১৭০৭’ গবেষণা বেশ পুরনো। এটা আমার পিএইচডি অভিসন্দর্ভ। এটি প্রকাশ হয় ১৯৬৩ সালে। এ গবেষণায় প্রাক-ঔপনিবেশিক আমলে ভারতের জনসাধারণের কৃষির অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যা এর আগে গুরুত্বসহকারে বিচার করা হয়নি। এ গবেষণায় মোগল আমলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে। বিশেষ করে প্রশাসন ব্যবস্থা এবং জমিদারদের অবস্থান এখানে স্পষ্ট করা হয়েছে।

ভারতীয় উপমহাদেশে সম্রাট আকবরের সুলহ-ই-কুল (পূর্ণাঙ্গ শান্তি) এবং ইনসানুল কামিল (পূর্ণাঙ্গ মানুষ) নীতি এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।

সে সময়কার অবস্থাটা আগে বিবেচনায় রাখতে হবে। মুঘল সম্রাট আকবরের ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র কয়েক দশক আগে ভারতে কবিরের ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কবির কাশির কাছাকাছি একটি গ্রামে মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেও হিন্দু আর ইসলাম ধর্মের মিশ্রণে তার মধ্যে এক অদ্ভুত চরিত্রের দেখা মিলেছিল। গুরু রামানন্দের প্রভাবে একসময় সে দুই ধর্মকেই অস্বীকার করে বসে। এই নিয়ে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দুরাও ছিল নাখোশ। তবে কবিরের প্রভাবে ভারতীয়রা এক নতুন দিকে মোড় নিচ্ছিল। এমনকি শিখদের গুরুগ্রন্থের উপরও ছিল কবিরের সুফিবাদী চিন্তার প্রভাব। এদিকে সে সময় ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে মাহদাভী আন্দোলন ক্রমে জোরদার হচ্ছিল। আর আকবরের দরবারে শিয়া-সুন্নিসহ আরও নানান মতাবলম্বী মুসলমানরা একে-অপরের দিকে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছিল। এসব দেখে আকবর বিরক্ত হয়। অনেকেই বলে থাকে, আকবর তার ধর্মীয় নীতি বদলেছিল হিন্দুদের সমর্থন পাওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, আকবর তার ধর্মীয় নীতি পরিবর্তন করার আগেই রাজপুতানার উপর তার আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আকবরের ধর্মীয় নীতি পরিবর্তনের সম্ভবত খুব বেশি প্রয়োজন ছিল না। মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক মতভেদ আর নানান ধর্মের মধ্যে বিরোধ দেখেই আকবর নতুন ধর্মীয় নীতি প্রণয়নের চেষ্টা করেছিল।

আকবরের সুলহ-ই-কুল ধারণাকে আমরা কি বলব?

এটি নিশ্চয় নতুন চিন্তা ছিল না। পূর্ণাঙ্গ শান্তির এমন পাঠ ইবনুল আরাবিও তার ওয়াহাদাতুল ওজুদ (আল্লাহর অস্তিত্বের ঐক্য) মতবাদের মাধ্যমে দিয়ে গেছেন। আকবরের সুলহ-ই-কুল বলে, সব ধর্মই মহান। প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য পৃথিবীতে সর্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। মানুষের জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসা। সুতরাং ধর্মীয় মতভেদ ভুলে যেতে হবে। মূলত আকবরই উপমহাদেশে প্রথম সব ধর্মের মানুষকে এক ছাতার নিচে আনতে চেষ্টা করেছিল। সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল সম্রাট আকবর। চেয়েছিল সব ধর্মের অনুসারীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। আর তার সুলহ-ই-কুল মতবাদ ছিল বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার একটা মাধ্যম।

মুসলমানদের মধ্যে মতভেদটা সেসময় এত বেশি ছিল কেন?

সে সময় কোথায়? মুসলমানদের মধ্যে মতভেদ তো সেই শুরু থেকেই ছিল। মাজহাব নিয়ে যেমন বাড়াবাড়ি ছিল তেমনি ছিল শিয়া-সুন্নি পার্থক্যও। তাছাড়া সূফিবাদী চিন্তাধারায়ও ছিল ভিন্নতা। যেমন ইবনুল আরাবির ওয়াহাদাতুল ওজুদ মতবাদ ভারতীয় সুফিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু আহমদ সরহিন্দি সাহেবরা ওয়াহাদাতুল ওজুদকে অস্বীকার করে বসেন। ভারতে তখন সুফিবাদী আন্দোলনও নতুন দিকে মোড় নিচ্ছিল। সুতরাং, মুসলমানদের মধ্যে মতভেদটা আকবরের সময়েই কেবল নয়, বহু আগে থেকেই ছিল।

আকবরের ধর্মীয় নীতির বিরুদ্ধে আবদুল কাদির বাদাউনি, আবদুন নবী, মাখদুম-উল মুলক আর আহমদ সরহিন্দিরা প্রচণ্ড বিরোধিতা করেছিলেন। এটা কতটা ঠিক?

সম্রাট আকবরের বিরোধিতা করে সেসময় টিকে থাকা ছিল কঠিন। যেমন দরবারের প্রভাবশালী আমলা শায়েখ আবদুন নবীকে তো বলতে গেলে আকবর হত্যাই করেছেন। এছাড়াও আকবরের বিরোধীরা খুব খারাপ সময় কাটাচ্ছিল। এর মধ্যেও অবশ্য অনেকে তার ধর্মীয় নীতির বিরোধিতা করেছেন। যেমন আবদুল কাদির বাদাউনি। তিনি আকবরের দরবারে সবচেয়ে প্রতিবাদী ছিলেন। তার মুনতাখাব-উত-তাওয়ারিখে অনেক কিছুই জানা যায়। যেগুলো আমরা আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরীতে খুঁজে পাই না। বিশেষ করে বাদাউনির লেখা নাজাতুর রশিদ ইতিহাসগ্রন্থ আমাদের সামনে অনেক অজানা বিষয়েরই উন্মোচন করেছে। সে সময় আকবরের বিরুদ্ধে কারা কারা আন্দোলন করেছে এ বিষয়টা নাজাতুর রশিদে বিস্তারিত আছে। বাদাউনি ছাড়াও আহমদ সরহিন্দি সাহেব প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছেন। তবে তার আন্দোলন বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চিঠি লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। জাহাঙ্গীরের আমলে অবশ্য আহমদ সরহিন্দি সাহেবকেও আমরা কিছুটা সমঝোতার নীতি অবলম্বন করতে দেখি। যেমন তিনি জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে উপঢৌকন গ্রহণ করেছিলেন। তবে আহমদ সরহিন্দি কিংবা অন্যরা আকবরের প্রচণ্ড বিরোধিতা করেছিল, এটা ঠিক নয়। কারণ, আকবরের সরাসরি বিরোধিতা করার সাহস সেসময় কারোরই ছিল না। এমনকি প্রসিদ্ধ আলেম শেখ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভীও তার আখবার উল আখইয়ার গ্রন্থে কিছু লিখেননি আকবরের বিরোধিতা করে।

মীর বকশী শেখ ফরিদ বুখারীও তো আকবরের নীতির বিরোধী ছিলেন? আহমদ সরহিন্দির অনেক চিঠিই তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা।

শেখ ফরিদকে আকবরের বিরোধী বলা যায় না। তাকে বরং ইতিহাসে একজন অত্যাচারী হিসেবেই দেখা যায়। অনেক হিন্দুকেই তিনি বাড়ি-ঘর ছাড়া করেছেন। তাছাড়া তিনি তো আকবরের কাছ থেকে নিয়মিতই সুবিধা নিতেন। সম্রাটের সরাসরি বিপক্ষে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে এটা ঠিক যে, শেখ ফরিদ বুখারী সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে আহমদ সরহিন্দির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং তার পক্ষে বেশকিছু কাজও করেন।

সম্রাট আকবর দীন-ই-ইলাহি নামে এক নতুন ধর্ম ব্যবস্থা শুরু করেছিল। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।

এটাকে নতুন ধর্ম বলা যাবে কী না তা বিবেচনা করতে হবে। যেমন দীন-ই-ইলাহীর ইংলিশ অনুবাদে ব্লকম্যান সাহেব লিখেছেন— ডিভাইন ফেইথ (ঐশ্বরিক বিশ্বাস)। এই অনুবাদটাই তো প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া সম্রাট আকবরের দরবারে যে সব জেসুইট মিশনগুলো এসেছে, তারাই আকবরকে অমুসলমান আখ্যা দিয়েছে। এর কারণ গভীরভাবে খুঁজে দেখতে হবে। আসলে আকবর সব ধর্মের প্রতিই সহানুভূতি দেখিয়েছিল। আর এটাই অনেকের পছন্দ হয়নি। বিশেষ করে তার দরবারের সুবিধাবাদী মৌলভীরা। যারা মোগলদের কাছ থেকে অনেক অনুদান পেত। আকবর সব ধর্মের প্রতিই সহানুভূতির দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল। এর ফলে মৌলভীদের অনুদান পেতে সমস্যা হচ্ছিল।

বাংলাদেশেও সব ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি বিশ্বাস করা হয়।

তাই নাকি! এটা হলে তো খুবই ভালো। ভারতে কিন্তু এখনো এক্ষেত্রে অনেক বাধা রয়ে গেছে। সত্যি বলতে আধুনিক পৃথিবীতে সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই সমঝোতার মনোভাব থাকতে হবে। সবাইকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। তবেই হয়তো পূর্ণাঙ্গ শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

১৯৪৭-এর দেশ ভাগ ও আলীগড়ের উপর আপনার প্রভাব কী ছিল?

সে সময় আমার বয়স ছিল ১৬ বছর। সবাই জানে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে মুসলিম লীগের আধিপত্যের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা এসেছিল। আমি আমার কংগ্রেসপন্থি পিতার (বিখ্যাত ঐতিহাসিক মোহাম্মদ হাবিব, ১৮৯৫-১৯৭১) কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রেই জাতীয়তাবাদী চেতনা পেয়েছিলাম। এর অবশ্য কারণও ছিল। আমার কাছে মনে হতো, মুসলিম লীগে অনেক সমস্যা আছে। তবে সে সময় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ছিল। আলীগড়ে আমরা সবাই খুব ভয়ে ছিলাম। তখন হরিয়ানাতে অসংখ্য মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছিল। যমুনা নদীতে ভাসছিল তাদের লাশ। মুসলমানদের জন্য চলাচল নিরাপদ না হওয়ায় ১৯৪৭-এর ডিসেম্বরে আমরা ভ্রমণ করতে পারছিলাম না। অনেককেই ট্রেনে হত্যা করা হয়েছিল। গান্ধীজীর অনশনে এ অবস্থা ১৯৪৮-এর জানুয়ারিতে হঠাৎ করেই পরিবর্তিত হয়ে যায়। তবে এ মাসেই গান্ধীজীকে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে আলীগড়ে অনেক বড় জনসমাবেশ হয়েছিল। সে সমাবেশে আমিও ছিলাম। ওটাই ছিল আমার কমিউনিস্ট সমাবেশে প্রথম অংশগ্রহণ।

আলীগড়ের উপরও দেশভাগের প্রভাবটা কম পড়েনি। আমি এখানে ছাত্রাবস্থায় দেখেছি তিন ভাগের এক ভাগই ছিল অমুসলিম। চারভাগের একভাগ শিক্ষকও ছিল অমুসলিম। এখানে বর্তমানে নব্বই ভাগই হলো মুসলিম। অমুসলিম শিক্ষক নেই বললেই চলে। নিয়োগ পদ্ধতিটাই এমন যে এখানে অমুসলিমদের আসার সুযোগ খুব কম। খুব অল্প হিন্দু ছাত্রই হোস্টেলে থাকে। এএমইউ’র (আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়) পরিস্থিতিই এর মানসিকতা পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। ছাত্রাবস্থায় আমরা দিওয়ালি এবং গুরু নানকের জন্মদিন পালন করতাম। লাড্ডু খেতাম সবাই একসঙ্গে। এখন এসব আর এখানে হয় না।

ভারতে কমিউনিস্টদের পতন হলো কেন?

আমরা দেশের অবস্থাকে কোনো দোষ দিতে পারি না। আমরা এজন্য কেবল নিজেদেরই দায়ী করতে পারি। কমিউনিস্ট আন্দোলন অনেক ভুল করেছে। প্রথম ভুল ছিল পাকিস্তান আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া। ১৯৪৮ সালে আমরা পুরোপুরি সরকারবিরোধী হয়ে পড়েছিলাম। এর ফলে কমিউনিস্টদের ভিত্তিটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। যেমন আমরা জমিদারপ্রথা বিলোপের বিষয়টাকে অস্বীকার করেছিলাম। আদর্শিকভাবে আমাদের আরও মজবুত আন্দোলন করা প্রয়োজন ছিল। বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন এবং কৃষক সংগঠনগুলোকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে কাজ করা প্রয়োজন ছিল। আমরা এসব কিছুই করতে পারিনি।

ইতিহাসে এত বিতর্ক কেন? অনেক বিষয়ই অস্পষ্ট মনে হয়।

ইতিহাসে কোনো বিতর্ক নেই। ইতিহাস কেবল ঘটনাগুলোরই সাধারণ বর্ণনা দেয়। তবে এটাকে সাধারণ গালগল্প থেকে আলাদা হতে হয়। সঠিক ইতিহাস জাতিকে উপকৃত করে যেভাবে একজন মানুষকে তার তীক্ষ স্মৃতিশক্তি উপকৃত করে থাকে। ইতিহাসের উদ্দেশ্য বৈদিক যুগ কিংবা ইসলামের প্রথম যুগকে মহিমান্বিত করা হয়। ইতিহাসের ভুল পাঠ অনেক সময় বর্বরতাকেও মহান করে তুলতে পারে। ইসলামী খেলাফতের অধীনে খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা শান্তিতে বসবাস করেছে। আবার ইসলামী খেলাফতের অধীনেই অনেকে জুলুমের শিকার হচ্ছে। যেমন সিরিয়ায়। সুতরাং সামগ্রিকভাবে কোনো বিষয়কে এক কথায় বলে দেওয়া সম্ভব নয়।

ইতিহাস উপাত্তের উপর নির্ভর করে। যদিও ইতিহাসবিদরা অনেক বিষয়েই মতবিরোধ করে থাকে। অনেক গবেষকই নিজস্ব চিন্তা-চেতনা আর রাজনৈতিক আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত থাকে। এটা কেন হয়?

প্রত্যেকেই ঐতিহাসিক উপাত্তকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে থাকে। এটা ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, কাজের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে হতে পারে। অবশ্য এরা সবাই ঐতিহাসিক, এ ব্যাপারে সন্দেহ আছে। একজন সত্যিকারের ইতিহাসবিদ কখনোই ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করতে পারে না। এমন অনেক গবেষকও আছেন যারা রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছেন।

আপনার গবেষণা, বইপত্র বিশ্বের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য হয়েছে।

আমি চেষ্টা করেছি ভারতবর্ষের ভূ-রাজনৈতিক ইতিহাসকে নতুনভাবে পর্যবেক্ষণ করতে। ভারতীয় সমাজ, সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। যা অন্য জাতি, ধর্মের মানুষকে সহজে আকর্ষণ করে, প্রভাবিত করে। সেক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ ইতিহাস রচনা ছিল আমার লক্ষ্য। হয়তো সে কারণে আমার গবেষণা অন্যকে প্রভাবিত করে।

সর্বশেষ খবর