শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি

সাইফ ইমন

বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি

লাইব্রেরি বা গ্রন্থাগার হলো জ্ঞানের ভাণ্ডার। বলা হয় একটি জাতির লাইব্রেরি যত বেশি সমৃদ্ধ সেই জাতিও তত বেশি সমৃদ্ধ। আবার এমনও প্রবাদ রয়েছে, একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য আগে তার জ্ঞানের ভাণ্ডার লাইব্রেরি ধ্বংস করে দাও। অতি প্রাচীন সময় থেকেই লাইব্রেরির প্রতি রয়েছে আলাদা কদর। আধুনিক বিশ্বে এমন সব বিখ্যাত লাইব্রেরি রয়েছে যা জ্ঞানের ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি পাঠকের শুধু চোখ জুড়িয়ে দেয় দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী দিয়ে। বিশ্বের সেরা কিছু লাইব্রেরি নিয়ে আজকের আয়োজন—

 

তিয়ানজিয়ান লাইব্রেরি অব চায়না

এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। লাইব্রেরিকে এভাবেই বর্ণনা করেছে কবিগুরু রবি ঠাকুর। আবার বলা হয়ে থাকে যে জাতির লাইব্রেরি যত উন্নত সেই জাতি তত উন্নত। সেই পথেই হাঁটছে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি গণচীন। দেশটির তিয়ানজিন প্রদেশের বিনহাই  জেলায় গড়ে তোলা হয়েছে একটি বিশালাকার লাইব্রেরি। শুধু তাই নয় এই লাইব্রেরির দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলী আপনাকে করবে মুগ্ধ। যেন বইপ্রেমিদের জন্য স্বর্গের মতো। এখানে ঠাঁই পেয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের শ্রেষ্ঠ ১২ লাখ বই। জ্ঞানপিপাসুদের জন্য এক জ্ঞানসমুদ্র গড়ে তুলেছে তিয়ানজিয়ান। লাইব্রেরিটির চমকপ্রদ অবকাঠামো হতবাক করবে সবাইকে। এখানে রয়েছে বিশাল গোলাকার অডিটোরিয়াম। যার ভিতরটা সম্পূর্ণ সাদা রঙের। বই রাখার তাকগুলোর দিকে তাকালে আপনার মাথা ঘুরে যাবে। অনেকটা স্টেডিয়ামের গ্যালারির আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। বই পড়তে চাইলে পাঠককে সিঁড়ি দিয়ে উঠে যেতে হবে তাকের ওপর। এরপর তাকের ওপর বসেই পড়া যাবে বই। চীনের দৃষ্টিনন্দন লাইব্রেরিকে বলা হয়ে থাকে ‘আইস অব বিনহাই’। বাইরে থেকে লাইব্রেরিটা দেখতে চোখের মতো মনে হবে। লাইব্রেরি ভবনটি ডিজাইন করেছে ‘এমভিআরডিভি’ নামের একটি ডাচ্ প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান। সহযোগিতায় ছিল তিয়ানজিন প্রদেশের আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট। এটি নির্মিত হয়েছে ৩৪ বর্গ মিটার জমির ওপর। নির্মাণে সময় লেগেছে তিন বছর। এতে একটি বিশ্রামাগার, বেশ কিছু সেমিনার রুম ও কম্পিউটার ক্যাফে রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই লাইব্রেরিকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক লাইব্রেরিগুলোর একটি বলে দাবি করেছে।

 

লাইব্রেরি অব

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়

লাইব্রেরি অব ইয়েল এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ ও বিখ্যাত লাইব্রেরি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিও বিখ্যাত খুব। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরিটি স্থাপিত হয় ১৭০১ সালে। একাডেমিক লাইব্রেরির মধ্যে এটি অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সংগ্রহে আছে প্রচুর বই। সংখ্যাটা একবার অনুমান করুন তো দেখি। ২২টি আলাদা লাইব্রেরির সমন্বয়ে গঠিত এই লাইব্রেরিতে ১ কোটি ৩০ লাখ বই রয়েছে। সংগ্রহের দিক থেকে এটি শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরিগুলোর একটি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জ্ঞানী-গুণীদের আগমনস্থল বলা হয় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরিকে। হ্যাভেন, কানেকটিকাট, আমেরিকায় অবস্থিত ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি সিস্টেম স্থাপিত হয় ১৭০১ সালে। এটি সব থেকে বড় একাডেমিক লাইব্রেরির অন্যতম। সংগ্রহের দিক থেকে এটি শ্রেষ্ঠ লাইব্রেরিগুলোর একটি এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জ্ঞানী-গুণীদের আগমনস্থল।

 

প্রাচীনতম

আলেকজান্দ্রিয়া

আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগার ছিল প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাগারগুলোর একটি। এটি মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরে অবস্থিত ছিল। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মিসরের টলেমিক রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে এই গ্রন্থাগারটি তৈরি হয়েছিল। ৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানদের মিসর আক্রমণের সময় পর্যন্ত এই গ্রন্থাগার কার্যকরী ছিল। গ্রন্থ সংগ্রহের পাশাপাশি এই গ্রন্থাগারে বক্তৃতাকক্ষ, সভাকক্ষ ও বাগানও ছিল।

মোটকথা এটি ছিল প্রাচীন বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞানের ধারক ও বাহক। এখানে প্রাচীন বিশ্বের বহু বিশিষ্ট দার্শনিক পড়াশোনা করেছিলেন। ধারণা করা হয় টলেমি প্রথম সোটারের অথবা তার ছেলে টলেমি দ্বিতীয় ফিলাডেলফাসের রাজত্বকালে এই গ্রন্থাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয় ও বাস্তবায়ন করা হয়। এই গ্রন্থাগার পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। যার ফলে বহু স্ক্রোল ও বই চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়।

 

ব্রিটিশ লাইব্রেরি

ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থাগার ব্রিটিশ লাইব্রেরি। যুক্তরাজ্যের জাতীয় গ্রন্থাগার এটি। লন্ডনে ১৭৫৩ সালে স্থাপিত লাইব্রেরিটি পৃথিবীর বিখ্যাত গবেষণা গ্রন্থাগারগুলোর একটি। এতে আছে প্রায় সব ভাষার বিভিন্ন ধরনের বইয়ের বিপুল সংগ্রহ। এখানে রয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখের বেশি সংগ্রহ। সংগৃহীত বইয়ের সংখ্যা ২ কোটি ৩৫ লাখ। প্রতি বছর ব্রিটিশ লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় যুক্ত হয় প্রায় ৩০ লাখ নতুন বই। ফলে প্রতি বছর এই লাইব্রেরির বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাতে যোগ হচ্ছে পুরো পৃথিবীর সাহিত্য সম্ভার।

 

ডয়েচে বিবলিওথিক

জার্মানির জাতীয় গ্রন্থাগার হলো এই ডয়েচে বিবলিওথিক। এই বইয়ের বিশাল গ্রন্থশালাটি স্থাপিত হয় ১৯১২ সালে। এটির কাজ মূলত জার্মান ভাষার প্রকাশনা সংগ্রহ করা। তবে জার্মানিতে প্রকাশিত অন্য ভাষার প্রকাশনাও এখানে সংগ্রহ করা হয়। তবে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের বইগুলো এখানে নেই। এটি পৃথিবীর বড় লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই বিখ্যাত লাইব্রেরির সংগ্রহে আছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ১০টি বই ও অন্যান্য প্রকাশনা। সাহিত্য কিংবা তত্ত্ব সম্পর্কিত সব ধরনের বই আছে এখানে।

 

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না

চায়নার জাতীয় লাইব্রেরিটি হলো ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না। এই লাইব্রেরির সংগ্রহে আছে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৭ বই। প্রায় ১২ লাখ সাময়িকী এর অন্তর্ভুক্ত। গত শতকের শুরুতেই এই লাইব্রেরি তৈরি হয়। চীনা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় সংগ্রহ আছে এতে। লাইব্রেরিটি স্থাপিত হয় ১৯০৯ সালে চীনের বেইজিংয়ে। চীনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের বই আছে এই লাইব্রেরিতে। এ ছাড়াও পাবেন বিশ্বসাহিত্যের নানা রকম বইয়ের সমাহার। এক সময় চায়নার অধিবাসীরা বিভিন্ন কলোনিতে ভাগ হয়ে বসবাস করত। তখনো সেসব কলোনিতে থাকত নানা রকম বই ও তথ্যসমূহের সংগ্রহশালা। পরবর্তীতে গড়ে উঠে বড় বড় শহর। সব সংগ্রহশালা একত্রিত করে তৈরি হয় এই ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না।

 

লাইব্রেরি অব কংগ্রেস

বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি হচ্ছে ‘লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’। ১৮০০ সালের ২৪ এপ্রিল আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই লাইব্রেরিতে ১৬ মিলিয়ন বই এবং ১২০ মিলিয়ন অন্যান্য ইনফরমেশন সংগৃহীত রয়েছে। এখানের সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার এতে ৫৪০ মাইল দীর্ঘ সেলফ রয়েছে যাতে ৯০ মিলিয়ন বই রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে রয়েছে বিভিন্ন দেশের পত্রপত্রিকা, ছবি, হাতে লেখা বই, মানচিত্রসহ অবাক করার মতো অনেক কিছু। ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা এই লাইব্রেরিতে আক্রমণ করে এবং তারা লাইব্রেরির ৩ হাজার মূল্যবান বই পুড়িয়ে দেয়। ১৮১৫ সালের সাবেক প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন ২৯ হাজার ৯৫০ ডলার খরচ করে লাইব্রেরিটির সংস্কার করেন। কিন্তু ১৮৫১ সালে লাইব্রেরিতে আবার আগুন ধরে। এতে দুই তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পুড়ে যায় প্রায় ৩৫ হাজার ভলিউম বই। পরবর্তীতে ৮২ হাজার ভলিউম বই এখানে যোগ করা হয়। রয়েছে চীন, জাপান, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বই। বইগুলো অধিকাংশ বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, বিভিন্ন দেশের আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রচিত। এখানে রয়েছে হস্তলিখিত বইয়ের বিরাট সংগ্রহশালা।

লাইব্রেরি পরিচালনার খরচে টাকা জোগাড় করতে ট্রাস্টি ফান্ড গঠন করা হয়। এরপর আমেরিকার অনেকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই ফান্ডে টাকা জমা দেওয়া শুরু করে। অনেকই দেয় বিভিন্ন বই এবং পত্রপত্রিকা। এভাবে ধীরে ধীরে লাইব্রেরির সংগ্রহ বাড়তে থাকে। এখনো লাইব্রেরিটি বিশ্বের সবচয়ে বড় লাইব্রেরির স্থান দখল করে রেখেছে।

 

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব কানাডা

কানাডার জাতীয় লাইব্রেরিটি বহন করে আসছে কানাডার আদিবাসীদের জাতিগত ঐতিহ্য। আবার এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরি। একবার ধারণা করুন এই লাইব্রেরিতে কত সংখ্যক বই আছে। শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। এই লাইব্রেরির সংগ্রহে রয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ৬ হাজার ৫৪টি বই। লাইব্রেরিটি কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিভাগ। কানাডার ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ধরনের লেখা, ছবি ও দলিলপত্র সংগ্রহ ও সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এই লাইব্রেরি। কানাডার সবচেয়ে সুন্দর এই লাইব্রেরিটি কানাডার সরকারি সম্পত্তি। এতে আরও রয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের ও নানা সময়ের দুর্লভ বইসমূহ। এই লাইব্রেরিতে রয়েছে বিশালাকার হলরুম। হলরুমের চারপাশের দেয়ালজুড়ে তাকে তাকে সাজানো রয়েছে বই আর বই।

 

রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি

রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি। এটি রাশিয়ার জাতীয় গ্রন্থাগার। এই লাইব্রেরির কার্যক্রম শুরু ১৭৯৫ সালে। তখন রাশিয়ার জারতন্ত্র চলছে। এটি রাশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন, বৃহত্তম ও জনপ্রিয় লাইব্রেরি। এর সংগ্রহে রয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বই।

শুনলে অবাক হবেন এই লাইব্রেরির রয়েছে ২৭৫ কিলোমিটার বই রাখার বুকসেল্ফ। এখানে ১ কোটি ৩০ লাখ বিভিন্ন রকম গবেষণা সংরক্ষিত রয়েছে। আরও রয়েছে সাড়ে ৩ লাখ মিউজিক রেকর্ড এবং ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ম্যাপ। জারতন্ত্রের অবসানের পর ১৯২২ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত সব বইয়ের একটি করে কপি রয়েছে এই রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরিতে। আগে এই লাইব্রেরির নাম ছিল ‘স্টেট লাইব্রেরি অব ইউএসএসআর’। ১৯২৫ সালে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি।

 

হার্ভার্ড লাইব্রেরি

বিশ্বের অন্যতম আরও একটি লাইব্রেরি হচ্ছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরি সিস্টেম। প্রায় ৯০টি শাখা সমন্বিত। সর্বমোট বইয়ের সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লাখ। এটি আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো লাইব্রেরি সিস্টেম এবং পৃথিবীর প্রাচীন একাডেমিক লাইব্রেরি সিস্টেমগুলোর মধ্যে অন্যতম। বই সংগ্রহের দিক দিয়ে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম লাইব্রেরির এই হার্ভার্ড লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরি প্রথম স্থাপিত হয় ১৬৩৮ সালে। একইসঙ্গে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বড় লাইব্রেরি নেই। এখানে রয়েছে জ্ঞানের এক বিপুল সমাহার। পুরনো সব দলিল নথিপত্র থেকে শুরু করে বিশ্বখ্যাত সব রকম বই রয়েছে এই লাইব্রেরিতে।

এখানকার বিশাল বিশাল কক্ষে আপনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বসে যে কোনো বই পড়তে পারবেন।

 

ন্যাশনাল ডায়েট লাইব্রেরি

ন্যাশনাল ডায়েট লাইব্রেরি বিশ্বের অন্যতম আরও একটি বৃহত্তম লাইব্রেরি।

লাইব্রেরিটি জাপানের টোকিও শহরে অবস্থিত। ১৯৪৮ সালে এটি জননীতি সংক্রান্ত গবেষণার জন্য স্থাপিত হয়। এতে আছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪ হাজার ১৩৯টি বই। জাপান জুড়ে এই লাইব্রেরির ২৭টি শাখা আছে। বিজ্ঞান, ধর্ম, রাজনীতি, আইন, মানচিত্র, সংগীতসহ সব ধরনের বই এতে আছে। এই বিখ্যাত লাইব্রেরিটি অনেকটা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি ইউনাইটেড লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের আদলে। এর ভিতর রয়েছে বিশালাকার কক্ষসমূহ। যার চারপাশ জুড়ে সারি সারি সাজিয়ে রাখা হয়েছে লাখ লাখ বই। জাপানি ভাষার বই বাদেও এখানে রয়েছে প্রচুর নানা ভাষায় রচিত বইসমূহ। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্যের এই বিশাল ভাণ্ডার ধারণ করছে জাপানের জাতীয় ঐতিহ্য।

 

নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি

বিশ্বের অন্যতম প্রধান গ্রন্থাগার এবং আমেরিকার বিখ্যাত গবেষণা গ্রন্থাগার হলো নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি। এটি স্থাপিত হয় ১৮৯৫ সালে। লাইব্রেরিটির ৮৭টি শাখা রয়েছে। এই লাইব্রেরির সংগ্রহে রয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার ১৯২টি বই। প্রতি বছর এই লাইব্রেরিতে নতুন নতুন বইসমূহ যোগ করা হয়। গত বছর নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক লাইব্রেরি সমূহের উন্নয়ন বইকেনাসহ অন্যান্য কাজের জন্য মোট ৪৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদন করেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসা মার্ক-ভিভেরিটো। নিউইয়র্কবাসী মনে করেন লাইব্রেরিকে উন্নত করার অর্থ কমিউনিটির ক্ষমতায়ন। লাইব্রেরিগুলোই তাদের কমিউনিটির ব্যাকবোন।  বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক লাইব্রেরিগুলোর অন্যতম এই নিউইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি। এখানে রয়েছে নানা ভাষায় রচিত সব রকম বই।   

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর