শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

হজরত শামস-ই তাবরেজ

হজরত শামস-ই তাবরেজ

কল্পনার একীভূতকরণ, শরীর ও মনকে পৃথিবীর সব শক্তির কেন্দ্রবিন্দুর কাছে সমর্পিত করার মাধ্যমে সুফিবাদের আত্মশুদ্ধি পরিপূর্ণতা লাভ করে। সুফি সাহিত্যিক জালালউদ্দিন রুমির লেখার মাধ্যমে হজরত শামস-ই তাবরেজের নাম বিশ্বব্যাপী আমরা জানতে পারি। রুমি যখন তুরস্কের কোনিয়ায় মাদ্রাসায় শিকতা করতেন তখন বিশ্বব্যাপী হজরত রুমির নাম ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আধ্যাত্মিক চর্চা করতেন। একদিন পথে এক জীর্ণ পোশাকধারী ব্যক্তির সাক্ষাৎ পান। সে ব্যক্তির প্রশ্ন ছিল— হে রুমি, ইমানের সংজ্ঞা কী? হজরত রুমি নানাভাবে তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন ইমানের সংজ্ঞা। কিন্তু সেই জীর্ণ পোশাকধারী ব্যক্তি তার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি বললেন, রুমি, ইমানের সংজ্ঞা হচ্ছে, নিজের থেকে নিজেকে পৃথক করে ফেলা। তার উত্তর শুনে হজরত রুমি তার অনুগত হয়ে  গেলেন। তিনি হজরত শামস-ই তাবরেজ। যার সঙ্গে রুমি গভীর ধ্যান সাধনায় লিপ্ত থাকতেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে হজরত শামস-ই তাবরেজের সঙ্গে খাজা কুতুব উদ্দিন বখতিয়ার কাকির আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ছিল। জালালউদ্দিন রুমি যখন হযরত শামস-ই তাবরেজের সংস্পর্শে সংসারের প্রতি মনোসংযোগ হারিয়ে ফেললেন, তখন সবাই পরিব্রাজক হযরত শামস-ই তাবরেজ কে দায়ী করেন। অনেক ইতিহাসবিদের মতে কয়েকজন হিংস্র মানুষ হজরত শামস-ই তাবরেজকে হত্যা করেন। জালালউদ্দিন রুমি (রহ.) তার বিখ্যাত পুস্তক দিওয়ানে শামসে তাবরেজ তার গুরুকে হারানোর যন্ত্রণার কথা বর্ণনা করেছেন। এই বইটি পাঠ করলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন গুরু-শিষ্যের মধ্যে পবিত্র আধ্যাত্মিক বন্ধন ভেঙে গেলে একজন প্রেমিক শিষ্য কী যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকেন। একই যন্ত্রণার কথা তিনি মালাকাতে শামসে তাবরেজ পুস্তকে বর্ণনা করেছেন। হজরত শামস-ই তাবরেজ সম্পর্কে বলা হয়, তিনি ছিলেন সেই সময়ের আধ্যাত্মিক জগতের সম্রাট। তিনি নির্জনতা প্রিয় ছিলেন এবং একা ছিলেন। পরিব্রাজক ছিলেন বলে তাকে পারিন্দা বলা হতো। তিনি এক জায়গায় স্থির থাকতেন না। তার সমাধি রয়েছে তুরস্কের তাবরেজ নগরীতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর