প্রতিটি বিশ্বকাপেই কমপক্ষে একজন তরুণ ফুটবলার চোখ-ধাঁধানো পারফর্ম করে চড়ে বসেন খ্যাতির মগডালে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ বিশ্বকাপে চমৎকার নৈপুণ্য দেখিয়ে নজর কেড়েছিলেন জার্মানির টমাস মুলার। আর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপের আসরে চমক দেখিয়েছে কলম্বিয়ার তরুণ হামেস রদ্রিগেজ। রাশিয়া বিশ্বকাপে কারা মাঠ মাতাবে তা নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। এ আলোচনায় বেশ কয়েকজন তরুণ ফুটবলারের নামও উঠে আসছে। এ নিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদেরও কৌতূহলের যেন অন্ত নেই। বিশ্বকাপের সম্ভাবনাময় তেমনই কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড়ের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো—
জিওভানি লো সেলসো
[ আর্জেন্টিনা ]
আর্জেন্টিনার অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যে ইতিমধ্যে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন লো সেলসো। ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) ট্রেবল শিরোপা জয়ে রয়েছে তার অনন্য ভূমিকা। গোল স্কোরিং ক্ষমতা না থাকলেও করাতে (অ্যাসিস্ট) দারুণ পটু তিনি। চলতি মৌসুমে ৬ গোল করার পাশাপাশি নিশানাভেদে সহায়তা করেছেন ৭ বার। আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডে এবার অন্যতম ভরসা তাই তরুণ সেলসো।
গাব্রিয়েল জেসুস
[ ব্রাজিল ]
মূলত জেসুসের কারণেই সুপারস্টার নেইমারের ওপর চাপ কমে যাচ্ছে। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তিনি। এবার ম্যানচেস্টার সিটিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতাতে রেখেছেন বড় ভূমিকা। সিটির হয়ে ১৭ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৫টি। ব্রাজিলের হেক্সা বিশ্বকাপ জেতার মিশনে অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন ২১ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার।
মার্কো অ্যাসেনসিও
[ স্পেন ]
রিয়াল মাদ্রিদের শুরুর একাদশের নিয়মিত সদস্য তিনি। তাকে ভাবা হচ্ছে মাদ্রিদের পরবর্তী রাজা।
এবার বিশ্বকাপে স্পেনের তুরুপের তাস ২২ বছরের এ তরুণ। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেন অনূর্ধ্ব-২১ দলকে ফাইনালে নেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তার।
টিমো ওয়ার্নার
[ জার্মানি ]
ক্ষিপ্রতা, ট্যাকটিকস সব দিক দিয়েই জার্মানি দলের অন্য খেলোয়াড়দের চেয়ে আলাদা তিনি। তার কাঁধে ভর করে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেল ফিফা কনফেডারেশন কাপ জিতে জার্মানি। এবার তাকে ঘিরে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে অন্যতম হট ফেভারিটরা।
সারদার আজমুন
[ ইরান ]
যতটা দক্ষতা থাকলে এশিয়ান ফুটবলে ভালো খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হন কেউ, আজমুনের রয়েছে তার চেয়েও বেশি।
পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে ৩০ ম্যাচ খেলে করেছেন ২২ গোল। স্বাভাবিকভাবেই নজর থাকছে ২৩ বছর বয়সী ইরানি এ ফুটবলারের ওপর।
হারভিং লোসানো
[মেক্সিকো ]
এককথায় মেক্সিকো জাতীয় দলের আলো তিনি। এ মৌসুমে স্থানীয় লিগে নিজে করেছেন ১৭ গোল, সহায়তা করেছেন ১১ গোলে। মেক্সিকান ফুটবলপ্রেমীদের আশা, রাশিয়া বিশ্বকাপে দেশের জার্সি গায়েও দাপট দেখাবেন ২২ বছরের এই তরুণ।
হুয়াং হি-চ্যান
[ দক্ষিণ কোরিয়া]
দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই বিস্ময় তরুণ। একক নৈপুণ্যে অস্ট্রিয়ার রেড বুল জালসবুর্গকে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে তুলেছেন তিনি। এবার জাতীয় দলে সেই পারফরম্যান্স অনূদিত করতে চান চ্যান।
কিলিয়ান এমবাপে
[ ফ্রান্স ]
ফরাসি এ তরুণের দক্ষতা-সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। ১৯ বছরের এই তরুণ এরই মধ্যে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। ফুটবল বোদ্ধাদের মতে, এমবাপেই এবারের আসরে বিস্ময়কর কিছু করে দেখাবেন। পিএসজির হয়ে সদ্য শেষ মৌসুমটাও কাটিয়েছেন দারুণ। ২১ বার ঠিকানায় বল জড়ানোর পাশাপাশি সহায়তা করেছেন ১৬ গোলে।
রদ্রিগো বেতানুকর
[ উরুগুয়ে ]
ফের পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাচ্ছে উরুগুয়ে। তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২১ বছর বয়সী বেতানকুর। এবার দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মাঝমাঠের কারিগর তিনি। খেলেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। হিগুয়েইন-দিবালাদের পায়ে বলের জোগানটা আসে এ তরুণের পা থেকেই।