হাসসান আল-বলকিয়াহ
তেল এবং গ্যাস ইন্ডাস্ট্রি থেকে আয়হাসসান আল-বলকিয়াহ,(পুরো নাম : সুলতান হাজি হাসসান আল-বলকিয়াহ মু’ইযযুুদ্দিন ওয়াদ দৌলাহ ইবন সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন সা’দুল খাইরি ওয়াদ্দিন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালের ১৫ জুলাই। ব্রুনাইয়ের ২৯তম এবং বর্তমান সুলতান। সেই সঙ্গে তিনি দেশটির প্রথম এবং দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রীও। তিনি স্যার মুদা তৃতীয় ওমর আলী সাইফুদ্দিন (রাজি) এবং ইস্তেরি পেনগিরান আনাকের (রানী) বড় ছেলে। তার পিতা ৪ অক্টোবর ১৯৬৭ সালে সিংহাসন ত্যাগের পর তিনি ব্রুনাইয়ের সুলতানের সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সুলতান বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত, ফোর্বস ২০০৮ সালে সুলতানের মোট সম্পদের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার বলে উল্লেখ করে। সুলতান কুয়ালালামপুরের ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনে মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে তিনি রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্ট, যুক্তরাজ্য থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৯৬৮ সালের তার অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পিতার মতো তিনিও যুক্তরাজ্যের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের নিকট থেকে নাইট উপধি পান।
কিং মোহাম্মদ ষষ্ঠ
বিনিয়োগ করেছেন সিগার হোল্ডিংসে
কিং মোহাম্মদ ষষ্ঠ জন্মগ্রহণ করেন ১৩৬৩ সালের ২১ আগস্ট। তিনিই হলেন মরক্কোর বর্তমান বাদশাহ। বর্তমানে প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের তালিকার ৫ম অবস্থানে রয়েছেন মরক্কোর এই বাদশাহ। তার পিতা মরক্কোর বাদশা ২য় হোসাইনের মৃত্যুর পর ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে তিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। মরক্কোর এই বাদশাহ মোহাম্মদ হলেন বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের সন্তানদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী লায়লা লতিফা হাম্মউয়ের প্রথম সন্তান। জন্মের দিনই মোহাম্মদ রাজ্যের উত্তরাধিকারী এবং রাজপুত্র ঘোষিত হন। তাকে শিশুকাল থেকেই ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক শিক্ষা দেয়া হয়।
ষষ্ঠ মুহাম্মদের একমাত্র ভাই হলেন যুবরাজ মৌলাবি রাশিদ এবং তিন বোন হলেন যথাক্রমে রাজকন্যা লাল্লা মারিয়ম, রাজকন্যা লাল্লা আসমা ও রাজকন্যা লাল্লা হাসনা। তিনি বান্নাইয়ের রাজকন্যা লাল্লা সালমার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বান্নাইকে তার বিবাহ উপলক্ষে রাজকীয় রীতি অনুযায়ী ব্যক্তিগত উপাধি রাজকন্যা প্রদান করা হয়। এই দম্পতির রয়েছে দুই সন্তান। এরা হলেন যুবরাজ মৌলায়ি হাসান এবং রাজপুত্র রাজকন্যা লাল্লা খাদিজা।
সালমান বিন আবদুুল আজিজ
তেল ইন্ডাস্ট্রি থেকে আয়
বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তিনি সৌদি আরবের বর্তমান বাদশাহ। তিনি ২০১১ সাল থেকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে¡ ছিলেন। তারও আগে ১৯৬৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রিয়াদ প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত ছিলেন। বাদসাহ সালমান ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি তার সৎভাই বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি বর্তমানে প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের তালিকার ২য় অবস্থানে রয়েছেন। সৌদি বাদশাহ হিসেবে তিনি পবিত্র কাবা শরিফেরও প্রধান।
সালমান শাসনকার্যের অভিজ্ঞতা লাভ করেন অনেক কম বয়সেই। মাত্র ১৮ বছর বযসে ১৯৫৪ সালে তাকে আমির এবং রিযাদের সহকারী গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। গভর্নর হিসেবে তিনি রিয়াদের উন্নয়নে অবদান রাখেন। তিনি তার দেশের পর্যটন রাজধানী প্রকল্প এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মৈত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পশ্চিম সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ও বিশেষ অবদান রাখেন।
সালমান বিন আবদুল আজিজ তিনবার বিবাহ করেন। তার প্রথম স্ত্রী সুলতানা বিনতে তুর্কি আল সৌদাইরি ২০১১ সালে ৭১ বছর বয়সে মারা যান।
সুলতানা ছিলেন সালমানের বিভিন্ন দাতব্য কার্যক্রমের অনুপ্রেরণা। এই পরিবারের সালমানের সন্তানরা হলেনÑ প্রিন্স ফাহাদ, প্রিন্স আহমদ, প্রিন্স সুলতান, প্রিন্স আবদুল আজিজ, প্রিন্স ফয়সাল এবং প্রিন্সেস হাসসা।
খলিফা বিন জায়েদ নাহিয়ান
আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির একজন
খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। তিনি একাধারে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপ্রধান বা বাদশাহ, আবুধাবীর আমীর এবং রাষ্ট্রীয় ইউনিয়ন ডিফেন্স ফোর্সের প্রধান। তিনি একজন প্রখ্যাত দানবীর হিসেবেও পরিচিত। নিজের সম্পদ হতে দুস্থদের সহায়তায় এ পর্যন্ত ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক ব্যয় করেছেন। তিনি দুবাইয়ের আমীর পদে আসীন হন ২০০৪ সালে। তার পিতার মৃত্যুর পর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
ইতিপূর্বে যুবরাজ থাকাকালে তার পিতা অসুস্ততার কারণে ১৯৯০ সালের শেষ দিক হতেও তিনি রাষ্ট্রপ্রধানের মতো দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটিরও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই প্রতিষ্ঠানটি ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ততোধিক মূল্যের সম্পদের ব্যবস্থাপনা করে থাকে। ধারণা করা হয়, আল নাহিয়ান পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এত সম্পদের অধিকারী এই ধনকুবের সারা বিশ্বে দানশীল হিসেবেই সুপরিচিত।