২০ অক্টোবর, ২০১৫ ১০:৪৪

পায়ে দেবীর ট্যাটু, হেনস্থা বিদেশিকে

অনলাইন ডেস্ক

পায়ে দেবীর ট্যাটু, হেনস্থা বিদেশিকে

ভারতে এসে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাদের। ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এমন অভিযোগ করেছেন ম্যাট কিথ নামে এক অস্ট্রেলীয় ছাত্র। অভিযোগ, হিন্দু দেবদেবীদের ট্যাটু লাগানোয় ম্যাট ও তার বান্ধবীকে হেনস্থা করেছেন বেঙ্গালুরুর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের চাপে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠিও তিনি লিখতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ম্যাট।

ম্যাটের পায়ে হিন্দু দেবী ইয়েল্লাম্মা এবং পিঠে গণেশের বিশাল ট্যাটু করা রয়েছে। এবং তা থেকেই যাবতীয় ঝামেলার সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন ওই অস্ট্রেলীয় ছাত্র। ঘটনা শনিবারের। ম্যাটের দাবি, তিনি ও তার বান্ধবী এমিলি এক রেস্তোরাঁয় খাচ্ছিলেন। তখনই স্থানীয় কিছু লোকজন তাদের ছবি তুলতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। ধীরে ধীরে ভিড়টা বাড়তে থাকে। কিছু ক্ষণের মধ্যে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এসেও তাদের হেনস্থা শুরু করেন। তার বান্ধবীকে শারীরিকভাবে নিগ্রহও করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ম্যাট।

এরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ চলে আসে। জোর করে তাদের স্থানীয় অশোকনগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি করেছেন ম্যাট। জানিয়েছেন, সেখানেই বেশ কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রেখে তাকে দিয়ে জোর করে একটি চিঠি লেখানো হয় তার পরই তিনি আর তার বান্ধবী ছাড়া পান।

ফেসবুকের সেই পোস্টে ম্যাট লিখেছেন, ‘‘থানা ছাড়ার আগে ক্ষমা চেয়ে চিঠি লিখতে বাধ্য হলাম। আতঙ্কের পরিবেশ, যেখানে একটা ভিড় রীতিমতো হুমকি দিচ্ছে। ভারত আর হিন্দুত্বকে আমি পূর্ণ শ্রদ্ধা করি। আর তাই জন্যই ৩৫ ঘণ্টা ধরে এই গণেশের ট্যাটুটা বানিয়েছি। দেবী ইয়েল্লাম্মার ট্যাটু বানাতে লেগেছে চার ঘণ্টা। আমার বান্ধবীর যৌন নিগ্রহ করার অধিকার কারও নেই।’’

এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালের ডেপুটি কমিশনার সন্দীপ পাটিল জানিয়েছেন, বিষয়টিকে তারা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তার কথায়, ‘‘ওই বিদেশি যুগলের যদি সত্যিই হেনস্থা হয়ে থাকে, তা হলে তা চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে বেঙ্গালুরুর স্থানীয় বাসিন্দা আর পুলিশ যদি গোটা ঘটনার পিছনে থেকে থাকে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। থানায় কী হয়েছে, তার রিপোর্ট চেয়েছি।’’

স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফে অবশ্য গোটা বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। বিজেপি নেতা রমেশ যাদব বলেছেন, ‘‘ওই এলাকার আশপাশে বস্তি রয়েছে। বরং ওই বিদেশি যুগলের নিরাপত্তা নিয়েই আমরা বেশি চিন্তিত। তা ছাড়া, গোটা ঘটনায় আমরা পুলিশকে জড়াইনি। ওই যুবকই সবার আগে পুলিশ ডাকেন।’’
ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলীয় সরকারও। অস্ট্রেলীয় হাই কমিশনের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের হেনস্থা করার যে ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলীয় দূতাবাস বেঙ্গালুরুর স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। যোগাযোগ করা হয়েছে ওই যুগলের সঙ্গেও।’’

 

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২০ অক্টোবর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর