৯ নভেম্বর, ২০১৫ ২০:৫৫

শিলিগুড়ি মডেলই কাল হল বিজেপির

নিজস্ব প্রতিবেদক


শিলিগুড়ি মডেলই কাল হল বিজেপির

শিলিগুড়ি মডেলই কাল হল বিজেপির। ভোট শতাংশের দিক থেকে বিহারে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে এলেও লালু-নীতীশ জোটবদ্ধ হওয়ায় আসন সংখ্যার বিচারে লড়াইয়ে দাঁড়াতে পারেনি তারা। লড়াইটা এক বনাম একাধিক হওয়ায় ভোটের সমীকরণটা পুরোপুরি পাল্টে যায়। ধরাশায়ী হয় বিজেপি। তবে সমীকরণ যা-ই বলুক, হারের কারণ খুঁজতে চুপ করে বসে নেই দলের শীর্ষ নেতারা।

দলের এই শোচনীয় ফলের কাঁটাছেঁড়া করতে আসরে নেমে পড়লেন খোদ নরেন্দ্র মোদি।  নির্বাচনের আগে যেভাবে বিহারের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে ফেলেছিলেন মোদী-অমিত, তার পরেও এই ফলে রীতিমতো অবাক দলীয় নেতৃত্ব। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের একটা আশঙ্কা ছিলই, কিন্তু দিনের শেষে মাত্র ৫৮টি আসন ঝুলিতে আসবে সেটা বোধহয় মেনে নিতে পারেননি মোদি। তাই তড়িঘড়ি সোমবার দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডেকে ধরাশায়ী হওয়ার শিকড় খোঁজার চেষ্টায় নেমেছেন মোদি। বিহারে দলের শোচনীয় হার এবং পরবর্তী রণনীতি নিয়ে আলোচনা করতে এ দিন সকালেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করতে যান অমিত শাহ। তবে এই ফলের পরেও দলেরই একাংশ বলছেন, আসন কম পেলেও ভোট শতাংশের দিক থেকে কিন্তু দল সুবিধাজনক জায়গাতেই আছে। আর এর থেকেই দলের পুনরুজীব্বনের আশা দেখছেন তারা। এ দিন দলের সংসদীয় বৈঠকের বৈঠক শেষে অরুণ জেটলি বলেন, “বিরোধী ঐক্যের জন্যই বিহারে ভরাডুবি হয়েছে দলের। এই হারের দায় সবাইকে নিতে হবে।” পাশাপাশি, মোহন ভাগবতের সংরক্ষণ তত্ত্বের প্রভাবেই যে এই হার সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন জেটলি। বরং এই হারের জন্য  জোটবন্ধনকেই দায়ী করেছেন তিনি।

আগামী বছরেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। বিহারে বড় ধাক্কা খাওয়ার ফলে আগামী দিনে এর প্রভাব কতখানি পড়তে পারে সেটাও এই বৈঠকে আলোচনা করার পর পরবর্তী রণনীতি স্থির করা হবে বলে সূত্রের খবর। এমনিতেই বিজেপির এই পরাজয়ে এ দিন সকালেই শেয়ার বাজারে ধস নামে। এটা যেন অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এ দিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছেন, দলের এই হারে দেশের অর্থনীতিতে কোনও প্রভাব পড়বে না।

অর্থনীতিতে যা-ই প্রভাব পড়ুক, বিজেপির কাছে এই হার গলার কাঁটার মতো বিঁধে রইল। যে রণনীতি নিয়ে মহারাষ্ট্র, জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপি জয়ধ্বজা উড়িয়েছে, বিহার নির্বাচনে সেই উন্নয়নকে মডেল করে এগোতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাজ্যসভায় দল সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ায় দেখা গিয়েছে অনেক বিলই পাশ করাতে পারেননি মোদি-জেটলিরা। এ দিক থেকে বিহার নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল বিজেপির কাছে। এই নির্বাচনে জয়লাভ করলে অনেকটাই সুবিধা করতে পারতেন মোদী। কিন্তু যে ভাবে হালের পানি কেড়ে নিল মহাজোট, তাতে যে তার সরকারকে আরও বিড়ম্বনায় পড়তে হবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

বিহারের পরই দলের লক্ষ্য রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। ২০১৭-য় সেখানে নির্বাচন। ভারতীয় রাজনীতিতে বরাবরই বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ সব দলের কাছেই একটা চ্যালেঞ্জ। এ বার বিহারে মহাজোট মোদী-অমিত শাহের  সেই চ্যালেঞ্জকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।
 
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর