২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ১৭:২৪

বাংলাদেশে 'শিগগিরই হামলার' হুঁশিয়ারি আইএসের: টাইমস অব ইন্ডিয়া

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশে 'শিগগিরই হামলার' হুঁশিয়ারি আইএসের: টাইমস অব ইন্ডিয়া

বাংলাদেশে আইএস মনোনীত একজন আঞ্চলিক নেতার নেতৃত্বে জিহাদিরা সংগঠিত হচ্ছে এবং দ্রুতই হামলা শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট তথা আইএস। ইতিমধ্যে বিদেশিদের আক্রমণ করে বাংলাদেশে তাদের উপস্থিতি জানান দিয়ে বলে তারা দাবি করেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই বলে আওয়ামী লীগ সরকারের দাবির সমালোচনা করেছে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক এই জঙ্গি সংগঠনটি।

আইএসের অনলাইন ম্যাগাজিন ‘দাবিক' এর বরাত দিয়ে সোমবার ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ঢাকায় বিদেশি নাগরিকদের হত্যার মাধ্যমে তারা তিউনিসিয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশাল ভূখণ্ডে কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। আল-কায়েদার নেতৃত্বের সমালোচনা করে নিজেদেরকেই আন্তর্জাতিক জিহাদের নেতা দাবি করে বলা হয়েছে, ‘ভূখণ্ডের পরিধি এতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হবে যেন আইএস অধিকৃত ভূখণ্ডের সূর্য অস্ত না যায়।’

‘দাবিক’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ‘আইএস থাকবে। সিরিয়া থেকে ইরাক, মধ্য এশিয়া থেকে ককেসাস, তিউনিশিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আইএসের বিস্তার ঘটেছে। যদিও বাংলাদেশে বর্তমানে মুশরিক সরকার ক্ষমতায়। খিলাফত ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, যেন আইএস ভূখণ্ডে সূর্য অস্ত না যায়।’

বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের উপর হামলা ও হোসেনি দালানের শিয়া সমাবেশে হামলার দাবি করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জিহাদের নেতা হিসেবে আইএসের দাবিকে যৌক্তিক প্রমাণ করে।

আইএস দাবি করেছে, ‘ খলিফার আদেশে সম্মিলিত উম্মাহ একযোগে কাজ করছে...এর ধারাবাহিকতায় তিউনিশিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশাল খিলাফতে ক্রুসেডার জাতির একজন নাগরিকও শান্তি ও নিরাপত্তা পাবে না। এজন্য আরেক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার উদ্দেশ্যে আইএস বলেছে, এককভাবে জিহাদ করার কোনো যুক্তি নেই, এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘একজন কুরাইশি নেতার’ নেতৃত্বে জিহাদ করার।’

কুরাইশি নেতা হিসেবে আইএসের ‘খলিফা’ আবু বকর আল বাগদাদিকে বোঝানো হয়েছে এবং তারা দাবি করেছে খলিফাকে অবশ্যই ঐতিহ্যবাহী কুরাইশ গোত্রের হতে হবে।

আইএসের দাবি, সম্প্রতি উত্তর আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের মিত্র জিহাদিদের শক্তিশালী অবস্থান এবং যেহেতু ইরাক ও সিরিয়ায় তাদের সদরদপ্তর তাই বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের আইএসকে হালকা করে দেখা মোটেও উচিত হবে না।

আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে কটাক্ষ করে আইএস বলছে, ‘মুজাহিদিনরা বুঝতে পেরেছে একজন শক্তিশালী নেতাই পারে বিজয় ছিনিয়ে আনতে, কোনো মূর্খ লোক যে গুপ্তস্থানে লুকিয়ে থেকে পুরোনো ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করে তার দ্বারা জিহাদ সম্ভব নয়।’

আইএস ম্যাগাজিনে দাবি করা হয়েছে, সারাবিশ্বের জিহাদিরা এক খলিফার নেতৃত্বে কাজ করছে। সে ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও আইএস মনোনীত একজন আঞ্চলিক নেতার নেতৃত্বে জিহাদিরা সংগঠিত হচ্ছে এবং দ্রুতই হামলা শুরু করবে।

যদিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি তবে অনলাইন পোস্টটি থেকে ধারণা করা হয়, সালাফি ধারায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের শীর্ষ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি আইএসের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে।

ইতালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের পর সরকারের আইএস থাকার কথা অস্বীকার করা প্রসঙ্গে আইএস বলেছে, বারবার ‘বাংলাদেশে কোনো আইএস নেই’ বলে স্লোগান দেয়ার কোনো যুক্তি নেই।

সবশেষে আইএস ক্ষমতাসীন আওয়মী লীগ সরকারকে ‘মুরতাদ’(মতবিরোধী) বলে অভিহিত করলেও বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামকেও ছেড়ে কথা বলেনি। মানব রচিত আইনে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় জামায়াতে ইসলামেরও তীব্র নিন্দা করেছে আইএস।

বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর