প্রতি বছর ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ক্যামব্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশ্বের সেরা মিথ্যুক প্রতিযোগিতা’। এ বছর সেই খেতাব জিতলেন ৫৯ বছরের মাইক নেলর। প্রতিযোগিতার নিয়মানুযায়ী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সব প্রতিযোগীদের পাঁচ মিনিট করে সময় দেয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে তাদের গুছিয়ে মিথ্যা বলতে হয়। বিচারকদের রায়ে একজনকে নির্বাচিত করা হয় ‘বিশ্বের সেরা মিথ্যাবাদী’।
ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিমের কাউন্টি ওয়েস্ট কামব্রিয়ার ‘ব্রিজ ইন’-এ প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশ্বের সেরা মিথ্যুক প্রতিযোগিতা’। এ প্রতিযোগিতার ইতিহাস অনেক পুরনো। উনিশ শতকে ব্রিজইনের প্রখ্যাত ভূস্বামী উইল রিটসনের স্মরণে প্রতি বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই ভূস্বামী প্রজাদের সঙ্গে মিথ্যাচার করার জন্য কুখ্যাত ছিলেন। নিয়ম অনুসারে প্রতি বছর একটি বিশেষ দিনে প্রতিযোগীরা উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ব্রিজইনের কাছেই একটি ছোট পানশালায় জড়ো হন। তবে প্রতিযোগিতা নিয়ে খোদ ইংল্যান্ডেও ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। মিথ্যা বলায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগে বিশেষ করে বিভিন্ন গির্জা তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছে।
এ বছর প্রতিযোগী মাইক নেলর দারুণ পারফরম্যান্স দেখান। একটুও না থমকে তিনি বলে গিয়েছেন তার রাজকীয় বংশপরিচয়ের কথা, যা তিনি জানতে পেরেছেন প্যারামেডিক্যাল সূত্রে। তারপর মাইক শুনিয়েছেন বাকিংহ্যাম প্রসাদে তার ভ্রমণের এক অনবদ্য কল্পকাহিনী। দাড়ি কামাতে গিয়ে গাল কেটে গেলে মাইক নাকি এক হাতুড়ের কাছে যান, আর তার কাছেই শোনেন তার শরীরে রাজরক্তের অবস্থানের কথা।এহেন মিথ্যাচার যে আসর মাত করবে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আর তাই ‘সেরা মিথ্যুক’-এর শিরোপা জোটে মাইকের কপালে।
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থানে আসেন কিথ পোর্টার। তিনি শোনান আইরিশ সমুদ্রে এক সাগর-দানবের পাল্লায় পড়ার কথা। সেই গল্পে খানিকটা নমক ডালেন তিনি দুই মৎস্যকন্যার সঙ্গে আশনাইয়ের উপকাহিনী ফেঁদে।
ওয়েস্ট ক্যামব্রিয়ার এই প্রতিযোগিতা ইংল্যান্ডে রীতিমতো প্রসিদ্ধ। মজা পেতে সারা দেশ থেকে এখানে হাজির হন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। পেশাদার বিচারক আর আইনজীবীদের এই প্রতিযোগিতায় জাজের আসনে বসানো হয় না। বছর দুয়েক আগে। ফিল্ম পরিচালক ক্রিস রিকেট এই প্রতিযোগিতার উপরে নির্মাণ করেছেন এক অনবদ্য তথ্যচিত্র।
সূত্র: দ্য ডেইলি মিরর
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা