৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ১১:৪৭

হিজবুত আতঙ্কে ভারত

অনলাইন ডেস্ক

হিজবুত আতঙ্কে ভারত

ভারতে এবার হিজবুত তাহরির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কট্টরপন্থি সংগঠনটি সেখানে শাখা খুলেছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। আর হিজবুতের হাত ধরে দেশটিতে আইএস-এর প্রভাব আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দিল্লি। এ নিয়ে দেশটির বহুল প্রচারিত আনন্দবাজার পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ''এত দিন তাদের অস্তিত্বের কথা জানা গেছে মূলত দুই পড়শি দেশ, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। এ বার কট্টরপন্থী সংগঠন হিজবুত তাহরির ভারতেও শাখা খুলেছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।''

''দিল্লির আশঙ্কা, হিজবুত হাজির বলেই ভারতে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর প্রভাব আরও বাড়তে পারে। পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে এই প্রবণতার প্রমাণ মিলেছে। বিভিন্ন সমীক্ষা ও রিপোর্ট জানাচ্ছে, ইউরোপের বিস্তীর্ণ অংশে, বিশেষ করে ব্রিটেনে হিজবুত-সদস্যদেরই একাংশ পরে আইএসে যোগ দিয়েছে। আইএসে যোগ দেওয়ার পরে ওই যুবকেরা জঙ্গি কার্যকলাপে জড়ালেও কট্টর আদর্শ তথা চরমপন্থায় তাদের মগজধোলাই হয়েছিল হিজবুতেই। এই দৃষ্টান্তেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, কট্টরপন্থীরা ইউরোপের ধাঁচে হিজবুত থেকে আইএসে সামিল হবে।''

''১৯৫৩ সালে জেরুজালেমে প্রতিষ্ঠা লগ্নেই খিলাফত বা ধর্মীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছিল হিজবুত। অভিন্ন লক্ষ্য আইএসেরও। খিলাফত প্রতিষ্ঠা। হিজবুতের দাবি, বিভিন্ন দেশে তাদের সদস্য-সংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি। হিজবুত আন্তর্জাতিকভাবেই নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায়।''

''শুধু দিল্লি নয়, ভারতে হিজবুতের শাখা খোলার খবরে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বা আইবি-ও উদ্বিগ্ন। কোথায় কোথায় ওই সংগঠনের শাখা আছে, কোন কোন রাজ্যের যুবকেরা তার সদস্য হয়েছে, তাদের কার্যকলাপের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কারও যোগ আছে কি না, তা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে সম্প্রতি যোগাযোগ করেছে আইবি।''

''উত্তর ও দক্ষিণ ভারতেই হিজবুত তাদের শাখা খুলেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। সংগঠনের মাথারা আপাতত এক দল যুবকের মগজধোলাইয়ের মধ্যেই নিজেদের কাজকর্ম সীমাবদ্ধ রেখেছে। তাদের ঠেকাতে গোয়েন্দারা কী করছেন? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, আপাতত ওই সংগঠনের উপরে নজরদারি চালানো হচ্ছে। ঠিক সময়ে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।''

''ভারতের ক্ষেত্রে আইএসের বিপদ সম্পর্কে এত দিন গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, সাইবার জগতে নিয়মিত আনাগোনা করা শিক্ষিত যুবকদের একাংশ আইএসের মতাদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে এবং তাদের ২৫-২৬ জন (অধিকাংশই পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের) ইতিমধ্যেই ইরাক ও সিরিয়ায় গিয়ে যুদ্ধ করছে। আবার কলকাতার উত্তর শহরতলির কৈখালির মেহেদি মসরুর বিশ্বাসের (বেঙ্গালুরুতে ধৃত ইঞ্জিনিয়ার) মতো লোকজন সাইবার দুনিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে আইএসের হয়ে। কেউ কেউ আইএসের ওয়েবসাইট এবং তার সঙ্গে সংযুক্ত ও সমমনোভাবাপন্ন বিভিন্ন সাইটে গিয়ে নিজেদের সমর্থনের কথা জানাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের ঠানের চার জন যুবক ইরাকে গিয়ে আইএসের হয়ে যুদ্ধ করছিল। দেশে ফিরে আসার পরে তারা এখন জেলে। এই অবস্থায় ভারতে হিজবুতের শাখা খোলার কথা জেনে আইএসের বিপদ সম্পর্কে গোয়েন্দাদের অন্যভাবে ভাবতে হচ্ছে। অনেকটা কেঁচে গণ্ডূষ করে একই সঙ্গে আইএস এবং হিজবুতের মোকাবিলা করার জন্য কোমর বাঁধছেন তাঁরা।''

বিডি-প্রতিদিন/৩০ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর