শিরোনাম
২৬ জুন, ২০১৬ ২০:২২

উচ্চ মাধ্যমিকে 'প্রথম' বিহারের সেই রুবি রায় গ্রেফতার!

অনলাইন ডেস্ক

উচ্চ মাধ্যমিকে 'প্রথম' বিহারের সেই রুবি রায় গ্রেফতার!

রুবি রায়

বিহারে পরীক্ষা দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগে প্রথম রুবি রায়কে। আগেই তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার প্রেক্ষিতে গতকাল বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির দফতরের কর্তাদের সামনে সাক্ষাৎকার দিতে পটনায় এসেছিলেন রুবি। সেখান থেকে বেরোতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে বিহারের বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান লালকেশ্বর সিংহ, তাঁর স্ত্রী তথা জেডিইউ বিধায়ক ঊষা সিংহ, বিষুণ রায় কলেজের অধ্যক্ষ বাচ্চাপ্রসাদ যাদব-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

বিহারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর টিভি সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নের ‘আজব’ জবাব দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিলেন বৈশালী জেলার ভগবানপুরের বিষুণ রায় কলেজের ছাত্রী রুবি। পলিটিক্যাল সায়েন্সকে ‘প্রডিক্যাল সায়েন্স’ বলে গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই নড়েচড়ে বসে বিহার সরকার। গত ৩ জুন সাক্ষাৎকারের জন্য মেধাতালিকায় থাকা অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে রুবিকেও সমিতির দফতরে ডাকা হয়েছিল। সে দিন অসুস্থতার জন্য হাজির হননি তিনি। ফের তাঁকে ১৭ জুন ডাকা হয়। সে দিনও আসেননি। তৃতীয় বার ডাকার পরে এ দিন হাজিরা দেন রুবি।

এদিন পটনায় পরীক্ষা সমিতির দফতরে হাজির হওয়ার পরে সাংবাদিকরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। কিছু বলতে চাননি রুবি। শুধু জানতে চান, ‘‘কোথায় যেতে হবে!’’ এর পরেই সমিতির দফতরের ভিতরে ঢুকে যান। সেখানে দু’ঘণ্টা ধরে তাঁর সাক্ষাৎকার চলে। বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতি সূত্রে খবর, ৭ জনের বিশেষজ্ঞ দল রুবির পরীক্ষা নেন। হস্তাক্ষর-সহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। রুবির পরীক্ষার ফল আগেই স্থগিত করেছিল পরীক্ষা সমিতি।

এ দিনের সাক্ষাৎকারের পরে সেই ফল বাতিল করা হয়। রুবি পরীক্ষা সমিতির দফতরে হাজির হয়েছেন খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন বিশেষ তদন্তকারী দলের ডিএসপি। বের হওয়া মাত্রই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুলিশকর্তারা।

জানা যায়, ‘তুলসীদাস প্রণাম’— পরীক্ষকরা তুলসীদাসের উপর একটি প্রবন্ধ লিখতে বলেন, এই উত্তরটাই সাদা খাতায় লিখেছিলেন রুবি। পরীক্ষকরা যখন এ বিষয়ে তাঁকে আরও কিছু লিখতে বললেও এর বেশি কিছু লিখতে পারেননি। বিশেষজ্ঞ পরীক্ষকরা জানিয়েছেন, এ বছরের বোর্ডের পরীক্ষায় তুলসীদাসের উপর এই প্রশ্নটিই ছিল। রুবির খাতা পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি যথেষ্ট ভালই লিখেছিলেন। কিন্তু সেই প্রশ্নই যখন শনিবারের পরীক্ষায় দেওয়া হল, শুধু তুলসীদাস প্রণাম লিখেই ছেড়ে দেন রুবি! পরীক্ষকরাও অবাক হয়ে যান। রুবি পরীক্ষকদের এটাও দাবি করেন, পরীক্ষার জন্য তিনি দু’বছর ধরে পড়েছেন, পরীক্ষাও দিয়েছেন। তিন মাস হয়ে গিয়েছে পরীক্ষার, তাই এ বিষয়ে তাঁর আর কিছু মনে নেই। 

বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির দফতরে দু’ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা নেওয়া হয় রুবির। বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, কলা বিভাগের বিষয় নিয়ে প্রাথমিক জ্ঞানটুকুও নেই রুবির। বোর্ড প্রধান আনন্দ কিশোর জানান, বিশেষজ্ঞ কমিটির মতে প্রথম হওয়ার যোগ্যতাই নেই রুবির মধ্যে। রুবির পরীক্ষার খাতার ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। যাচাই করে দেখা হবে রুবি কি আদৌ পরীক্ষা দিয়েছিলেন, নাকি তাঁর হয়ে কেউ পরীক্ষায় বসেছিল।

বিহারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরনোর পর দেখা যায় বৈশালী জেলার ভগবানপুরের বিষুণ রায় কলেজের ছাত্রী রুবি প্রথম হয়েছেন। পলিটিক্যাল সায়েন্সকে ‘প্রডিক্যাল সায়েন্স’ বলে গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এর পরেই নড়েচড়ে বসে বিহার সরকার। গত ৩ জুন সাক্ষাৎকারের জন্য মেধাতালিকায় থাকা অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে রুবিকেও সমিতির দফতরে ডাকা হয়েছিল। সে দিন অসুস্থতার জন্য হাজির হননি তিনি। ফের তাঁকে ১৭ জুন ডাকা হয়। সে দিনও আসেননি। তৃতীয় বার ডাকার পরে এ দিন হাজিরা দেন 


সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিডি-প্রতিদিন/ ২৬ জুন, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর