২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১২:২৯

ঘামের সঙ্গে খিচুড়ির কিন্তু একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে

অনলাইন ডেস্ক

ঘামের সঙ্গে খিচুড়ির কিন্তু একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে

পূজা এলে নতুন কাপড়, মিষ্টি-সন্দেশ ইত্যাদির পাশাপাশি অতীতে কাটানো পূজার নানা গল্প স্মৃতিচারণ করতেও ভালোবাসেন সকলে। আর সেলিব্রেটিরা যখন তেমনই সব গল্প বলেন, ভক্তমাত্রই সেইসব স্মৃতিচারণের গল্প পড়তে ব্যাপক আগ্রহী হন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় পূজা নিয়ে তার আবেগ-অনুভূতি ও নানা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। স্বস্তিকার লিখাটি এখানে তুলে ধরা হলো: 

আমাদের বাড়িতে ঘটে দুর্গাপুজো হয়। মা-ই করত প্রথম থেকে। মা চলে যাওয়ার পর গত বছর আমি করেছিলাম। এটা একটা বড় দায়িত্ব। তাই, পুজোর সময় কলকাতায় থাকারই চেষ্টা করি। আসলে আমি না থাকলে আমার মেয়ের পক্ষে ওটা করা সম্ভব নয়। সেটা মাথায় থাকে। মুম্বাইতে যে দুটো প্রজেক্ট নিয়ে কাজের কথা চলছে তার শুটিং না থাকলে কলকাতাতেই আছি পুজোর ক’টা দিন।

আসলে প্রতি বছর পুজোতে আমার একটা অপেক্ষা থাকে। কীসের জানেন? এ সময় স্কুল বা ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা অনেকে আসে কলকাতায়। ওদের সঙ্গে দেখা হয়। সেটার জন্য প্রতি বছর ওয়েট করি।

একটা সময় পুজোতে মামাবাড়ির যাওয়াটা মাস্ট ছিল। মায়েরা পাঁচ বোন। মাসিরাও আসত। সব ভাইবোনেরা হইহুল্লোড় করতাম। গোল্ডেন ডেজ…। কিন্তু দিদা চলে গেছে, মা চলে গেল। এখন তো নেই-এর লিস্টটা বেশি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ওখানে যাওয়াটাও ইরেগুলার হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

আর একটা জিনিসের জন্যও সারা বছর পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকি। এনি গেস? গরমে ঘামতে ঘামতে ত্রিপলের নিচে দাঁড়িয়ে খিচুড়ি, লাবড়া, হাতে করে নিয়ে শালপাতায় তেলচপচপে বেগুনি সঙ্গে প্লাস্টিকের গ্লাসে পায়েস। ঘাম মুছতে মুছতে ভোগ খাওয়া— ওফ! ভাবা যায় না। বালিগঞ্জ কালচারালে গিয়ে সকলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ভোগ খাওয়ার একটা আলাদা মজা আছে। এটা আমি মিস করতে চাই না। আমার এক বন্ধু চান্দ্রেয়ী থাকে গড়িয়াহাটের মোড়ে। ওদের বাড়িতে পুজো হয়, যাব সেখানে। তবে যাই বলুন না কেন, ওই ঘামের সঙ্গে খিচুড়ির একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

আমাদের ভবানীপুরের আদি বাড়িতে দু’হাত দুর্গার পুজো হয়। সেখানে সবাই আসে। মেয়েকে নিয়ে আগে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার একটা ব্যাপার থাকত। এখন তো সেটাও নেই। এখন ও বড় হয়ে গিয়েছে। বন্ধু হয়েছে প্রচুর। ফলে মায়ের হাত ধরে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার ব্যাপারে নট ইন্টারেস্টেড।

আর জাজিং তো আছেই। সেটা নিয়ে প্রতি বছর আমি খুবই ব্যস্ত থাকি। অরগানাইজারদের কাছে আমি নর্থটা দেখার আবদার করি সব সময়। আসলে সাউথে থাকার জন্য সকালের দিকে মুদিয়ালি, শিবমন্দির— ওগুলো সব দেখা হয়ে যায়। হাওড়ার বড় পুজোগুলোতে যাওয়াই হয় না। তাই জাজিং করতে গিয়ে ওগুলো দেখে নেওয়ার চেষ্টা করি।

আগে মানে ক্লাস এইট পর্যন্ত আমরা গল্ফগ্রিনে থাকতাম। তার পরে শিফট করে এসছি। সেখানে প্রতি বছর পুজোতে কালচারাল প্রোগাম হত। ওখানে ডান্স ড্রামা করতাম। সে এক দারুণ অনুভূতি। মা হারমোনিয়াম বাজাত, বাবা গান করত। চিত্রাঙ্গদা, চণ্ডালিকা, শাপমোচন, লক্ষ্মণের শক্তিশেল— ওখানে থাকতে সব করেছি। ড্রিম টাইম অফ মাই লাইফ। প্রোগ্রামটা একটা সম্মিলিত এফর্ট ছিল। প্রফেশনালি করা হত বলে খুব ফেমাস হয়ে গিয়েছিল আমাদের অনুষ্ঠান। পুজোর আগেই তখন পরীক্ষা থাকত। সন্ধে ৬ টায় পড়তে বসতে হবে। ৮টা থেকে ১০টা চলবে রিহার্সাল। তারপর আবার এসে পড়তে বসব আমি আর বোন। সে এক সময় ছিল বটে…। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর