১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:১৩

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া মিয়ানমারের

অনলাইন ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া মিয়ানমারের

বাংলাদেশের সাথে ১৭০ কিলোমিটার সীমান্তের বাকি ৪০ কিলোমিটার কোনো রকম বিলম্ব ছাড়াই কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিয়ানমার। যাতে করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া কোনও রোহিঙ্গা আর দেশে ফিরে যেতে না পারে। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেন সেইনের কার্যালয়ের মুখপাত্র ইউ জ এইচের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির দৈনিক 'দ্য ইরাওয়াদি'।

দ্য ইরাওয়াদিকে তিনি জানান, বেড়া নির্মাণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। তবে যেকোনো উপায়ে এই বেড়া নির্মাণ করা হবে। এজন্য আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না।

বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে মূলত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনরোধ এবং তাদের রাখাইন রাজ্য ছাড়া করার উদ্দেশ্যে। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলাকালে এই কাঁটাতারের বেড়া কেটে দেয়া হয় যাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে। এবার রোহিঙ্গা নির্মূলের চূড়ান্ত অভিযান চলছে। 

এদিকে, আন্তর্জাতিক কোনো চাপকে গ্রাহ্যই করছে না মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের তারা অনুপ্রবেশকারী মনে করে। আর তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়ে সীমান্ত সিল করে দিতে চায় মিয়ানমার।

রাখাইনে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বাস ছিল। এখন তার একটি বড় অংশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাকিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসাবে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে। 

গত ২৫ আগস্ট অভিযানের পর এই সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর তার আগে থেকেই প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বৈধ-অবৈধভাবে বাংলাদেশে ছিল। ২০০৫ সালের পর বারবার আশ্বাস দিয়েও বাংলাদেশ থেকে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত নেয়নি। 

বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তানে দুই লাখ, থাইল্যান্ডে এক লাখ, মালয়েশিয়ায় ৪০ হাজার, ভারতে ৪০ হাজার, যুক্তরাষ্ট্রে ১২ হাজার ও ইন্দোনেশিয়ায় ১১ হাজারেরও মতো রোহিঙ্গা রয়েছে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা বাস করছে। অনেকেই সেখানে গেছে বাংলাদেশী পরিচয়ে। অর্থাৎ রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা নির্মূলে মিয়ানমার তার লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে হামলার ঘটনা ঘটে। 'এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। এসময় রোহিঙ্গারা প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিতে শুরু করে। 

বিডি প্রতিদিন/১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর