২২ অক্টোবর, ২০১৭ ১২:৫৩

কলকাতার পাভলভ থেকে ঘরে ফিরলেন বাংলাদেশের জেসমিন

অনলাইন ডেস্ক

কলকাতার পাভলভ থেকে ঘরে ফিরলেন বাংলাদেশের জেসমিন

আড়াই বছর পর  কলকাতার হাসপাতাল থেকে কাজী জেসমিন পৌঁছলেন সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে। বেশ কয়েক বছর আগে মানসিক সমস্যা ধরা পড়েছিল জেসমিনের। আড়াই বছর আগে এক দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর ফেরেননি। বাড়ির লোকজনেরা বহু খোঁজখবর করেও তাঁর সন্ধান পাননি। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশা এক প্রকার ছাড়তেই বসেছিলেন পরিবারের লোকেরা।

জেসমিন কোনও ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে চলে এসেছিলেন এ দেশে। তার কাছে পাসপোর্ট, ভিসা কিছুই ছিল না। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার পুলিশের মাধ্যমে তার ঠাঁই হয় কলকাতার পাভলভ মানসিক হাসপাতালে। তখন নিজের নাম-পরিচয় কিছুই বলতে পারতেন না ৩৩ বছরের জেসমিন। টানা চিকিৎসায় ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠার পরে মনে পড়ে সব। মনে পড়ে সাতক্ষীরার বাড়ির কথা, মা-ভাইদের কথা, নিজের একমাত্র মেয়ের কথা।

পাভলভ হাসপাতালের তরফে যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে। বাংলাদেশ দূতাবাস জেসমিনের দেওয়া ঠিকানার সূত্র ধরে যোগাযোগ করে বাড়ির লোকের সঙ্গে। এর পরে দুই দেশের যোগাযোগের মাধ্যমে তৈরি হয় জেসমিনকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া।

বাড়িতে জেসমিনের মা এবং ভাই রয়েছেন। বিবাহিতা হলেও স্বামীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই তার। তবে আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। জেসমিনের ভাই শনিবার সীমান্ত থেকে বোনকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

হাসপাতালের তরফে মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাকে ফিরিয়ে দিতে এসেছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে অনিন্দিতা চক্রবর্তী জানান, যেহেতু জেসমিনের পাসপোর্ট নেই, তাই দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ‘ট্রাভেল পারমিট’ পাঠানো হয়। তাকে একটি অস্থায়ী নম্বর দেওয়া হয়। জানানো হয়, ওই নম্বর পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে যে কোনও সময়ে তিনি বাংলাদেশ ফিরতে পারবেন। দিল্লির ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসও সব ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। জেসমিনের বাড়িতে আমরা যখন যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম, তখন ওরা অনুরোধ করেছিলেন যে ভাবে হোক পেট্রাপোল সীমান্তে যদি আমরা ওকে পৌঁছে দিতে পারি, তা হলে ওরা নিয়ে যাবেন। সেই অনুযায়ীই ব্যবস্থা হয়।

জেসমিনের মা জানান, এখনও সবটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। মেয়ের মানসিক সমস্যা ছিল বলে অনেকেই মনে করেছিল আমরাই বোধহয় ওকে দূরে কোথাও সরিয়ে দিয়েছি। ও ফিরে এসে সেই সব অভিযোগ থেকেও আমাদের মুক্তি দিল। এ বার থেকে ওকে আরও চোখে চোখে রাখব। যাতে আর হারিয়ে না যায়।

জেসমিন বলেন, 'খুব ভাল লাগছে। যাদের জন্য আবার নিজের ঘরে ফিরতে পারলাম, তাঁদের কথা সারা জীবন মনে রাখব।' সূত্র : ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা 

বিডি প্রতিদিন/২২ অক্টোবর, ২০১৭/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর