১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ১৭:০২
খবর আনন্দবাজার পত্রিকার:

জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনে কি চীনের হাত আছে?

অনলাইন ডেস্ক

জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনে কি চীনের হাত আছে?

সংগৃহীত ছবি

জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যুত্থান ও প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের অপসারণে কি চীনের হাত রয়েছে? অভ্যুত্থানের ‘গন্ধ’ কি আগেই নাকে এসেছিল বেইজিংয়ের? এমনই প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মনে। কারণ জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের আগে গত সপ্তাহে সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্ট্যানটাইন চিওয়েঙ্গা বেইজিং সফর করেছেন।  আর এই সফরকে কেন্দ্র করেই সন্দেহের জন্ম হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের এমন জল্পনার পালে বাতাস দিয়েছে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গত ১০ নভেম্বরের একটি মাইক্রো-ব্লগ।  সেই ব্লগে দেওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, মধ্য বেইজিংয়ের মন্ত্রণালয়ে গিয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চ্যাং ওয়ানচানের সঙ্গে হাসি মুখে করমর্দন করছেন জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধান জেনারেল চিওয়েঙ্গা। আরেকটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, প্রতিনিধিদের নিয়ে দু’জনে একটি কনফারেন্স টেবিলে বসে রয়েছেন।

বেইজিংয়ের সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের ওই সফরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়ানচানের সঙ্গে তো বটেই চীনের প্রবীণ সেনা-কর্তাদের সঙ্গেও আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠকে বসেছিলেন চিওয়েঙ্গা। তার পরপরই জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যুত্থান হওয়ায় অনেকেরই সন্দেহ, বেইজিং সে খবর আগেই জানত।  আর জেনারেল চিওয়েঙ্গাও এ ব্যাপারে বেইজিংয়ের কাছ থেকে ‘সবুজ সঙ্কেত’ পেয়ে গিয়েছিলেন।

জিম্বাবুয়ে চীনের ‘শত্রু’ দেশ নয়। সাতের দশকের মাঝামাঝি থেকেই জিম্বাবোয়ের সঙ্গে দহরম মহরম চীনের। সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানে জিম্বাবুয়ের মানুষের সশস্ত্র সংগ্রাম চীনের সহযোগিতা ছাড়া সফল হত না কখনওই। তার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর জোরদার হয়েছে। 

প্রেসিডেন্ট মুগাবের সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমী দেশগুলি একজোট হয়ে অর্থনৈতিক অবরোধ জারি করলে জিম্বাবুয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল বেইজিং।

অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বরাবর জিম্বাবুয়ের বন্ধু হয়েছে চীন। জিম্বাবুয়ের অটোমোবাইল শিল্প তো বটেই, বিদ্যুৎকেন্দ্র, তামাক ও হিরে শিল্পেও সরকারি ও বেসরকারি স্তরে প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে চীনের।

সাউথ আফ্রিকান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের বিদেশ নীতির গবেষক কোবাস ফন স্তাদেন বলেছেন, ‘‘অভ্যুত্থানের ঠিক আগে বেজিংয়ের ওই সফর যথেষ্টই ইঙ্গিতবাহী। তবে সেই সফরে কী হয়েছিল, তা কেই বা জানেন!’’
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধানের বৈঠককে অবশ্য বেইজিংয়ের পক্ষে ‘রুটিন’ ও ‘স্বাভাবিক পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আলোচনা’ বলা হয়েছে। জিম্বাবুয়ের অভ্যুত্থানের পিছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগও বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেইজিং নর্মাল ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক পলিসির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ওয়াঙ শিনশং বলছেন, ‘‘জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বরাবরই আমাদের (চীন) কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুব ভাল। সে ক্ষেত্রে কেনই বা চীন চাইবে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হোক জিম্বাবুয়েতে, কেনই বা চাইবে জিম্বাবুয়েতে রাজনৈতিক ডামাডোল সৃষ্টি করতে?’

বিডিপ্রতিদিন/ ১৯ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর