৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৩:২২

'রোহিঙ্গা' না-বলাটা পোপের কৌশল

অনলাইন ডেস্ক

'রোহিঙ্গা' না-বলাটা পোপের কৌশল

মিয়ানমারে বসবাসকারী খ্রিস্টানদের মুখ চেয়ে এবং শরণার্থীদের ভালোর জন্যই সে দেশটিতে দাঁড়িয়ে তিনি 'রোহিঙ্গা' শব্দটি উচ্চারণ করেননি বলে জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। আলোচনার দরজা খুলে রেখে মিয়ানমারের শাসকদের কাছে 'সঠিক বার্তা'টি পৌঁছে দিতে এটি তার কূটনৈতিক কৌশল ছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। 

এশিয়া সফর শেষে ফেরার পথে বিমানে তার সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই ব্যাখ্যা দেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের এই প্রধান ধর্মগুরু।

এশিয়া সফরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। মিয়ানমার সফরে গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের নাম উচ্চরণ না-করে 'রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত শরণার্থীদের' দুর্দশার বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। বাংলাদেশে শুধু এক বারই তিনি 'রোহিঙ্গা' শব্দটি উচ্চরণ করেছিলেন। সমবেত প্রার্থনার পরে নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যেও আমি সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি দেখি।' 

কিন্তু তা নিয়েই মিয়ানমারের বহু নাগরিক সামাজিক মাধ্যমে পোপের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, পোপ গিরগিটির মতো র‌ং বদলেছেন। 

এ বিষয়ে পোপ যা বললেন
ফিরতি বিমানে সাংবাদিকদের পোপ জানিয়েছেন, মিয়ানমার সফরের আগে রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ দুর্দশার বিষয়টি নিয়ে তিনি বিলক্ষণ অবগত ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল- আলোচনার সময়ে সে দেশের সেনা ও নাগরিক প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে তার স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেওয়া। 

মিয়ানমারের রোমান ক্যাথলিক মিশন তাকে জানায়, সে দেশে দাঁড়িয়ে 'রোহিঙ্গা' শব্দ উচ্চরণ করলে শাসক পক্ষ তার সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিতে পারে। একই সঙ্গে নির্যাতন নেমে আসতে পারে সে দেশে বসবাসকারী খ্রিস্টানদের ওপরেও। 

পোপ বলেন, 'প্রকাশ্য আমি শরণার্থীদের পরিস্থিতিটা তুলে ধরেছি, মানবাধিকারের বিষয়টিও সামনে এনেছি। এ কথাও বলেছি, নাগরিকত্ব থেকে কাউকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। রোহিঙ্গা শব্দটি বলিনি, যাতে একান্ত বৈঠকে আরও অনেক কিছু আমি তাদের বলে আসতে পারি।' একটি লাতিন প্রবাদ শোনান পোপ, যার মর্মার্থ-বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট।

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও সে দেশের শাসক দলের নেত্রী আং সান সু চি'র সঙ্গে বৈঠককে 'খুবই কার্যকরী' বলে অভিহিত করেছেন পোপ। জানিয়েছেন, তাদের যা বলার তিনি বলে আসতে পেরেছেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না সে দেশের সরকার। তাদের কথায়, এই সম্প্রদায় বহু বছর আগে মিয়ানমারে ঢুকে পড়া বাংলাদেশি শরণার্থী। 

পোপ জানিয়েছেন, এদের নাগরিকত্বহীন দুরবস্থার কথা তিনি জানতেন। কিন্তু ঢাকায় এসে কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবার যখন তাদের চরম দুর্দশার কথা তাকে শুনিয়েছেন, তিনি চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।সূত্র: আনন্দবাজার

বিডি প্রতিদিন/০৪ ডিসেম্বর, ২০১৭/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর