৬ মার্চ, ২০১৮ ১৬:৩৩
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

পহেলা বৈশাখেই বাংলাদেশে আসছে ইলিশের নুডলস-স্যুপ

অনলাইন ডেস্ক

পহেলা বৈশাখেই বাংলাদেশে আসছে ইলিশের নুডলস-স্যুপ

বাঙ্গালির নিজস্ব স্বাদ এবং ঐতিহ্যের অংশ ইলিশ মাছ এবার আসছে নুডলস এবং স্যুপ আকারে। চড়া দামের কারণে যারা ইলিশ মাছ কিনতে পারেন না, এখন তারাও ২৫ বা ৩০ টাকায় কিনতে পারবেন এক প্যাকেট নুডলস কিংবা স্যুপ, যাতে ইলিশের আসল স্বাদ পেতে পারবেন যে কেউ।

পহেলা বৈশাখের দিনেই এই পণ্য বাজারে আসতে যাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে ইলিশের নুডলস এবং স্যুপ উৎপাদন শুরুর জন্য আজই মৎস্য অধিদপ্তর এবং ইউএসএআইডি এই প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে ভারগো ফিস অ্যান্ড অ্যাগ্রো প্রসেস লিমিটেডের কাছে।

ইলিশের নুডলস এবং স্যুপ তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবণ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক একেএম নওশাদ আলম। ২০১৪ সালে তিনি এ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি বলেন, এক হাজার টাকা দামের একটি ইলিশ থেকে ছোট আকৃতির প্রায় ২০০ কিউব তৈরি করা সম্ভব।

প্রতিটি কিউবের বাজারমূল্য ২০ টাকা। একটি কিউব দিয়ে ইলিশের হুবহু স্বাদের এক-দুজনের জন্য স্যুপ তৈরি করা সম্ভব। ইলিশের স্বাদ অপরিবর্তিত রেখে কিউবগুলোকে রেফ্রিজারেটরে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।

তিনি আরও জানান, ইলিশের ফ্যাটি অ্যাসিড বাতাসে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, যে কারণে ইলিশ সংরক্ষণ করা যায় না বা ইলিশের শুঁটকি বানানো যায় না। গবেষণায় এদিকে, তাকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হয়েছে।

ইলিশের নুডলস এবং স্যুপ বাজারজাত করবে রপ্তানীমুখী দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান ভারগো ফিস অ্যান্ড অ্যাগ্রো প্রসেস লিমিটেড।

প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক জামিল আহমেদ বলেছেন, দুই রকমভাবে এই পণ্য বাজারজাত করণের পরিকল্পনা করেছেন তারা। ইলিশ মাছ শুকিয়ে ছোট কিউব করে প্যাকেটে ভরে সেটি নুডলসের সঙ্গে দেয়া হবে। এছাড়া, কাঁটা গুড়িয়ে ইলিশ মাছের পাউডার বানিয়ে মসলা হিসেবে নুডলসের প্যাকেটে দিয়ে দেয়া হবে।দুই ক্ষেত্রেই পণ্যের দাম মানুষের নাগালের মধ্যে রাখা হবে, অর্থাৎ ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে হবে দাম।তবে, ইলিশ মাছ দ্রুত পচনশীল বলে পণ্যের মেয়াদ সর্বোচ্চ ছয় মাসের বেশি রাখা হবে না।

প্রাথমিক পর্যায়ে এটির অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি'র প্রকল্প ওয়ার্ল্ড ফিস প্রজেক্ট। ২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড ফিস প্রজেক্ট পদ্মা মেঘনা অববাহিকায় ইলিশ সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়।

ওয়ার্ল্ড ফিসের ইকোফিস প্রজেক্টের টিম লিডার অধ্যাপক ড. আবদুল ওহাব জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ইলিশ মাছের জীবন চক্র এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবনমান বাড়ানোর জন্য কাজ করছিলেন তারা।

এরপর ২০১৬ এবং ২০১৭ পরপর দুই বছর বাংলাদেশে ইলিশের ব্যাপক পর মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয় যখন ইলিশ রপ্তানির চিন্তাভাবনা শুরু করে, তখন ইকোফিস কাঁটাহীনভাবে নতুন প্রজন্ম এবং বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর বাইরে ইলিশের স্বাদ পৌঁছে দেবার লক্ষ্য নিয়ে, ইলিশের বাণিজ্যিক ব্যবহার কি করা যায়, সে চিন্তাভাবনা শুরু করে।

বিডি প্রতিদিন/৬ মার্চ, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর