১৭ মার্চ, ২০১৮ ১২:৫৩
খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

আফগানিস্তানে ঘাঁটি বানাতে চায় চীন, চিন্তায় ভারত

অনলাইন ডেস্ক

আফগানিস্তানে ঘাঁটি বানাতে চায় চীন, চিন্তায় ভারত

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের নির্জন পাহাড়ি এলাকা ওয়াখান করিডরে সামরিক ঘাঁটি তৈরি জন্য দেশটির সঙ্গে কথা শুরু করেছে বেইজিং। বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছে সাউথ ব্লকের। দীর্ঘ দিনের লড়াইয়ের পরে পাকিস্তানকে সাময়িকভাবে পিছনে ফেলে কাবুলে প্রভাব ও উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞে সামিল হতে শুরু করেছে ভারত। কিন্তু এখানেও ড্রাগনের ছায়া নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর। শুধু ছায়াই নয়, চীনের সামরিক ঘাঁটি তৈরি হলে তা ভারতের নিরাপত্তার পক্ষেও যথেষ্ট কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেছেন, ‘‘সরকার রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে। ভারতের সঙ্গে অন্য কোনো দেশের সম্পর্ক নিজস্ব দ্বিপাক্ষিক সমীকরণের উপর চলে। কোনো তৃতীয় দেশের দ্বারা তা প্রভাবিত হয় না। গোটা বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে।’’

ভি কে সিংহের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার মঞ্চে চীনের উপস্থিতি বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। এমনিতেই পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা। আমেরিকার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অক্ষ গড়তে এবার যদি পাকিস্তান ও চীন আফগানিস্তান প্রশ্নে হাত মেলায় তা হলে প্রতিবেশী হিসেবে সবচেয়ে আগে সমস্যায় পড়বে দিল্লিই। পাকিস্তানি সেনা তথা আইএসআই-কে ওই অঞ্চলে ফের চাঙ্গা করতে বেইজিং উদ্যোগী হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, শুধুমাত্র ভারতকে চাপে রাখা বা পাকিস্তানকে ওই অঞ্চলে ফের শক্তিশালী করাটা চীনের লক্ষ্য নয়। এই সামরিক ঘাঁটি নির্মাণে বেইজিংয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে। চীনের আশঙ্কা যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি সে দেশে প্রবেশ করতে পারে। ইস্ট টার্কিশ ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম)-র জঙ্গি সদস্যরা ওয়াখান পার হয়ে নিকটবর্তী চীনের জিনজিয়াং এলাকায় প্রবেশ করে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে মনে করছেন চীনা কর্মকর্তারা। ইরাক এবং সিরিয়া থেকে আইএস জঙ্গিরাও মধ্য এশিয়া পার হয়ে একই পথে জিনজিয়াং-এ পৌঁছতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানেশ সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘আমরা ওই এলাকায় নিজেরাই ঘাঁটি তৈরি করব ভেবেছিলাম। কিন্তু চীনের সঙ্গে কথা হয়েছে। অর্থ ও অস্ত্র পরিকাঠমো আমাদের পাশে থাকতে চাইছে ওরা।’’

এই পরিস্থিতিতে কাবুল তথা পশ্চিমা বিশ্বকেও বার্তা দিতে সক্রিয় হয়েছে সাউথ ব্লক। সম্প্রতি সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে আফগানিস্তানে ভারতের ভূমিকা নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘‘২০১১ সালে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই চুক্তিতে স্থির হয়, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধ, মাদক চোরাচালান, হাওয়ালার মতো বিষয় রুখতে যৌথভাবে কাজ করবে দু’দেশ।’’

বিডি-প্রতিদিন/১৭ মার্চ, ২০১৮/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর