২৫ জুলাই, ২০১৮ ১২:৩০
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচন

প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা-মায়াবতীকেও মানতে রাজি রাহুল

অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা-মায়াবতীকেও মানতে রাজি রাহুল

আগামী বছর ভারতের লোকসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচন ঘিরে নানা হিসাব-নিকাশ কষা শুরু করে দিয়েছে ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং সংসদের বিরোধী দল কংগ্রেস। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে হারাতে আঁটঘাঁট বেঁধেই নামছে দলটি। জোটবদ্ধভাবেই নির্বাচনে বিজয়ী হতে চায় তারা। এজন্য ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী পদটাও ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গান্ধীর নাম ঘোষণা করে দল যে বিরোধী শিবিরে আগেভাগে কোনো অস্বস্তি তৈরি করতে নারাজ তা গত সোমবারই স্পষ্ট করেছিল কংগ্রেস। গতকাল আরও এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্র বলছে, বিজেপিকে হারাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কিংবা উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর মতো কাউকে মেনে নিতেও দলের আপত্তি নেই।

গত রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দাবি উঠেছিল বিরোধী জোটে রাহুলকে মধ্যমণি করে তাকেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা হোক। পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয় রাহুলই কংগ্রেসের মুখ। এরপর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া প্রকাশ্যেই সমর্থন করেছিলেন রাহুলকে। কিন্তু লালুপুত্র তেজস্বী অন্য পথে হেঁটে বলে দেন, বিরোধী জোটে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার অনেকে। প্রধানমন্ত্রী পদে মমতাকে বসানো নিয়ে জল্পনা রয়েছে অনেক দিন ধরেই। মায়াবতীও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য সক্রিয়। মঙ্গলবার কংগ্রেসকে কার্যত সতর্কবার্তা দিয়ে দলিত নেত্রী বলেছেন, আসন বণ্টন ঠিক মতো না হলে জোট হবে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার ঘনিষ্ঠ মহলে রাহুলের বার্তা, বিজেপিকে রুখতে তিনি নমনীয় হতে রাজি।

কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রের মতে, রাহুল মনে করেন প্রধানমন্ত্রিত্বের থেকেও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হল বিজেপিকে হারানো। মমতা সম্পর্কে তাঁর মত, তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেস থেকে এসেছেন। ফলে আরএসএসের সঙ্গে তিনি থাকবেন না। পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে জটও কেটে যাবে। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, ভোটের পরে বড় দল হিসেবে কংগ্রেস উঠে এলে অংকের হিসাবেই জোটের প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুল। এবং সেটা ঠিক হবে ভোটের ফল প্রকাশের পরে। যে কারণে মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা শরদ পাওয়ারের পক্ষ থেকেও বলা হয়, মানুষ রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিলে এনসিপি বিরোধিতা করবে কেন?

মোদিকে হারানোর অঙ্ক কষে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা পি. চিদাম্বরম জানিয়েছিলেন, ১২টি রাজ্যে কংগ্রেস নিজেদের শক্তিতেই ১৫০টির মতো আসন পেতে পারে। আর বাকি রাজ্যে শরীকদের সঙ্গে মিলে আরও ১৫০। রাহুল মনে করেন, উত্তরপ্রদেশ আর বিহারে বিরোধীদের সার্বিক জোট প্রায় হয়েই গেছে। জোটের কাছে কোণঠাসা বিজেপি ওই দুই রাজ্যে তলানিতে ঠেকবে। সব মিলিয়ে গোটা দেশে কোনো অবস্থাতেই ২০০-র কোঠা পেরোতে পারবে না তারা। তবে সেই সঙ্গেই রাহুলের হিসাব, কোনোভাবে ২২০-২৪০টি আসন জোগাড় করতে পারলে অবশ্য বিজেপি ফের সরকার গড়ার পথে যাবে।

রাহুল মনে করেন, বিজেপির আসন ২২০'তে নেমে গেলেই মোদির পক্ষে আর প্রধানমন্ত্রী হওয়া কঠিন। কারণ তখন সঙ্ঘ এবং বিজেপির একাংশই তাকে চেপে ধরবেন। সে কারণেই মোদি-অমিত শাহরা এখন এত আক্রমণাত্মক। সে কারণে তাঁদের হারাতে দরকার একটি মসৃণ বিজেপি-বিরোধী জোট। সেটাই এখন সব চেয়ে বড় চিন্তা রাহুলের।

বিডি-প্রতিদিন/২৫ জুলাই, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর