৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১১:১৩
আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী সংস্থার অনুসন্ধান

কাছিম ও কচ্ছপ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র ঢাকা

অনলাইন ডেস্ক

কাছিম ও কচ্ছপ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র ঢাকা

বিশ্বজুড়ে চলছে মিঠে পানির কাছিম এবং কচ্ছপ চোরাচালানের ব্যবসা। এ নিয়ে ওয়াইল্ডলাইফ জাস্টিস কমিশন (ডাব্লিউজেসি) নামের একটি আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা দুই বছর ধরে একটি অনুসন্ধান চালিয়েছে। যেখানে দুই বাংলার দুই প্রধান শহর তথা এশিয়ার দুই ব্যস্ততম নগরী কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে লক্ষ-লক্ষ ডলারের কাছিম ও কচ্ছপ পাচারের তথ্য উঠে এসেছে।

ওয়াইল্ডলাইফ জাস্টিস কমিশন ২০১৬ সালে 'অপারেশন ড্রাগন' নামে এই তদন্ত শুরু করে। তাদের ছদ্মবেশি কর্মীরা বিভিন্ন দেশে গিয়ে এই চোরাচালান নেটওয়ার্ক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। দুই বছর ধরে চলা তাদের এই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে অনেক চমকপ্রদ তথ্য।

মিঠে পানির কাছিম এবং কচ্ছপের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে চীন এবং হংকং। যারা বেআইনিভাবে চীন এবং হংকং এ এসব পাচার করে, তাদের রয়েছে পুরো দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে বিশাল নেটওয়ার্ক। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড জুড়ে বিস্তৃত এই নেটওয়ার্ক।

ডাব্লিউজেসি বলছে, মোট আটটি বড় অপরাধী চক্র মূলত এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বড় বড় বিমানবন্দর এবং সড়ক ও রেল পরিবহন কেন্দ্রে তারা লোকজনকে হাত করে রেখেছে, যাতে নির্বিঘ্নে এই ব্যবসা চালানো যায়।

তবে ডাব্লিউজেসি'র তদন্তের ফলে এই নেটওয়ার্কগুলো এবং তাদের সঙ্গে জড়িত অনেককে চিহ্ণিত করা সম্ভব হয়। এর ফলে তাদের পাচার বাণিজ্যে কিছুটা হলেও বাধা সৃষ্টি করা গেছে। এসব চক্রের তিরিশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর উদ্ধার করা হয়েছে ছয় হাজারের বেশি কাছিম এবং কচ্ছপ।

ওয়াইল্ডলাইফ জাস্টিস কমিশন তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে কিভাবে ঢাকা এখন পরিণত হয়েছে বিশ্বের নানা জায়গায় কাছিম এবং কচ্ছপ পাচারের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে। প্রথম ধাপে পাচারের জন্য কাছিম ও কচ্ছপ সংগ্রহ করা হয় ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে। এসব বন্য কাছিম ও কচ্ছপ এরপর সড়ক ও রেলপথে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায়। এরপর সেখান থেকে আবার যশোর রোড ধরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি কোন জায়গায়। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিতে পাচারকারীরা সীমান্তের অদূরে বনগাঁয় একটি নদীর কাছে থামে। সেখান থেকে কাছিম এবং কচ্ছপ তোলা হয় নৌকায়। তারপর নদীপথে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশে আবার সড়ক পথে ট্রাক, প্রাইভেট কার বা ট্যাক্সিতে করে এসব নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার একটি 'সেফ হাউসে।' পাচার হওয়া কাছিম ও কচ্ছপের শেষ গন্তব্য বিশ্বের নানা দেশ ও নগরী। 

এদিকে, ওয়াইল্ডলাইফ জাস্টিস কমিশন তাদের তদন্তে পাওয়া তথ্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করেন। এরপর এই ব্যক্তি সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ পরে সেফ হাউসটিতে হানা দেয়। সেখান থেকে একটি ঘড়িয়ালসহ উদ্ধার করা হয় ৬২০ টি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী।

সূত্র: বিবিসি বাংলা


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর