২৫ মার্চ, ২০২৪ ১৭:৫০

উৎপাদন বাড়াতে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের দাবি তরমুজ চাষিদের

আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা):

উৎপাদন বাড়াতে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের দাবি তরমুজ চাষিদের

মহাজনের চড়া সুদ থেকে মুক্তি চায় ভোলার কৃষকরা। তরমুজের উৎপাদন বাড়াতে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের দাবি জানিয়েছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা। অর্থকরী এই ফসল উৎপাদনে কৃষি বিভাগের কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকরা।

দ্বীপজেলা ভোলায় প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হলেও এই ফসল চাষ করে কৃষকরা বেশীর ভাগ সময়েই লাভের মুখ দেখে না। এবছর হয়তো লোকসান গুণতে হবে তরমুজে। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে আশা নিরাশার ভাগ্যে দোলে তাদের কপাল।

মহাজনের কাছ থেকে চড়া সূদে দাদন নিয়ে তরমুজের চাষ করায় লাভের বড় একটা অংশ চলে যায় মহাজনের ঘরে। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই ফসল খুব যত্নের সঙ্গে চাষাবাদ করতে হয়। সেক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ থেকে সঠিক তদারকি ও পরামর্শ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ কৃষকদের। এ অবস্থায় স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ, প্রণোদনা এবং কৃষি বিভাগকে পাশে পাওয়ার দাবি।

১৬০ শতাংশের ১ কানি জমিতে তরমুজের চাষ করতে খরচ হয় ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা। তরমুজের ফলন হয় ১৮ শ' থেকে ২ হাজার। এতে প্রতি পিস তরমুজের উৎপাদন ব্যয় হয় প্রায় ১ শত টাকা। কৃষকরা বেপারীদের কাছে প্রতিপিস বিক্রি করে ২শ থেকে আড়াই শ টাকায়। বেপারিরা বিক্রি করে ৩ শ' টাকা। অথচ সেই তরমুজই খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে ৫শ' থেকে ৮শ' টাকায়।

পরিবহন ব্যয়,অতিরিক্ত খাজনা ও নানা খাতে বাড়তি খরচ করতে হয় বলে তরমুজ বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এ দিকে দাম বেশী হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে সুস্বাদু এই তরমুজ। 

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, তরমুজের মৌসুম এখনও আসেনি। রমজানে ভালো লাভের আশায় কিছু ব্যবসায়ী আগেভাগে অপরিপক্ক তরমুজ বাজারে বিক্রি শুরু করে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন বলেন, নিজস্ব পুঁজি না থাকায় মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে তরমুজের আবাদ করতে গিয়ে অনেক কৃষক তরমুজ চাষে হতাশ হয়ে পড়ে। ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ পেলে তারা মহাজনের  কবল থেকে মুক্তি পাবে। কৃষকরা প্রণোদণা পেলে আরো বেশি পরিমান জমিতে তরমুজ চাষ করতে পারবে এবং উৎপাদন বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গভীর উর্বরতাযুক্ত মৃত্তিকা ও উত্তম নিষ্কাশন সম্পন্ন জমিতে তরমুজ ভালো জন্মায়। বেলে দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী। চরফ্যাশনে ১২ হাজার হেক্টর ভূমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। তরমুজ চাষে ৭ হাজার ২শ শ্রমিক জড়িত। গতবার বৃস্টির কারণে তরমুজ চাষিদের অপূরণীয় লোকসান হয়েছে। আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাব না হলে গতবারের চেয়ে ভালো ফলনের আশাবাদী। কোনো অব্যবস্থাপনায় তরমুজের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়; সে জন্য  সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর