নীলফামারী জেলা সদরের মাঝাডাঙ্গা গ্রামের জাহানারা পারভিন। বিষমুক্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজির পাশাপাশি তিনি পুকুরে চাষ করছেন মাছ। এছাড়া তার আছে হাঁস, মুরগি, লেবুবাগান ও সারি সারি কলা গাছ।
তিনি পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে ঝিঙে, টমেটো, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, ডাঁটা, লাউ, শিম, করল্লা, মরিচ, বেগুন, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করছেন। এতে প্রয়োগ করা হয় না কোনো কীটনাশক। জৈব সার ব্যবহার করেই ফলানো হয় এসব সবজি।
বাড়ির পাশের পতিত পাঁচ শতাংশ জমিতে ফলানো সবজি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বিক্রিও করা হচ্ছে। শুধু জাহানারা নন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এমন সবজিবাগান দেখা যায়। অনেকে পতিত জমি ছাড়াও ঝুলন্ত সবজিবাগান, বস্তায় আদা ও সবজি চাষ করছেন। বস্তায় আদা ও সবজি চাষের কারণ হিসেবে তারা জানান, অতিবৃষ্টিতে পানি জমে যাতে ফসলের ক্ষতি না হয় সেজন্য এ পদ্ধতি।
গ্রামের জবেদা বেগম, কুলসুম, হাসিনা বানুসহ অনেকে বস্তায় আদা চাষ, ঝুলন্ত সবজিবাগান ও পতিত জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে পরিবারের পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি বাড়তি আয় করছেন। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি পরিকল্পনা এর সহায়ক প্রকল্প হিসেবে নীলফামারী সদর, ডোমার, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও তারাগঞ্জে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চলতি বছর জুনে শেষ হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ।
‘জানো’ প্রকল্প পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের অপুষ্টি নিরসন, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী এবং কিশোরীদের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিতকরণে সরকারের দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক হিসাবে কাজ করছে। নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুল ইসলাম বলেন, জানো প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য-পুষ্টি সম্পর্কিত জ্ঞান ছড়িয়ে পড়েছে। নারীরা শাক-সবজি আবাদ এবং তা খাওয়ার মাধ্যমে পুষ্টি নিশ্চিত করছে। ফলে আগামী প্রজন্ম মেধাবী, স্বাস্থ্যবান হয়ে বেড়ে উঠছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ