শীতের সবজি গ্রীষ্মে আবাদ করে লাভবান হচ্ছে ঝিনাইদহের কৃষকেরা। এ জেলার মাটিতে বছর জুড়ে নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। তারপরেও অসময়ের চাষে বেশি পরিমাণ লাভ থাকায় দিন দিন এই চাষে ঝুঁকে পড়ছেন কৃষকেরা। বিক্রি করতেও কোন ঝামেলা নেই, মাঠ থেকে চাষিদের নিকট হতে কিনে এনে ব্যাপারীরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন। গেল কয়েক বছর শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধা কপি গ্রীষ্মে আবাদ করে লাভবান হয়েছেন চাষিরা।
কৃষকরা জানান, গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপি বছরের ১লা আষাঢ় মাসে চাষ শুরু করা হয়ে থাকে। প্রতিবিঘা জমিতে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার পর্যন্ত চারা রোপণ করা যায়। বীজতলায় চারাগাছ থেকে শুরু করে মাত্র ৩ মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ করে বিঘা প্রতি প্রায় লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করা যায়। কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম জানান, এ বছর তীব্র গরম ও বেশি পরিমাণ বৃষ্টিতে প্রতিকুল আবহাওয়াতেও তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে কপি বাজারজাত করতে পেরেছেন অনেক চাষি। প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি ৫ টন ও ফুলকপি ৩ টন উৎপাদন হয়ে থাকে।
এতে কৃষকরা অনেক টাকা লাভবান হয়ে থাকে। জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের চাষি ইছাহক আলী বলেন, এ বছর প্রতিবিঘা জমিতে বীজ, সার, কীটনাশকসহ খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দাম ভালো থাকায় বেশ ভালো লাভ হয়েছে। গেল বছরও বিঘা প্রতি কপি বিক্রি করে খরচ বাদে চাষিরা ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ করেছিল। পাইকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, কপির বাজার চাহিদা ও সাইজের উপর দাম নির্ভর করে। এ বছর কপির সাইজ কিছুটা ছোট হয়েছে। প্রতি পিচ ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১৮ থেকে ২২ টাকায় কৃষকদের জমি থেকে ক্রয় করে ঢাকাতে পাঠায়।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোঃ সাইদ সিদ্দিকী (সংযুক্ত) জানান, এই জেলাতে ফুলকপি ও বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪২৯ হেক্টর। আর এবছর হেক্টর প্রতি ১৭ দশমিক ১২ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ। ভৌগলিকভাবে জেলার মাটি উঁচু ভূমি হওয়ায় সময়ে অসময়ে সব ধরনের সবজি চাষ এখানে হয়ে থাকে। এখানে আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়না। অন্যান্য জেলার চাইতে এ জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম হওয়ায় ভালোভাবে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ করা সম্ভব হয়।
বিডি প্রতিদিন/এএ