চাঁদপুরে সাম্প্রতিক সৃষ্ট বন্যায় কৃষি খাতের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধন হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য সরকারের কাছে প্রণোদনা দাবি অধিকাংশ কৃষকের। তবে কৃষকদের জন্য প্রণোদনা দিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি কর্মকর্তা। তবে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার ৮টি উপজেলায় আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ ১২ হাজর ১শ ৪৭ হেক্টর।
দুই সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় চাঁদপুরে ৮টি উপজেলার ৭১টি ইউনিয়নের ৪৭ হাজার ৬শ ৮৪ জন কৃষকের ৪ হাজার ৫শ ৮৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি ৬ লাখ ৬২ হাজার ২শ টাকা। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফরিদগঞ্জ, হাজিগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় আবাদি জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে পান, আঁখ , শাক-সবজি , রোপা আমন ও আউশ ধান।
কৃষক হানু মুন্সী ও ইসমাইল মিয়াজী জানান, ধার-দেনা করে আমন ফসল, শাকসবজির আবাদ করেছি যা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর আঁখ গাছ লাল হয়ে পাতা মরে গেছে। সামনে কিভাবে আবার ফসলের আবাদ করবো ভেবে পাই না। পরিবার ও সংসার কিভাবে চলবো তা ভাবছি। এদিকে ধার করা টাকার জন্যও রয়েছে চাপ। এদিকে বীজতলার বীজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। কিভাবে সামনের আমন আবাদ করবো ভেবে কুল কিনার পাই না। আমাদের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সহযোগিতা দাবি করছি।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়াত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও ক্রমাগত অতি বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। পান, আখ, শাক-সবজি, রোপা আমন, রোপা আমন বীজতলা, এমনকি চরমান ফসর আউসের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩শ ২১ হেক্টর আমনের বীজতলা। আমন আবাদ ১ হাজার ৪শ ৬৪ হেক্টর যা মাঠে ছিল তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি পান, আখেরও ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান ৮৬ কেটি টাকার ঊর্ধ্বে। এই যে বিরাট ক্ষতি তা পুষিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের কাছে লিখেছি, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের তালিকা করেছি। সামনে যে রোপা আমন এগুলোর বীজ সার প্রদান করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত বীজতলা করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। পরবর্তীতে রোরো , রবি ও শাকসবজির ক্ষেত্রে আমাদের প্রণোদনার আওতায় আসবে কৃষকরা। আশা করছি চাঁদপুরের কৃষকরা এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো সুযোগ সরকারের পক্ষ থেকে পাবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ