দিনাজপুরের ফসলের মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। শিশির ভেজা স্নিগ্ধ সকালের রোদে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন এখন রোপা আমনের পাতায় পাতায়। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে এখন ফসল ভালো রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে ক্ষেত থেকে আগাছা পরিষ্কার, পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার ও সার ছিটানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
কয়েকজন কৃষক জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবছর আমন রোপণের শুরু থেকে কৃষককে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমন চাষের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাসেও ছিল না আকাশে বৃষ্টির দেখা। ফলে সঠিক সময়ে আমন ধান রোপণ করতে পারেননি অনেক কৃষক। তবে বাদ পড়েননি আমন ধান চাষে কোনো কৃষক। আমনের শুরুতে সেচের পানি দিয়ে অনেকে আমন ধান রোপণ করেছেন। পরে বৃষ্টির পানি রোপা আমনের চারা আরও সমৃদ্ধ করেছে। বড় কোনো দুর্যোগ না হলে আমনের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ অনেকটা কম হবে বলে জানায় তারা। এরপরেও এ বছরও কৃষক আশার স্বপ্ন বুনছেন।
খানসামা উপজেলার পাকেরহাট, ছাতিয়ানগড়, বালাপাড়া ও দুহশুহ এলাকার বিভিন্ন আমনের মাঠে দেখা গেছে, কৃষকের কষ্টে অর্জিত আমন ধানের সবুজ পাতার রঙে ছেয়ে গেছে মাঠ। কেউ ধান গাছের আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার কেউ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। সবুজ পাতায় বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। এতে রোপা-আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে এই ধান ঘরে উঠবে বলে জানান কৃষকরা।
ছাতিয়ানগড় গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এক বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। অনাবৃষ্টিতে শুরুতে সমস্যা হলেও এখন ধান গাছের অবস্থা ভালো। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম তাই ভালো ফলন আশা করছি।
বালাপাড়া গ্রামের কৃষক লিটন ইসলাম বলেন, এবছর রোপা আমনের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। সেই সাথে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা ও ভালো ফলন পেতে সবসময় কৃষি অফিসের পরামর্শ নিচ্ছি। শেষ পর্যন্ত এমন থাকলে এবার ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তবে সবকিছুর দাম বাড়ায় লাভ কমে গেছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, চলতি মৌসুমে রোগ ও পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব কম থাকায় রোপা আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষি সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। চলতি মৌসুমে খানসামার ৬টি ইউনিয়নে মোট ১৩৭৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন আশা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই