বন্যা-পরবর্তী মানুষের নানা দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করার ইচ্ছা থেকেই সেদিন ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ জেলা শাখার কয়েকজন বন্ধু। পানি থাকাকালে এসব এলাকায় মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁরা।
এর মধ্যেই দেখা হয় মাথিয়ারা গ্রামের মিস্ত্রিবাড়ির শারীরিক প্রতিবন্ধী নেজাম উদ্দিনের সঙ্গে। অসহায় এই মানুষটির নেই কোনো স্থায়ী আয়ের পথ। স্ত্রীও অসুস্থ। নানাজনের কাছে চেয়েচিন্তে চলে তাঁর সংসার। সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় তাঁর ঘরের চারপাশের টিনগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। সব দেখে বসুন্ধরা শুভসংঘ ফেনী শাখার সদস্যরা তাঁর ঘরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন।
প্রতিবন্ধী নেজামের আবার হাসিমুখে দাবি ঘরের বেড়াগুলো যেন রঙিন টিনের দেওয়া হয়। নেজামের দাবি মেনে নিয়েই এক সকালে মাইনউদ্দিন ও খুরশীদ মিস্ত্রির তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু হয়। এ সময় সেখানে ছিলেন শুভসংঘ ফেনী শাখার উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান দারা, সভাপতি ফয়জুল হক বাপ্পি, সহসভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাসিম আনোয়ার জাকি, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ফেনী শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শুভ চৌধুরিসহ বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। কার্যক্রম সমন্বয় করেছে ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী।
বসুন্ধরা শুভসংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আনোয়ার জাকি বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই দরিদ্র। বেশির ভাগ ঘর নষ্ট হয়েছে। আমরা আরো কয়েকটি ঘর মেরামত করে দিতে পারব আশা করি।’
এ ছাড়া নরসিংদী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের উদ্যোগে বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে ফেনী সদরের লক্ষ্মীপুর এলাকার মহব্বত আলী ভুঁইয়া বাড়ির অসহায় নাছিমা বেগমের ঘরটি মেরামত করে দেওয়া হয়েছে।
এবারের বন্যায় একেবারেই ভেঙে গিয়েছিল তাঁর ঘর। চারপাশের বেড়া, এমনকি চালার কিছু অংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বিশালাকৃতির এই ঘরে তিনটি পরিবার থাকত। ঘরটি মেরামত করতে নরসিংদী থেকে ছুটে গিয়েছিল একটি টিম। কয়েক দিনের পরিশ্রমে সফলভাবে নাছিমা বেগমের ঘরটি মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। নতুন ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে নাছিমা বেগমের আনন্দ ছিল দেখার মতো।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ