শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

চারিত্রিক বিকার ও দিবসের প্রকার

হানিফ সংকেত

চারিত্রিক বিকার ও দিবসের প্রকার

শিল্পী আব্দুস শাকুর শাহ্

আমরা অনেকেই একটি রাজনৈতিক স্লোগানের সঙ্গে বেশ পরিচিত, ‘অমুক ভাইয়ের চরিত্র-ফুলের মতো পবিত্র’—তবে কোন ফুল গোলাপ না ধুতরা-তার সূত্র কেউই ভেঙে বলেন না। কারণ যিনি বা যারা এই জাতীয় স্লোগান দেন তারা নিজেরাও কথিত ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কে নিশ্চিত নন। দিতে হবে তাই দিচ্ছে। নানান উদ্দেশ্যে এসব স্লোগান দেওয়া হয়। যাদের জন্য এই স্লোগান তারা অন্দরে আরাম করে। আর এরা বাইরে চেঁচিয়ে মরে। এই নেতাদের কখনো কখনো চেনা দায়-আবার কখনো সহজেই চেনা যায়। শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়-আমাদের এই মিডিয়া জগতেও অনেকে আছেন যাদের মতলব বোঝা দায়। এই মতলববাজদের নিজস্ব কোনো মতবাদ নেই। এদের মুখের এবং মনের কথা এক নয় অর্থাৎ দ্বৈত সত্তার লোক। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন সেই দলের গুণকীর্তনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যা দলের প্রতি ভালোবাসা নয়, চাটুকারিতা। উদ্দেশ্য-কিছু প্রাপ্তির ফন্দি। তবে যতই ফন্দি আঁটুক না কেন অনেকেই তাদের এসব অন্ধিসন্ধির সন্ধান ঠিকই পেয়ে যান। এরা যত কথাই বলুক বোঝা যায় এরা জানে কম-বলে বেশি। ভাবে মনে হয় তাদের মতো পণ্ডিতজন খুব কমই আছে। তবে যারা মিডিয়া যাত্রার শুরু থেকেই এদের জানেন-চেনেন তারা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কষ্ট পান। কারণ সাধারণ মানুষ এদের অনেক গোপন কথাই জানেন না। তাই কেউ এদের মহান ভাবেন, কেউ এদের মিষ্টি কথায় ভুলে মানুষদরদী মানুষও ভেবে ফেলেন। যদিও কথায় আছে, ‘মিষ্টি কথায় চিঁড়ে ভেজে না’—চিঁড়ে না ভিজলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ ভেজে। কারণ যারা ভালো মানুষ সেজে, অনেক কিছু গোপন করে মানুষ ভেজে খান-তাদের কথার তেজে, লেজে-গোবরে অবস্থা হয় অনেকেরই।

আমরা বলি, কথায় কথা বাড়ে, মাথায় ব্যথা বাড়ে, যেটা কমে সেটা হলো কাজ-অথচ এটাই অনেকের প্রধান ব্যবসা আজ। যারা টিভি পর্দাকে ব্যবহার করে এবং নিজ স্বার্থে অন্যকে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক কিছু। টিভি পর্দায় এরা দেশের মঙ্গলের জন্য কথা বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণের কথা বলেন। আর আড়ালে নিজের কল্যাণ সাধন করেন। এর মধ্যে অর্থ-বিত্তসহ পুরস্কার প্রাপ্তিও রয়েছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় এই জাতীয় লোকদের ডেকে জিজ্ঞেস করি, খুঁজে পুরস্কার নিয়ে দাঁত বের করে হাসতে খারাপ লাগে না? হয়তো লাগে না, নইলে চরিত্রের ভোল পাল্টে এক এক সময় এক এক দলের নিবেদিতকর্মী সেজে, তদবির কিংবা তোষামোদ করে খোশামোদে পুরস্কার নিতে কিঞ্চিৎ হলেও লজ্জাবোধ হতো। তবে মিডিয়ার সবাই জানেন এরা কে কোথা থেকে কীভাবে এসেছেন। কার সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয় কি? কারণ দিন যায় কথা থাকে এবং সময় সময় সে কথা মনে পড়ে। আমাদের অনেক বিশিষ্টজন, আমলা এবং মন্ত্রীদেরও দেখা যায় মিডিয়ার এসব ব্যক্তির আহ্বানে ঝাঁপিয়ে পড়েন সুদৃষ্টির আশায়। না জেনে না শুনে এদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। ফলে ওইসব বর্ণচোরা ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। এদের সম্পর্কে জানার জন্য মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই। কিন্তু উত্তর মেলে না। আর উত্তর মেলে না বলে প্রশ্নমুক্তও হওয়া যায় না। তবে আশার কথা বিলম্বে হলেও ইদানীং পত্রপত্রিকায় এবং অনলাইনে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে অনেকেরই চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে এবং অর্জিত বিভিন্ন পুরস্কার সমালোচিত হচ্ছে। ফলে এসব পুরস্কারেরও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

অথচ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক সুপ্ত প্রতিভা। রয়েছে সৎসাহসী, জনকল্যাণকামী, নিভৃতচারী, প্রচারবিমুখ মানুষ। পুরস্কার বা মূল্যায়ন যাদের কাছে মুখ্য নয়। নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই তারা কাজ করেন। এরা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। তাই কাজ করে যান নীরবে-নিভৃতে। আর সে জন্য মানবীয় অঙ্গীকার, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মূল্যবোধের চেতনা থেকে ইত্যাদিতে আমরা সেসব আলোকিত মানুষকে তুলে ধরতে চেষ্টা করি। সমাজে যার একটি ইতিবাচক প্রভাবও পড়ছে। অথচ যারা এই সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে-তাদের প্রতিভাকে পুঁজি করে-গরিবের বন্ধু সেজে ভণ্ডামি করেন-এরাই কেন যেন তোষামোদের জোরে, কখনো বা ক্যামেরার ক্ষমতার জোরে পুরস্কৃত হন। ক্যামেরার কথা বললাম এ জন্যই যে আজকাল অনেকের যেমন ক্যামেরা প্রীতি রয়েছে, অনেকের আবার ক্যামেরা ভীতিও রয়েছে। তাই ক্যামেরা দেখলে অনেকে ভয়ও পান-না জানি কখন কোন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। তাছাড়া এখন ক্যামেরার ফুটেজ খুবই মূল্যবান। এসব ফুটেজ দেখে অনেক কিছু শনাক্ত হয়। সুতরাং ইদানীং ক্যামেরাও একটি পাওয়ার। অনেকেই সেই পাওয়ারটি ব্যবহার করেন স্বীয় স্বার্থে।

আমাদের অনেকের মধ্যে একটি প্রবণতা রয়েছে, আর তা হচ্ছে আত্মপ্রদর্শন। নিজে যা নয় তার চেয়ে বেশি প্রদর্শন। কিন্তু দান-প্রতিদান-অবদান এসব নিয়ে মতের ব্যবধান অভিধান না ঘেঁটেও অবধান করা যায়। ছোটবেলায় পড়েছি, ‘আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যাকে বড় বলে বড় সেই হয়’ কিন্তু এদের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো। এরা নিজেরাই নিজেদের বড় বলে এবং এদের কল্যাণে টিভি পর্দায় চেহারা দেখানোর মোহে কিছু তথাকথিত বিশিষ্ট ব্যক্তিও এসব অযোগ্য লোককে বড় বলছে, অযোগ্যকে যোগ্য বলছে।

যেহেতু গ্রামগঞ্জের সৎসাহসী মানুষগুলো বিবেকের তাড়নায় কাজ করেন, তাই তাদের মধ্যে কোনো ভণ্ডামি নেই। যতই সামনে এগুবে ততই আলোকিত হবে তাদের চরিত্র। আর যতই দিন যাবে প্রচার কাঙ্গাল মানুষদের মুখটা ততই বেরিয়ে আসবে মুখোশের আড়াল থেকে। এদের দেখে অন্যে লজ্জা পেলেও এরা লজ্জিত হন বলে মনে হয় না। এটা এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। এ ধরনের স্বঘোষিত লজ্জাহীন, এক কথার মানুষের কথার ফানুসে কাজ হয় না। যতই ঝানু সে হোক না কেন। রাজনীতির ক্ষেত্রে এ ধরনের চরিত্র পরিবর্তন কিংবা দলবদল আমাদের দেশে অনেকটা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে চলে এসেছে। প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা পালন করা হবে না-এটা এখন সবার গা সওয়া হয়ে গেছে। কারণ নির্বাচনের সঙ্গে মরণ-বাঁচনের সম্পর্ক থাক বা না থাক বচনের সম্পর্ক বড়ই মধুর। এই বচনের বিরচন গুণে ডজন ডজন প্রতিশ্রুতি মানুষের স্মৃতিগ্রাহ্য করতে পারলেই নির্বাচনে জয়, আর তা না পারলে বচন দোষে নির্বাচনে জয়ের আশায় পচন বা ক্ষয়। সে জন্যই রাজনীতিতে কেউ গালি খায়, কেউ তালি পায়। কেউ চোখের জলে সিক্ত হয়-কেউ প্রশংসায় অভিষিক্ত হয়। এসব গালি-তালি নিয়ে আবার জবর জবর খবরও হয়। কিন্তু মিডিয়াতে বিচরণ করে সুন্দর সুন্দর মুখরোচক কথা বলে অন্তরালে যখন অন্য দৃশ্য চিত্রায়িত হয় তখন স্বগোত্রীয় বলে অনেকেই সেটা প্রকাশ করেন না। প্রবাদেও আছে, ‘কাকের মাংস কাকে খায় না’। যদিও এটা মোটেই কাম্য নয়।

অনেক কিছু বিকৃতির সঙ্গে ইদানীং টেলিভিশনেরও ইতিহাস বিকৃতি ঘটছে। জবাবদিহিতা না থাকায় যার যেমন খুশি তেমনিভাবে টিভির ইতিহাস রচনা করছেন এবং বলছেন। কেউ কেউ টিভিতে অবদানের জন্য বুক ফুলিয়ে পুরস্কারও নিচ্ছেন। যদি ধারাবাহিকভাবে টিভির ইতিহাস বলতে হয়, তাহলে টিভির এই পরিবর্তন বা এগিয়ে আসাকে চারটি স্তরে ভাগ করা যায়। প্রথমত, সাদাকালো টেলিভিশন, এরপর রঙিন টেলিভিশন। তারপর বেসরকারিভাবে নির্মিত প্যাকেজ অনুষ্ঠান এবং শেষে প্রাইভেট চ্যানেল। ১৯৬৪ সালে টিভির জন্ম হওয়ার পর বাংলাদেশ টেলিভিশন সাদা-কালো অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে। ১৯৮০ সালে যাত্রা শুরু হয় রঙিন টেলিভিশনের, অর্থাৎ টেলিভিশনে রঙিন অনুষ্ঠান সমপ্রচার। আর সে সময়েই টেলিভিশন অনুষ্ঠানে টিভি রিপোর্টিংয়ের সূচনা করেন প্রয়াত ফজলে লোহানী (আশির দশকের শুরুতেই)। ১৯৯৪ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে প্যাকেজ অনুষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘ইত্যাদি’। এটাই ছিল বেসরকারিভাবে নির্মিত প্রথম অনুষ্ঠান। তাই বেসরকারিভাবে অনুষ্ঠান নির্মাণের পথ প্রদর্শকও বলা যায় ‘ইত্যাদি’কে। এরপর ১৯৯৭ সালে দেশের প্রথম প্রাইভেট চ্যানেল হিসেবে যাত্রা শুরু করে এটিএন বাংলা। যা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকগুলো চ্যানেলের জন্ম হয়। আর দেশের প্রথম টেরিস্টিরিয়াল চ্যানেল হিসেবে ২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে একুশে টেলিভিশন। টিভির এই ধারাবাহিক ইতিহাস অনেকেই জানেন, তবে বলেন না। অথচ মানুষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ চায়, সত্য তথ্য চায়। তাই ইতিহাস বিকৃতি রোধে সত্য তথ্য প্রকাশ জরুরি বলেই বলা।

আমাদের এখানে কিছু কিছু চ্যানেলের চরিত্র বড় বিচিত্র। নির্বাচনের আগে এদের আচরণ এক রকম আর ফলাফল প্রাপ্তির পর অন্যরকম। দেখা গেল নির্বাচনের আগে কোনো একটি বিশেষ দলের স্বপক্ষে চ্যানেলটি ভূমিকা রেখেছে কিন্তু নির্বাচনে হেরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডিগবাজি, ওই দলের আদর্শ উধাও। আলোচক উধাও, বিষয়বস্তুও উধাও-নতুন বিষয়ের সংযোজন। অর্থাৎ এতদিন টেলিভিশনে যে দলের গুণকীর্তন কিংবা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জয়গান করেছেন সেই দল ক্ষমতায় না গেলে ঠিক তার উল্টো আচরণ শুরু করেন। তড়িঘড়ি করে জেতা পার্টির নেতাদের পদলেহন শুরু। উপস্থাপকের প্রশ্ন করার ধরনও যায় পাল্টে। তবে এই টকশোগুলোতে যারা রাজনৈতিক বক্তা থাকেন এদের কারও কারও সঙ্গে চ্যানেলগুলোর হটলাইন থাকে এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর এসব টকশোর মিত্ররাই এদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন। সেখানে দলের আদর্শ নয় বরং প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ও ব্যক্তিগত সম্পর্কই প্রাধান্য পায়।

মানুষ একটি নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করতেই পারে কিন্তু দুঃখ হয় তখন যখন দেখি সময়ের পরিবর্তনে নিজের স্বার্থে মুখোশ পাল্টে এতদিনের সুহৃদদের দূরে ঠেলে দিয়ে কেউ অন্যসুরে কথা বলেন। আর জেতা দলের নেতাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। টিভি পর্দায় চেহারা দেখানোর বাসনায় এ ধরনের চরিত্রহীন মানুষের ফাঁদে নিয়মিত পা দিচ্ছেন সরকারের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ। আবার কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী এদের জীবন ও কর্ম নিয়ে পত্রিকার পাতায় কলামও লেখেন। আর এসবই রচিত হয় মিথ্যের ওপর। সত্যি সেলুকাস বিচিত্র এসব বুদ্ধিজীবী-এদের চরিত্র নিয়েও গবেষণা করা দরকার। মিডিয়া হচ্ছে খারাপ-ভালো, ভুল-শুদ্ধ, নিয়ম-অনিয়ম, নীতি-দুর্নীতি সম্পর্কে সত্য তথ্য প্রকাশের স্থান। সেখানে এ ধরনের ভণ্ডামি ও প্রচারণা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আসলে এই দেখানো কথা, দেখানো কাজ, লাজলজ্জা ভুলে বড় হয়ে উঠেছে আজ। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের এখানে পালন করা হলো ভালোবাসা দিবস। আমার এক বন্ধু আমাকে প্রশ্ন করেছিল-আচ্ছা ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার জুটিদের জন্য একটি অন্যরকম দিন মেনে নিলাম কিন্তু সেদিন যদি কারও ডিভোর্স হয় তাহলে কি বলবি? পাশ থেকে আমার আর এক বন্ধু তাত্ক্ষণিকভাবে উত্তর দিয়ে দিল-দিবসের সঙ্গে ডিভোর্স শব্দটির দারুণ মিল। সুতরাং তাদের জন্য সেদিন ভালোবাসা দিবস নয়-হবে ভালোবাসা ডিভোর্স। সেরকম এই জাতীয় লজ্জাহীন মানুষদের লজ্জাবোধ জাগিয়ে তোলা কিংবা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যও একদিন লজ্জা দিবস পালন করা উচিত। অন্তত একদিনও যদি লজ্জাবোধটা জাগ্রত হয়-মন্দ কী। শুধু তাই নয়, এখন রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে আধুনিকতার নামে যেসব অশোভন দৃশ্য চোখে পড়ে তাতেও অনেকে লজ্জা পান। আজকাল মুরুব্বিদের প্রতিও শ্রদ্ধা-ভক্তি, আদব-কায়দা বলতে কিছু নেই। সে জন্য লজ্জা দিবসের মতো শ্রদ্ধা দিবস, ভক্তি দিবসও পালন করা উচিত। এই দিবসে বিভিন্ন সেমিনার, র‌্যালি, টকশো ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে শ্রদ্ধা-ভক্তি জিনিসটা কি? এক সময় আমাদের মধ্যে এসব সামাজিকতা থাকলেও এখন নেই কেন? আমাদের সমাজে এর গুরুত্ব কি ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার আজকাল বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের অনেক বড় বড় ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য নিজের ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে যে হারে চামচামি অর্থাৎ চাটুকারিতা শুরু করেছে তা রীতিমতো দৃষ্টিকটু এবং ক্ষতিকর। সে জন্য প্রয়োজন চামচামুক্ত দিবস। আমাদের সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এবং কিছু কিছু মানুষের চারিত্রিক বিকারের কারণে এ ধরনের বিভিন্ন প্রকার দিবস পালন আমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। এর ফলে যদি সবার কিছুটা হলেও বেধোদয় হয়, সেটাই হবে বড় প্রাপ্তি। কারণ বর্তমান সমাজে ভালো মানুষের বড় অভাব। তবে এ কথা ঠিক, মানুষ যদি মানুষ হয়-তবে সে ভালো মানুষই হয়। না হলে তো তাকে বলা হতো অমানুষ। মানুষ আর অমানুষে অনেক পার্থক্য। যারা মানুষ তারা অন্তত এ ধরনের ভণ্ডামি, মিথ্যাচার, প্রতারণা-এগুলো থেকে দূরে থাকেন। সে জন্যই আমরা মানুষ চাই, অমানুষ নয়।

 

লেখক :    গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

            পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়নকর্মী।

সর্বশেষ খবর