৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৮:৩২

যাদের আলোয় আলোকিত বিপিএল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

যাদের আলোয় আলোকিত বিপিএল

চার বছর আগে জোহানেসবার্গে ৩১ বলে তিন অঙ্কের যে জাদুকরী ইনিংসটি খেলেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, উইকেটের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে ‘মি. ৩৬০ ডিগ্রি’ ডি ভিলিয়ার্সের রুদ্রমূর্তি দেখেছিলেন রিলি রুশো। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলার ওই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন রুশোও। দুই প্রোটিয়াস ক্রিকেটার এবার আলো ছড়িয়েছেন বিপিএলেও। দুজনেই খেলেছেন রংপুর রাইডার্সের জার্সি গায়ে। বিপিএলের এবারের আসরের সবচেয়ে বড় তারকার নাম ডি ভিলিয়ার্স। ৬ ম্যাচে ২৪৭ রান করে নামের যথার্থতা প্রমাণও করেন। প্রোটিয়াস সাবেক অধিনায়ক ছাড়াও বিপিএল মাতিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই নিষিদ্ধ ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। খেলেছেন ক্রিকেটের ‘যাযাবর’ ক্রিস গেইলও। এতসব তারকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাট ও বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, সাইফুদ্দিনরা। এসব ক্রিকেটারের আলোকিত পারফরম্যান্সে রোশনাই ছড়িয়েছে বিপিএল।

৫ জানুয়ারি মাঠে গড়িয়েছে বিপিএল। সাত দলের টুর্নামেন্টের শুরুতে বিদেশিদের সঙ্গে তাল মেলাতে কষ্ট করতে হয়েছে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিম, তাসকিনদের। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ম্যাচ যত খেলেছে, খোলস ভেঙে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। ব্যাট হাতে রুশো, নিকোলাস পুরান, এভিন লুইস, অ্যালেক্স হেইলস, ডি ভিলিয়ার্স, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুব একটা পেছনে ছিলেন না মুশফিক, তামিম, সাকিব। তবে বল হাতে মাশরাফিদের জয়-জয়কার। শীর্ষ বোলারদের তালিকায় ওপরের পাঁচজনই বাংলাদেশের।

শিরোপার আনন্দে মেতে উঠতে রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ডায়নাইমাইটস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, চিটাগং ভাইকিংস, রাজশাহী কিংস, সিলেট সিক্সার্স ও খুলনা টাইটানস দলে ভেড়ায় দেশি-বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের। রংপুর শক্তি বাড়ায় ডি ভিলিয়ার্স, রুশো, গেইল, হেইলস, রবি বোপারাদের দলভুক্ত করে। ঢাকা নিয়ে আসে সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, কিয়েরন পোলার্ড, লুক রাইট, হজরতউল্লাহ জাজাই, কুমিল্লা দলভুক্ত করে স্টিভ স্মিথ, লিয়াম ডওসন, এভিন লুইস, থিসারা পেরেরা, শহীদ আফ্রিদি, শোয়েব মালিক, চিটাগং দলে ভেড়ায় রবি ফ্রাইলিঙ্ক, ক্যামেরন ডেলপোর্ট, মোহাম্মদ শেহজাদ, সিকান্দার রাজা, নজিবুল্লাহ জারদান, সিলেট দলে নেয় ডেভিড ওয়ার্নার, সন্দ্বীপ লামিচানে, আন্দ্রে ফ্লেচার, মোহাম্মদ পুরান, সোহেল তানভীর, নিকোলাস পুরান, রাজশাহী খেলিয়েছে লরি ইভান্স, সেকুঞ্জে প্রসন্না, রায়ান ডেসকাট, ইসুরু উদানা এবং খুলনা খেলিয়েছে কার্লোস ব্রেথহোয়েইট, লাসিথ মালিঙ্গা, ডেভিড মালান, পল স্টার্লিং, ডেবি ওয়াইজ, ব্রেন্ডন টেলরদের। এসব বিদেশির মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যাট ও বলের ঝড় তুলেছেন। সবার ওপরের নাম রংপুরের রিলি রুশোর। দুই-দুটি শূন্য মারার পরও ১৪ ম্যাচে রুশোর রান ৫৫৮। সেঞ্চুরি একটি এবং হাফ সেঞ্চুরি ৫টি। নিকোলাস পুরানের রান ১১ ম্যাচে ৩৭৯, লরি ইভান্স ১১ ম্যাচে ৩৩৯, অ্যালেক্স হেইলস ৮ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিসহ ৩০৪, এবি ডি ভিলিয়ার্স ৬ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিসহ ২৪৭। ফাইনাল ছাড়া নারাইনের রান ১৪ ম্যাচে ২৭৯, রাসেলের রান ২৯৫, এভিন লুইসের রান এক সেঞ্চুরিসহ ৯ ম্যাচে ২৭৩। এসব বিদেশির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করেছেন টেস্ট ক্রিকেটে দুই-দুটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক মুশফিক। ফাইনাল খেলতে না পারায় মুশফিক এখন নিউজিল্যান্ডে। বিপিএলে ১৩ ম্যাচে রান করেছেন তিন হাফ সেঞ্চুরিসহ ৪২৬। ফাইনালে সেঞ্চুরিসহ তামিমের রান ১৪ ম্যাচে ৪৬৭, সাকিব ১৪ ম্যাচে ২৯৮। নজর কেড়েছেন বর্ষীয়ান জুনাইদ সিদ্দিকী। খুলনার পক্ষে ১২ ম্যাচে রান ২৯৮। নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে সিরিজে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সাব্বির রহমান ১২ ম্যাচে ২৭৬, মোহাম্মদ মিথুন ১৪ ম্যাচে ২২২, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১২ ম্যাচে ২১৯, লিটন দাস ১১ ম্যাচে ১৯২, মেহেদী মিরাজ ১২ ম্যাচে ১২৩ রান করেন। জাতীয় দলের ব্যাটসম্যানরা ধারাবাহিক না থাকলেও বোলারদের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত। ইনজুরির জন্য নিউজিল্যান্ড যেতে না পারা তাসকিনের উইকেট ১২ ম্যাচে ২২টি। ফাইনাল খেলতে না পারায় হতাশ মাশরাফির উইকেট ১৪ ম্যাচে ২২টি। ফাইনাল ছাড়া সাকিবের উইকেট ১৫ ম্যাচে ২৩টি। ২১ উইকেট রুবেলের, সাইফুদ্দিন ১৮, শফিউল ১৫, খালেদ ১৭, আবু জায়েদ রনির উইকেট ১৮টি।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচ নেই। তিনটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলবে। কোনো রকমের প্রস্তুতি ছাড়াই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। তারপরও ভালো করতে মরিয়া টাইগাররা নিউজিল্যান্ডে পা রেখেছে বিপিএলের আত্মবিশ্বাস নিয়ে।

বিডি-প্রতিদিন/০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব

সর্বশেষ খবর