৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৭:৩০

জাবিতে পাখি মেলা অনুষ্ঠিত

নাহিদুর রহমান হিমেল:

জাবিতে পাখি মেলা অনুষ্ঠিত

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর লীলাভূমি খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৃতি ও পাখি প্রেমিক, আলোকচিত্রী আর দর্শনার্থীদের সরব উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল “পাখি মেলা-২০১৬”।

“পাখ পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই পাখির যত্ন” এ স্লোগানকে ধারণ করে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন মহুয়া তলায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যেমে দিনব্যাপী এ মেলার সূচনা হয়।

এদিকে এ মেলা উপলক্ষে সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় উৎসবমুখর ছিলো গোটা ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে অতিথি পাখির জলকেলী, খুনসুটি, মুক্ত আকাশ জুড়ে কিচির-মিচির শব্দে পাখিদের উড়াউড়ি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শনার্থীরা।

মূলত প্রতিবছর পাখির উপর গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এ মেলার আয়োজন করা হয়। এবছরও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ১৪তম বারের মত ব্যতিক্রমী এ মেলার আয়োজন করা হয়।

সকাল এগারোটায় বেলুন উড়িয়ে মেলা উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, আই ইউ সি এন এর সমন্বয়ক ড. হাসিব ইরফান উল্লাহ, বার্ড ক্লাবের সভাপতি ড. নিয়াজ আবদুর রহমান, অরন্যক ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার (এডমিন) আব্দুল হক চৌধুরী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সাজেদা বেগম, বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

মেলায় বক্তারা বলেন, বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করে। তাই পরিবেশকে বাঁচাতে পশু-পাখিকে ভালোবাসতে হবে।

এদিকে এবারের মেলায় পাখির প্রজাতি নিয়ে কাজ করার জন্য বরিশালের আব্দুল মজিদ শাহ্ শাকিল, মৌলভীবাজারের সৈয়দ মো. রাতুল এবং ঢাকার শাহরিয়ার রসদিকে ‘বিগ বার্ড’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. সাজেদা বেগমের পাখি বিষয়ক ‘বার্ডস অব জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এছাড়া দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ পাখিমেলায় ছোটদের পাখি বিষয়ক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপে শিশু কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, কুইজ প্রতিযোগিতা, বই-পোস্টার প্রদর্শনী, সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি প্রদর্শনী, পাখি চেনা প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক বিতর্ক ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতায় ৬টি দল অংশগ্রহণ করে এবং শিশু কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় দুইটি গ্রুপে প্রায় ১০১ জন শিশু অংশগ্রহণ করে।

এদিকে শুক্রবার মেলাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল রূপে। মেলা উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পাখির ছবি সম্বলিত ব্যানার/ফেস্টুন ঝোলানো হয়। অন্যদিকে ছুটির দিন হওয়ায় মৃদু শীতকে উপেক্ষা করে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পাখিপ্রেমী দর্শনার্থী আলোকচিত্রীরা এ ক্যাম্পাসে ছুটে আসেন। মেলায় শিশু কিশোরদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।

মেলার আহ্বায়ক পাখি বিশেষজ্ঞ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মুলত পাখি পরিচিতি এবং জনসাধারনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই প্রতিবছর আমরা এ মেলার আয়োজন করে থাকি। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি বড় অঙ্গনে  প্রজাপতি ও পাখি মেলার মধ্য দিয়ে আমরা প্রকৃতিকে সংরক্ষণের পাশাপাশি গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখি মেলার আয়োজন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাণীবিদ্যা বিভাগ ও ওয়াল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার।

বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ ফেব্রুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর