১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৩:০৩

জাবিতে ১১ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ১২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

জাবিতে ১১ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ১২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পৃথক পৃথক ঘটনায় ১২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় ১০ জন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ২ জনকে সাময়িক এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে একজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতদের একজন শিক্ষার্থী মারধর ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি উভয় ঘটনায় জড়িত।

বহিষ্কারের এ আদেশ গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় অনুমোদন করা হয় বলে জানান রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, “শৃঙ্খলা বিধির ৪ ও ৫ নং ধারা অনুযায়ী এসব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের জন্য স্থায়ী বহিষ্কৃত মো. জাহিদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, “অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্র-শৃঙ্খলা বিধিমালার ৫ নং ধারা অনুযায়ী জাহিদুল ইসলাম এর ছাত্রত্ব বাতিল করা হল এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।”

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এস এম শরীফ আহমেদ ও গণিত বিভাগের মো. নাজমুল হুদা। এদের মধ্যে শরীফ আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির দপ্তর সম্পাদক এবং নাজমুল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ-কর্মী।

এই দুইজনের বিষয়ে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, “গত ১৮ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি চলাকালীন জালিয়াতির চেষ্টার অভিযোগে শৃঙ্খলা বিধির ৫ নং ধারা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখ হতে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হল।” একই সাথে এই ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেনকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া গত ১০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দ্বীন মুক্তমঞ্চে, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ও বটতলায় মওলানা ভাসানী হলের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামকে মারধরের ঘটনায় ১০ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তারা হলেন ৪০তম আবর্তনের অর্থনীতি বিভাগের সাইদুল, ৪১তম আবর্তনের মো. মিজানুর রহমান (প্রত্নতত্ত্ব), ৪২তম আবর্তনের জাহিদ হাসান শিহাব (দর্শন), মো. ইয়াছিন (ভূগোল ও পরিবেশ), ইসতিয়াক আহমেদ চৌধুরী (প্রাণিবিদ্যা), নাজমুল হুদা (গণিত) ও দীব্যেন্দু বিশ্বাস দ্বীপ (গণিত) এবং ৪৫তম আবর্তনের অর্থনীতি বিভাগের জহুরুল হক, এস এম ইনামুজ্জামান শুভ ও আশিকুর রহমান। বহিষ্কৃতরা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী।

এদের বিষয়ে শৃঙ্খলা বিধির ৪ ও ৫ ধারা অনুযায়ী সিন্ডিকেটে সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনার অধিকতর তদন্ত করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করার জন্য বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রাধাক্ষ অধ্যাপক এস এম বদিয়ার রহমানকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত থাকাকালীন উক্ত ছাত্ররা হলে অবস্থান করতে এবং ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, “আমরা বিভিন্ন ঘটনায় কয়েকজনকে বহিষ্কারের কথা শুনেছি। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেউ থাকলে তাদের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।”


বিডি-প্রতিদিন/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/সালাহউদ্দিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর