৮ এপ্রিল, ২০১৭ ২০:২৩

রামেকে শিবিরের ‘মেইন’ ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:

রামেকে শিবিরের ‘মেইন’ ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) শহীদ কাজী নূর-উন-নবী ছাত্রাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রাবাসটি বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
 
রামেকের এই ছাত্রাবাসটি ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘মেইন’ ছাত্রাবাস নামে পরিচিত। এই ছাত্রাবাসটিতে শুধু শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা থাকতেন। তাদের সঙ্গে থাকতেন ১২ জন বিদেশি শিক্ষার্থী। শিবিরের নেতাকর্মীরা ছাত্রাবাসটির নাম উচ্চারণের ক্ষেত্রে ‘শহীদ কাজী নূর-উন-নবী’ শব্দটি উচ্চারণ না করে ‘মেইন’ শব্দটি ব্যবহার করতেন।

এই ছাত্রাবাসটিকে শিবিরের বড় ‘আস্তানা’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। মহানগর শিবিরের নেতাকর্মীদের গোপন বৈঠকও হতো এখানে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের পর এ ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ শিবিরের লিফলেট, বই ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। এরপরই ছাত্রাবাসটি বন্ধ ঘোষণা করল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

রামেকের উপাধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর পুলিশ ছাত্রাবাসটি থেকে ‘দেশবিরোধী’ কর্মকাণ্ড পরিচালনার লিফলেট ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তাই সাধারণ ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রাবাসটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্রাবাসটি বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে রামেক ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় দু'পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে শিবিরের দুই কর্মী আহত হন। পরে অভিযান চালিয়ে আহত দু’জনসহ শিবিরের মোট পাঁচ কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আর শহীদ কাজী নূর-উন-নবী ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করা হয় শিবিরের লিফলেট ও ধারালো অস্ত্র।

এরপর শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে আবার ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিবিরের নেতাকর্মীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ক্যাম্পাসে উত্তেজনা থাকায় এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা তদন্তে শনিবার পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। রামেকের প্রফেসর ডা. মোসাদ্দেক হোসেনকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে ১০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

রামেকের উপাধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে শহীদ কাজী নূর-উন-নবী ছাত্রাবাস আবার খুলবে কী না। তবে রামেকের অপর একটি ছাত্রাবাস এবং তিনটি ছাত্রীনিবাস আগের মতোই খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন উপাধ্যক্ষ।


বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর