২১ জুলাই, ২০১৭ ২১:৩৩

বেরোবিতে হাইকোর্টের রায়ের পরও ঝুলে আছে সোহেলের ভর্তি

বেরোবি প্রতিনিধি:

বেরোবিতে হাইকোর্টের রায়ের পরও ঝুলে আছে সোহেলের ভর্তি

অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ছাত্রত্ব হারান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা। ছাত্রত্ব ফিরে পেতে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. একে এম নুর উন নবীর দপ্তরে দীর্ঘদিন ঘুরেও ফল না পাওয়ায় উচ্চ আদালতের দারস্থ হন সোহেল রানা। উচ্চ আদালত সোহেলের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দেন। এদিকে উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে রায়ের দুই বছরেও সোহেল রানাকে ভর্তির সুযোগ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা যায়, সোহেল রানা ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন। ২০১১ সালে ২য় বর্ষের ২য় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন ‘মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়জনিত’ কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন সোহেল রানা। কোনমতে পরীক্ষা শেষ করে বিভাগীয় শিক্ষকদের জানিয়ে বাড়িতে যান সোহেল। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে তার অস্ত্রপাচার করানো হয়। অস্ত্রপাচারের পর দেড় বছরেরও বেশি সময় সোহেল বিছানাসজ্জা ছিল বলে জানায় তার পরিবার ও সহপাঠীরা।

সুস্থ হয়ে ২০১৩ সালের জুন মাসে ক্যাম্পাসে ফেরেন সোহেল। তাকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে ৩য় বর্ষের ১ম সেমিস্টার পরীক্ষায় সুযোগ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোহেলের ফলাফল আটকে দেয় এবং তাকে পরবর্তী সেমিস্টার পরীক্ষা থেকে বিরত রাখে।

ফলাফল প্রকাশ ও পরবর্তী সেমিস্টারে ভর্তির জন্য উপাচার্যের নিকট কয়েকদফায় আবেদন করেন সোহেল। এতে কোন লাভ না হওয়ায় ছাত্রত্ব ফিরে পেতে রিট করেন সোহেল রানা। এতে তার ভর্তির জন্য রায় ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। রায়ে সোহেলের ফলাফল প্রকাশপূর্বক ৪ সপ্তাহের মধ্যে তার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

উচ্চ আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সোহেলের ভর্তি কার্যক্রম দেড় বছর বিলম্ব করে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. একে এম নুর উন নবী তার মেয়াদ শেষ করে চলতি বছরের মে মাসে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। তার প্রস্থানের পর নতুন উপাচার্য হিসেবে ১ মাস আগে ক্যাম্পাসে যোগদান করেছেন প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।

নতুন উপাচার্যের যোগদানে আশায় বুক বেঁধেছেন সোহেল। নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে সোহেল রানা বলেন, “উচ্চ আদালতের রায়ের পরও শুধু স্বেচ্চাচারিতার মাধ্যমে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. একে এম নুর উন নবী আমাকে ভর্তির সুযোগ দেননি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করার মাধ্যমে কালক্ষেপণ করে আমার সাথে প্রতারণা করেছেন। নতুন উপাচার্য যেন আমাকে ভর্তির সুযোগ দেন।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘আমি আজই সোহেলের বিষয়টি অবগত হয়েছি। আদালতের নির্দেশনার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে অল্প সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’ 

 

বিডি প্রতিদিন/২১ জুলাই ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর