১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১০:৪০
ইবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন:

আওয়ামীপন্থীদের পরাজয়ের নেপথ্যে শিক্ষা ছুটি

ইকবাল হোসাইন রুদ্র, ইবি:

আওয়ামীপন্থীদের পরাজয়ের নেপথ্যে শিক্ষা ছুটি

ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত প্যানেল নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছে। মোট ১৫ টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ টি পদে বিএনপি-জামায়াত প্যানেল থেকে এবং একটি সদস্য পদে আওয়ামী ও প্রগতিশীল শিক্ষক প্যানেল থেকে জয় লাভ করেছে। 

আর ই নির্বাচনে শিক্ষা ছুটিকেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের পরাজয়ের মূল কারন হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের অধিকাংশ শিক্ষকরা। এছাড়া পরাজয়ের নেপথ্যে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ এবং প্রশাসনের কাছে দলীয় শিক্ষক নেতাদের অবমূল্যায়নকে অনেকেই বড় করে দেখছেন। বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত প্যানেল থেকে অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান সভাপতি এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অলী উল্ল্যাহ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্বববিদ্যালয়ের ৩৩ টি বিভাগের মোট ৩৫২ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। এর মধ্যে মোট ৪৫ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটি নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা ও গবেষনার কাজে নিয়োজিত আছেন। এবছর শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে ৩৫২ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৯২ জন শিক্ষক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ধারনা মতে শিক্ষা ছুটির বাইরে তাদের প্যানেলের মোট ভোটার ১৪৭ জন। দলীয় পোলিং এজেন্ট এর মতে তাদের প্যানেলের উপস্থিত ভোটার ১৩৪ জন। 

আপরদিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের মতে তাদের প্যানেলের মোট ভোটার ১৫৪ জন। দলীয় পোলিং এজেন্ট এর গণনায় তাদের উপস্থিত ভোটার ১৪১ জন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শিক্ষা ছুটিতে থাকা ৪৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৪ জনই আওয়ামীপন্থী ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং শাপলা ফোরামের সদস্য। শিক্ষা ছুটিতে দেশে অবস্থানরত এবং ছুটির বাইরে অনেক শিক্ষককে ভোট দানে বিরত থাকতে দেখা গেছে। প্রার্থী হয়েও নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত না হওয়ায় ভোট দিতে পারেনি অধ্যাপক ড. অরবিন্দু সাহা। 

এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং শাপলা ফোরামের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বকে এই ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দেখছেন প্রগতিশীল অনেক শিক্ষক। প্রার্থী হওয়া নিয়ে ফোরামের সিনিয়র-জুনিয়দের আত্মকোন্দলের কারনে প্যালেন ভোট কম পড়েছে বলে ধারনা করছেন অনেক শিক্ষক। আবার প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় বিপরীত প্যানেনকে ভোট দিয়েছে অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং শাপলা ফোরামের নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না থাকাকেও এই বিপর্যয়ের কারন হিসেবে দেখছেন তারা। 

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সিনিয়র এক শিক্ষক জানান, ‘শিক্ষকদের মধ্যে দলীয় আদর্শের ঘাটতি, প্রশাসনের সাথে প্রগতিশীল শিক্ষকদের সমন্বয়হীনতা এবং আওয়ামীপন্থীদের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে থাকায় ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে বলে আমি মনে করছি।’

বিএনপি-জামায়াত প্যানেল থেকে নির্বাচিত অন্যরা হলেন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম আইনুল হক আকন্দ, কোষাধ্যক্ষ ড. আসাদ-উদ-দৌলা, সদস্য অধ্যাপক ড. আবু সিনা, অধ্যাপক ড. মোহা: তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নূরুন নাহার, অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. রাশেদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী আওয়ামীপন্থী প্যানেল থেকে সহকারী অধ্যাপক আনিচুর রহমান সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।

বিডিপ্রতিদিন/ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর