১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৯:২৮
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ

নারায়ণগঞ্জে কোচিং না করায় ছাত্রীদের ফেল করানোর অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জে কোচিং না করায় ছাত্রীদের ফেল করানোর অভিযোগ

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যে সাড়া না দেয়ায় ছাত্রীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কলেজে এসে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে খাতা দেখতে চাইলেও তা দেখতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। উল্টো শিক্ষার্থীদের উপর দোষ চাপিয়ে অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সাথে প্রতি বিষয়ের জন্য ৪০ টাকা করে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। 

জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষায় এবার শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই যারা বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকদের কোচিংয়ে পড়েননি তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দেয়া হয়েছে। ফেল করানো হবে এ ব্যাপারে তাদেরকে আগে থেকেই শিক্ষকরা সতর্ক করে কোচিংয়ে ভর্তি হতে বলেছিলেন। কিন্তু যারা ভর্তি হননি তারাই অকৃতকার্য হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ফেল করা এক শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর আমার বাবা এসেছিলেন। আমি পাঁচ বিষয়ে ফেল করেছি কিন্তু আমি সকল পরীক্ষাই ভালো দিয়েছি। আমার বাবা পরীক্ষার খাতা দেখতে চাইলে অধ্যক্ষ তাকে জানান আমি নাকি পড়ালেখা করিনা, তাই ফেল করেছি। আমার বাবাকে আমাকে পড়ার জন্য চাপ দিতে বলে তিনি তাকে বলেন, পরীক্ষার খাতা দেখানো যাবেনা। পরে আমার কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের জন্য ৪০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। 

এদিকে একই অভিযোগ করেন একাধিক শিক্ষার্থীও। তাদেরকেও এরকম পরীক্ষার খাতা দেখতে দেয়া হয়নি। কলেজ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে খাতা হারিয়ে গেছে। যদিও পরবর্তী পরীক্ষার আগে খাতাগুলো কলেজে সংরক্ষণ করার কথা। 

অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, এভাবে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দোষ দিতে পারেন না। কেন শিক্ষার্থীদের এমন ফল বিপর্যয় তা জানা দরকার। আসলেই কি আমাদের সন্তানদের কোচিংয়ে না পড়ানোয় ফেল করানো হয়েছে। 

অভিভাবকরা জানান, তারা অনেকেই খাতা দেখতে চেয়েছেন কিন্তু একেক সময় একেক অজুহাতে খাতা দেখতে দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। বোর্ড পরীক্ষায় ফেল করলেও খাতা চ্যালেঞ্জ করে দেখায় সুযোগ থাকলেও এখানে কেন নেই তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন অনেকেই। তবে শিক্ষার্থীর পরীক্ষার কথা ভেবে কেউ এ ব্যাপারে আর তেমন বাড়াবাড়ি করেননি বলে জানান তারা। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বেদৌরা বিনতে হাবিবা পরী জানান, কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি যোগদানের পরে সকল শিক্ষককে সতর্ক করে দিয়েছি কলেজ আওয়ারে কোন ধরনের কোচিং করানো যাবেনা। আর যেসকল শিক্ষার্থী ফেল করেছে তারা ঠিকমতো লেখাপড়া করে না। অনেকেতো কলেজে ঠিকমতো আসেও না। মূল্যায়ন পরীক্ষাতেও অনেকে ফেল করেছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল বারী জানান, আমরা এ ব্যাপারে অবগত নই, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। খাতা দেখতে চাইলে অবশ্যই দেখতে দেয়া উচিত। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হবে।

 

বিডি প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর