১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৬:৪৮

অতিথি পাখির ক্যাম্পাসে বর্ণিল পাখি মেলা

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত:

অতিথি পাখির ক্যাম্পাসে বর্ণিল পাখি মেলা

“আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়

হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;

হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল ছায়ায়;
হয়তো বা হাঁস হব কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়।”
রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় এভাবেই ফুটে উঠে পাখ-পাখালিময় বাংলার চিরায়ত আবহ। প্রকৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এই পাখিরা একদিকে যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্য্য বাড়ায় তেমনি অবদান রাখে পরিবেশের বাস্তুসংস্থানে। তবে নানা কারণে দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। পাখি সংরক্ষণে তাই গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে আয়োজিত হচ্ছে পাখি মেলা। 
তারই ধারাবাহিকায় জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের উদ্যোগে আজ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হল ১৭ তম পাখি মেলা। 

‘পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সকাল সাড়ে ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম উদ্বোধন করেন বর্ণাঢ্য এই মেলার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি ও অতিথি পাখির জন্য সুপরিচিত জাবি ক্যাম্পাসে মেলা উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভীড় করে নানা বয়সী দর্শণার্থীরা। 
দিনব্যাপী মেলার বিভিন্ন পর্বে ছিল আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা ও চেনা প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলারস দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, স্টল সাজানো প্রতিযোগিতা (পাখির আলোকচিত্র ও পত্র-পত্রিকা প্রদর্শনী), বিগ বার্ড বাংলাদেশ, বার্ড ফটোগ্রাফি এ্যাওয়ার্ড ও কনসার্ভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ প্রদান, জাবি ক্যাম্পাসের পাখি বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন, পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। 
পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে অবদান রাখায় ডেইলি স্টারের আসাদুজ্জামান আসাদ, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নুর আলম হিমেল, সময় টিভির তোহা খান তামিমকে ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ প্রদান করা হয়। 

মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পাখি তথা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধি। আমরা যখন শুরু করি তখন এটার এতো প্রচার ছিল না। এখন এটা জাতীয় ইভেন্ট হয়ে গেছে। সারা দেশ জানে জাবিতে পাখি মেলা হয়। এতে সারা দেশে পাখি গবেষণা ও পাখি সংরক্ষণে সাড়া পাওয়া যায়। এটা পাখির প্রতি জনসচেতনা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।” 

মেলা আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী ছিল ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টার, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, আরণ্যক ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, আইইউসিএন ও বাংলাদেশ বনবিভাগ।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর