২২ জানুয়ারি, ২০১৮ ০৯:০০
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

পুলিশের কাছ থেকে মদ্যপায়ী কর্মীকে ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগ নেতা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

পুলিশের কাছ থেকে মদ্যপায়ী কর্মীকে ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগ নেতা

মদ্যপ ও ছাত্রী উত্যক্তকারী দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা। বহিষ্কৃত ওই ছাত্রলীগ নেতা নাম ফয়সাল সিদ্দীকি আরাফাত। রবিবার বিকেল সাড়ে পাচঁটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক সংলগ্ন এলাকায় থেকে মাদকাসক্ত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্রীদের উত্যক্তের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মী ও এক বহিরাগতকে আটক করে পুলিশে দেয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমন। তবে আটককৃত দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ওই নেতা। 

প্রক্টর ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের তিন জন আবাসিক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের মফিজ লেক এলকায় ঘুরতে যায়। সেখানে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় থাকা তিনজন তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও অশ্লীল ভাষায় উত্যক্ত করতে থাকে। এসময় ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়।  তারা আকুতি জানায় স্যার আমাদের বাচাঁন। প্রক্টর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে ওই তিনজনকে আটক করে। 

আটককৃতরা হলেন ইংরেজী বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইউসুফ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ ও বহিরাগত মুহাইমিনুল ইসলাম লামন। পরে আটককৃতদের ঘটনাস্থল থেকে পুলিশে সোপর্দ করে প্রক্টর। পুলিশ তাদেরকে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থামিয়ে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে ছিনিয়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ফয়সাল সিদ্দীকি আরাফাত ও তার সহযোগীরা। এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতন্ডা হয়। পুলিশের এক কর্মকর্তা অসহায়ভাবে শুধুমাত্র বহিরাগত লামনকে নিয়ে থানায় চলে যায়। 

ভূক্তভোগী ছাত্রীরা জানান, ‘এ ঘটনার পর থেকে আমরা খুবই শংকিত। আমাদের মনে হচ্ছে উত্যক্তকারীরাতো শাস্তি পাবে না বরং ওরা প্রতিশোধ নিবে।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘দায়ীত্বরত পুলিশের কাজে বাধা প্রদান এবং আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছাত্রলীগের যে কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ইবি থানার উপ পরিদর্শক কমলেশ দাস বলেন, ‘আটক তিনজনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় আরাফাতসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা দুইজনকে ছিনিয়ে নেয়। একজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, প্রক্টর হিসেবে সর্বোচ্চ যা করণীয় তাই করেছি। মাদকসহ যে কোন অপকর্মের সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন এক চুল ছাড় দেওয়া হবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ভাংচুরের ঘটনায় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন ফয়সাল সিদ্দীকি আরাফাতকে বহিস্কার করে। সেসময় সে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক ছিল।


বিডি প্রতিদিন/২২ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর