২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৯:৪২

অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করল ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

অবরুদ্ধ ভিসিকে উদ্ধার করল ছাত্রলীগ

উপাচার্য কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রী নিপীড়নের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে অবস্থানরত বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের মারধর করে অবরুদ্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে উদ্ধার করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ১০ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

তারা হলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ঢাবি শাখার সভাপতি তুহিন কান্তি দাস, মহানগরের নেতা অনিক বিশ্বাস, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি ইভা মজুমদার। এছাড়া আহতদের মধ্যে সালমান সিদ্দিক, আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ আল মাহদী, রাজিব, রিফাত, সুদীপ্ত, জিম, তাজওয়ার মাহমিদ সিয়াম, সাদিক, তমা, রাজিব, নওরীন, মাকসুদা ও জামিলের নাম জানা গেছে। এছাড়া সংবাদ কাভার করতে গিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ১৫ জানুয়ারি সাত কলেজের অধিভুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের নিপীড়নকারীদের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে বাম ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তারা মিছিল নিয়ে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করতে যায়। মল চত্বর সংলগ্ন উপাচার্য কার্যালয়ের প্রথম গেইটের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। এসময় গেইট বন্ধ থাকায় তারা তালা ভাংচুর করে কার্যালয়ের সামনের গেইটে গিয়ে জড়ো হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারসহ তিন দফা দাবি জানায়। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান তার কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। এরপর দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা রড দিয়ে কার্যালয়ের দ্বিতীয় গেইটটির তালাও ভেঙে ফেলে। এরপর কিছুক্ষণ সেখানে তারা বিক্ষোভ করে এবং স্লোগান দিতে থাকে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীরা উপাচার্য কার্যালয়ের তৃতীয় গেইট ভেঙে কার্যালয়ের সামনে বসে পড়ে। তারা সেখানে মাইক নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

এরপর দুপুর তিনটার দিকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান একাডেমিক মিটিংয়ে যোগ দিতে সিনেট ভবনে যাওয়ার জন্য বের হলে আন্দোলনকারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। প্রায় এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন এবং ঢাবি শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান কয়েকজনসহ কয়েকজন নেতা উপাচার্যকে উদ্ধার করতে যান। এসময় উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করে আন্দোলনকারীরা। এক আন্দোলনকারী উপাচার্যের গায়ে হাত তোলে এবং কয়েকজন তাকে ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে ছাত্রলীগ নেতারা আন্দোলনকারীদের ধাক্কা দিয়ে উপাচার্যকে উদ্ধার করে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান।

এদিকে, আন্দোলনে ছাত্রদল ও বাম ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ এবং উপাচার্য লাঞ্ছিত হওয়ার খবর পেয়ে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলন:
এদিকে হামলার পর সন্ধ্যায় মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ নেতারা জানান, সাত কলেজের আন্দোলনের নামে ছাত্রদল-শিবির ও বাম নেতারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছিল। এর ফল স্বরূপ তারা উপাচার্যকে লাঞ্চিত করে এবং অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে উদ্ধার করে। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসানসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/২৩ জানুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর