২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৬:১৮

অভিন্ন বয়সসীমা ও কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

অভিন্ন বয়সসীমা ও কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পুরাতন প্রশাসনিক ভবনটির সামনে থেকে শহীদ মিনার হয়ে জোবায়ের স্মরণি। এই দীর্ঘ রাস্তায় রবিবার সকাল থেকে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় জাবির প্রায় এক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী। হাতে ব্যানার আর ফেস্টুন। সেগুলোতে ফুটে উঠেছে চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ এ স্লোগানে কোটা পদ্ধতির সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে তাদের এই মানববন্ধন। 

মানববন্ধনে জাবি কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক আজিজুল শেখ সুলতানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সালেক মুহিদসহ আরো অনেকে। সালেক মুহিদ বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান হিসেবে যে সুযোগটা পাচ্ছি তা অনৈতিক। কারণ ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তারা কখনোই নিজের জন্য যুদ্ধ করেনি। তাদের স্বপ্ন ছিল অনাগত আগামী প্রজন্মেকে একটি বৈষম্যহীন সমাজ উপহার দেয়া। তাই আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বৈষম্যপূর্ণ চলমান এই কোটা প্রথার সংস্কার চাই।”
দেশের চলামন ৫৬% কোটার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “ধরে নিলাম দেশে এখন ৩০% কোটার মানুষ। তাহলে আর বাকি ৭০% কোটার বাইরে। এই ৭০% এর সাথে চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য করে, তাদের মেধার মূল্যয়ন না করলে কখনোই দেশের উন্নয়ন সম্ভব না।”
বর্তমানে দেশের আমলাতন্ত্রের নাজুক অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো  বলেন, “একটি দেশের আমলাতন্ত্রে যে ধরনের দক্ষ লোকবল প্রয়োজন, কোটার কারণে তা আমাদের দেশে নেই। তাই আমাদের দেশের আমলাতন্ত্রের অবস্থা এখন নাজুক। এজন্য আজ আমরা এ মানববন্ধনে শুধু নিজেদের জন্য দাঁড়াইনি। দেশের উন্নয়নের জন্য দাঁড়িয়েছি। যোগ্য লোক আমলা হলে দেশের উন্নয়ন দ্রুত হবে।”

বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলেন, “বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে কখনোই তিনি এ বৈষম্য করতেন না। তিনি কখনোই চাইতেন না এ সোনার বাংলায় দুই ধরনের লোক থাকবে। এক দল মুক্তিযোদ্ধের সন্তান আরেক দল সাধারণ মানুষ। কারণ তিনি দেশের সংবিধানে সকলের জন্য সমান অধিকারের কথা বলেছেন। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ কোটা প্রথা সংস্কার করা দরকার।”
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হচ্ছে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬% থেকে ১০% এ নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শুন্য পদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা, কোটায় কোন ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল ও চাকরির প্রবেশের ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা।
 
এ সময় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন থেকে এই পাঁচ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণসাক্ষর সংগ্রহ করে এবং তা প্রধানমন্ত্রী কাছে পাঠিয়ে দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
 
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন মাক্রোবায়োলজি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শাজাহান সাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের আব্দুল জলিল, প্রত্নতত্ত বিভাগের ৪০তম ব্যাচের মদিনা আক্তার মনা, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে ৪০ তম ব্যাচের তারিকুল ইসলাম জয় প্রমুখ।

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর