শিরোনাম
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১৬:৩৯

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অপহরণ আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অপহরণ আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

কাউকে ক্লাস রুম থেকে আবার কাউকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেওয়া হয়েছে ক্যাম্পাসে না আসার হুমকিও। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বর্তমান চিত্র। গত ৫ দিনের ব্যবধানে ২ শিক্ষার্থীকে অপহরণ এবং বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

অপরদিকে এ অপহরণের প্রভাব পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। ইতিমধ্যে কয়েকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাগাদা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যাম গুলোতেও প্রতিবাদের ঝড় তুলছেন তারা। তাদের অভিযোগ ৫ দিনের ব্যবধানে দুইটি অপহরণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃশ্যমান কোন পদেক্ষেপ নেই। কাউকে আটকও করা হয়নি। বরং ক্যাম্পাসের প্রায় সবকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগােনা আছে। চাইলে সব কিছু সম্ভব। আমরা নিজেরা আতঙ্কে ভুগছি কবে না আবার অপহরণের শিকার হই। এর আগে চবিতে সাংবাদিকদের উপরও হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে এ হামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিল সাংবাদিকরা। এর প্রেক্ষিতে চবির ভিসির আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রতিনিধি জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে থেকে জিরো পয়েন্ট যাওয়ার সময় হঠাৎ করে ১০-১২ জনের একটি দল আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনিস্টিটিউটের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মামদুদুর রহমানকে তুলে নিয়ে যায়। এর পর তার পরিবারকে নানান ধরনের হুমকি দিয়ে তাৎক্ষণিক পাঁচ হাজার টাকা আদায় করে। তারা আরো দুই লক্ষ টাকা দাবি করে। পরে তার পরিবার আপাতত পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে। এর আগে গত বছর মার্চ মাসে আরেকবার তাকে অপহরণ করে ২০ হাজার টাকা আদায় করেছিল একই সিন্ডিকেট।

অপহরণকারী সিন্ডিকেট সম্পর্কে চবি ছাত্র মামদুদুর রহমান বলেন, তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে কোন পক্ষের তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

এ ঘটনার ৫ দিন পার হতে না হতেই  অপহৃত হন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রাণ রসায়ন বিভাগে ভর্তি হওয়া সাজিদ খান নামে এক শিক্ষার্থী। তার পরিবার জানান, সাজিদ মেধা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা-দুই তালিকাতেই উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু ভালো বিষয় পাবে কি না তা নিয়ে সে পরিচিত কিছু বড় ভাইদের সাথে কথাও বলছিল। পরে ফেসবুকে ছাত্রলীগের সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক অনিক হোসাইন সাব্বিরের সাথে ভালো বিষয়ে পাইয়ে দিবে বলে  ২ লক্ষ টাকার চুক্তি করে সাজিদের সাথে। আর এটা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় করা হবে বলে সাব্বির জানান।  কিন্তু চুক্তি হওয়ার আগেই সে ভালো বিষয় পেয়ে যায়। কিন্তু এরপরও টাকা দাবি করে সাব্বির। পরবর্তীতে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হলেও, আরো টাকা দাবি করে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার আরও ২৫ হাজার টাকা দিতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাজিদকে অপহরণ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘ এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বসেছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুক ও একাডেমিক ব্যবস্থা নিব।’

চট্টগ্রাম উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদৌলা রেজা বলেন, ‘এ ঘটনাগুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এ চক্রটিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।’

বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর