২০৩০ সালে নয়, ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ লক্ষে পৌঁছাতে হলে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে তা মোকাবেলা করতে পারলে আমরা দারিদ্রমুক্ত একটি দেশ উপহার দিতে পারব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত 'টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের লক্ষ্যেই অর্থায়ন' শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু একটি মানবিক মিশন-ভিশন ধারণ করে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করেছেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ মহান নেতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন। সে লক্ষেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।অর্থমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি আমরা। এই বছরের মধ্যে তা সাড়ে ৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে এই প্রবৃদ্ধি দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা সম্ভব নয়। দারিদ্র্যতা দূর করতে হলে অবশ্যই ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। যদিও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের বছর হিসেবে ২০৩০ নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যেই দারিদ্রতা দূর করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে পারবে।
এছাড়াও আর্ন্তজাতিক এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, ‘বিশ্বায়নের এ সময়ে টেকসই প্রবৃদ্ধি উন্নয়নে তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চাসহ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরী বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে এবং তরুণ সমাজকে এতে সক্রিয় অংশগ্রহণের বিকল্প নেই। ব্যাংকগুলোতে সঞ্চয়ের পরিমাণ কম, কিন্তু ঋণের পরিমাণ বেশি। যা অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়ায়। এ ঝুঁকি কমাতে সঞ্চয় বা অর্থায়নের পরিমাণ বাড়াতে হবে, ঋণের পরিমাণ কমাতে হবে।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আজকের আন্তর্জাতিক সেমিনার বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফিন্যান্স বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। অধ্যাপক মোহাম্মদ আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সালেহ জহুর, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের শুরুতে নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ৬১ টি গবেষণা পেপার উপস্থাপন করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন