২২ এপ্রিল, ২০১৮ ১৪:১৩

ডীনের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় ক্ষিপ্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ডীনের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় ক্ষিপ্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

ডীন ড. হাসিনুর রহমানকে এক কর্মকর্তার অসদাচারণের ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষকদের নিয়ে অর্থ শাখার আরেক কর্মকর্তার ফেসবুকে কটাক্ষমূলক পোস্টেও ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জরুরি সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। দ্রুত  এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হলে শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডীন, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞানের চেয়ারম্যান, ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক এবং সিন্ডিকেট সদস্য ড. হাসিনুর রহমান আর্থিক সংক্রান্ত প্রয়োজনে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অর্থ ও হিসাব শাখার সহকারী পরিচালক বরুন কুমার দে’র মুঠোফোনে কয়েকবার কল দেন। কিন্তু বরুন কুমার ওই ফোন কল রিসিভ কিংবা পরবর্তীতে ফিরতি কলও দেননি। বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও তাকে না পেয়ে ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষক ড. হাসিনুর রহমান অর্থ শাখায় বরুন কুমার দে’র কক্ষে গিয়ে কথা বলার চেস্টা করেন। কথা বলতে না পেরে ড. হাসিনুর রহমান বরুন কুমারকে তার কক্ষে জরুেি কথা শোনার অনুরোধ করেন। বিকেল ৪টার দিকে বরুন কুমার ড. হাসিনুর রহমানের কক্ষে গেলে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরও কল রিসিভ কিংবা ফিরতি ফোন না দেওয়ার কারণ জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বরুন কুমার তার সাথে তর্কে লিপ্ত হন। তিনি শিক্ষকের অধিনস্থ নন বলে জানান। ড. হাসিনুর বিষয়টি উপাচার্যকে অবহিত করার কথা বললে আরও তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি। তিনি শিক্ষক ড. হাসিনুরকে কটাক্ষ করে অশোভন আচরন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় ওই কক্ষে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আলাউদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ এন্ড ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. খোর্শেদ আলম অর্থ শাখার সহকারী পরিচালক বরুনকে নিবৃত্ত করেন। 

ওইদিন রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখার আরেক সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান তার ‘Masum Atiqur' নামের ফেসবুক আইডিতে শিক্ষকদের নিয়ে একটি আপত্তিকর পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন ‘শিক্ষককরা কি আমাদের সকলকে তাদের ছাত্র মনে করেন? এটা কি তাদের বোঝার ভুল না কি জ্ঞানের অভাব ?' ওই পোস্টে বিশ্ববিদ্যলয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর, অবমাননাকর এবং বিরূপ মন্তব্য করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন শিক্ষকরা। এ ঘটনার প্রতিকার পেতে পরদিন শুক্রবার জরুরী সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্য নির্বাহী কমিটি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডীন ড. হাসিনুর রহমান একজন জ্যেষ্ঠ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। তাকে লাঞ্চিত করেছে অর্থ ও হিসাব শাখার সহকারি পরিচালক বরুন কুমার। একই সাথে তিনি ওই শিক্ষককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ড. হাসিনুর রহমান শিক্ষক সমিতির কাছে ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সমিতির কার্য নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপাচার্যকে ওই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সমিতি আশা করেছিলো গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি আলোচিত হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে কোন আলোচনা না হওয়ায় বিকেলে শিক্ষক সমিতি জরুরী সভা করে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বলেন, শিক্ষক সমিতির অভিযোগ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/২২ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর