২৭ মে, ২০১৮ ১৮:০৫

জাবিতে ৯ মাস ধরে হয় না নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

জাবিতে ৯ মাস ধরে হয় না নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবারও উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে উপাচার্য বিরোধী হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের একাংশের জোট।

আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের তিনটি ফটকে ব্যানার ঝুলিয়ে এই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন তারা। ঘেরাও কর্মসূচির কারণে বন্ধ ছিল প্রশাসনিক কার্যক্রম। এছাড়া স্থগিত করা হয়েছে পূর্বনির্ধারিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নতুন শিক্ষক নিয়োগের সিলেকশন বোর্ড।

 
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা (৩০২ তম সভা) অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের আগস্টে। ফলে গত ৯ মাস ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা। উপাচার্য ৩০৩ তম সিন্ডিকেট সভাটি আহবান করেছিলেন এ বছর ১২ এপ্রিল। কিন্তু সেটিও ১১ এপ্রিল রাতে স্থগিত করে দেয়া হয়। তাছাড়া সর্বশেষ বিশেষ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২রা ফেব্রুয়ারি।

উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অধিবেশন পরিচালনা বিধি’র ১ম ধারাতে বলা আছে উপাচার্য প্রতি মাসে একটি করে নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা আহবান করবেন। আহবান করা সিন্ডিকেট সভা কেনো মতেই বাতিল করা যাবে না। উপাচার্য যদি কোনো কারণে উপস্থিত থাকতে না পারেন তবে সিন্ডিকেটের সবচেয়ে সিনিয়র ব্যাক্তিটিকে দায়িত্ব দেবেন তিনি ঐ সিন্ডিকেট পরিচালনার জন্য।” 

এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ১২ এপ্রিল ৩০৩তম যে সিন্ডিকেট সভাটি উপাচার্য বাতিল করেছেন সেটি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নতুন নিয়োগ প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকদের সংগঠনটি। সেই ঘোষণার অংশ হিসেবেই আজকের ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে জানান ফরিদ আহমেদ। 

ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে সিন্ডিকেট সদস্য ও সংগঠনটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ বলেন, “সময় মতো সিন্ডিকেট সভা না হওয়াতে শিক্ষকদের পদোন্নতি, শিক্ষার্থীদের সনদ ও ডিগ্রিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থগিত হয়ে আছে। স্থগিত এই বিষয়গুলোর সমাধান করার জন্য সিন্ডিকেট সভা আহবান করেননি উপাচার্য। সভা আহবান না করেই ডিন ও প্রাধ্যক্ষ অপসারণ ও নতুন করে নিয়োগসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তিনি।”

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা আর সহযোগী সিন্ডিকেট সদস্যরা তাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেছেন বলেই সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। 

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনেই সিন্ডিকেট সভাগুলো নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন। তবে বিশেষ কিছু কারণে তা হয়ে উঠছে না। যতটা সম্ভব তাড়াতাড়িই পরবর্তি সিন্ডিকেট সভা আহবান করা হবে।”

প্রসঙ্গত, উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অধ্যাদেশবিরোধী’ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দাবিতে গত ১৭ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসছে উপাচার্য বিরোধী আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশরা।

 

বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর