৭ জুন, ২০১৮ ২১:৫০

রাবিতে এবার ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে রাতের আধাঁরে আম লুটের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

রাবিতে এবার ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে রাতের আধাঁরে আম লুটের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) টেন্ডার হওয়া তিনটি বাগানের আম লুট করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে ছাত্রলীগের প্রায় ২৫ জন নেতা মিলে দশ মণেরও বেশি আম লুট করেছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজউদ্দিন কলা ভবন, শহিদুল্লাহ কলা ভবন ও প্রশাসন ভবন এলাকার তিনটি আম বাগান ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে রাশেদ খান বিপু নামের এক ব্যক্তি টেন্ডার নিয়েছিলেন। তিনি টাকা জমাও দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বাগানের ঠিকাদার আজ দুপুরে এসে আম লুটের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। আমি ওনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পকে বিষয়টি জানাতে বলেছি। কারণ এই বিষয়টি তারাই দেখাশোনা করছেন। কৃষি প্রকল্প যদি আমাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেয়, শৃঙ্খলা কমিটিতে তুলতে বলে তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৪টার দিকে ছাত্রলীগের প্রায় ২৫ জন নেতা ৬ টি টিমে ভাগ হয়েছে গাছগুলো থেকে আম লুট করে নিয়ে গেছে। গার্ড তাদের আম পাড়তে নিষেধ করলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত তারা আম পেড়ে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে বাগানের ঠিকাদার রাশেদ খান বিপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘সাহরী করার পর আমি খবর পাই কারা যেন গাছ থেকে আম পাড়ছে। বাগানে গিয়ে আমি দেখি- ছাত্রলীগের প্রায় ২৫ জন নেতা আম পাড়ছে আর বস্তায় ঢুকাচ্ছে। তাদেরকে আম পাড়তে নিষেধ করলে তারা আম পাড়তেই থাকে আর নিজেদেরকে কেউ ছাত্রলীগের সহসভাপতি, কেউ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কেউ সহ সম্পাদক বলে পরিচয় দেয়। তাদের সঙ্গে কয়েকজন মেয়েকেও দেখেছিলাম। বাগানের ভাল ভাল যেসব আম (ল্যাংড়া, খিসসাপাকা)  সব তারা নিয়ে গেছে। তারা দশ মণেরও বেশি আম পেড়েছে।’

তিনি আরো জানান, ‘আমি বাগানগুলোর টেন্ডার নেয়ার পর ছাত্রলীগের কয়েকজন ভাই বেশ কয়েকবার প্রাকাশ্যে আম পাড়ার চেষ্টা করেছিল। তাদেরকে নিষেধ করায় তারা আমাকে বলেছিলেন- আম বিক্রি করার পর যে টাকা লাভ হবে তার কিছ অংশ যেন আমি তাদেরকে দেই। বুধবার তাদের সঙ্গে এবিষয়ে মিটিংও হয়েছিল। লাভের কিছু অংশ আমি তাদেরকে দিতে সম্মতও হয়েছিলাম। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা, এখন আর আসল টাকা উঠবে কিনা বলতে পারিছ না। তাই আমি আর এসব বাগানের আম চাই না। কৃষি প্রকল্পের কাছে আমি টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করব।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ছাত্রলীগের কোনো ছেলে আম পেড়েছে বলে আমার জানা নাই। আমি যদি দূর জানি, বাগানগুলো টেন্ডার হয়েছে। আর ছাত্রলীগের যারা এধরণের কাছ করতে পারে তাদেরকে আমি ও আমার সেক্রেটারি নিষেধ করেছি। আমাদের কেউ এধরণের কাজ করার কথা নয়।’
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ও কৃষি প্রকল্পের প্রধান অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিতে প্রক্টর মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করা হবে। যারা একাজ করেছে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে না। আজ তারা আম বাগান লুট করছে, দেখা যাবে কাল পুকুর দখল করছে, পরশু বিল্ডিংয়ের টেন্ডার নিয়ে মারামারি করছে। তাই যারা এধরণের কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর