শিরোনাম
২৬ জুলাই, ২০১৮ ১৫:৫৭

দ্বিতীয় অপারেশনে সুস্থ হয়ে উঠছেন তরিকুল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

দ্বিতীয় অপারেশনে সুস্থ হয়ে উঠছেন তরিকুল

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা উন্নতি হচ্ছে। ৯ জুলাই তরিকুলের পায়ে অস্ত্রোপচার করার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও কয়েকদিন পরেই তার ডান পায়ে ইনফেকশন ঘটে। ইনফেশনের সেই জায়গায় গত ২২ জুলাই অপারাশনের পর থেকেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন তরিকুল। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে তরিকুল স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন বলে নিশ্চিত করেছেন রাবির সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার। 

তরিকুল বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে চারজন চিকিৎসকের একটি মেডিকেল টিমের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে চিকিৎসক ও হাসপাতালের নাম জানাতে অপরাগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।

সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত ৯ জুলাই তরিকুলের ডান পায়ে অপারেশন করা হয়েছিল। প্রথম অপরেশনের পর থেকেই তরিকুলের শারিরীক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। তার ডান পায়ে প্রতিদিন ড্রেসিং করছিল কতর্ব্য চিকিৎসক ও নার্সরা। কিন্তু ডান পায়ের হাঁটুর নিচে যে জায়গা ভেঙ্গে গেছে সেখানকার মাংস থেতলে যাওয়ায় ইনফেশন হয়। ওই জায়গায় নতুন কোনো টিস্যু তৈরি হচ্ছিল না।

এমন অবস্থায় চিকিৎসকরা জানায়, পায়ের ওই জায়গায় যদি আর কোনো টিস্যু না সৃষ্টি হয় তবে তরিকুল সুস্থ হলেও পায়ের থেতলে যাওয়া অংশে গর্তের মতো হয়ে থাকবে। তাই চিকিৎসকরা মিটিং করে পায়ের থেতলে যাওয়া সেই অংশে আবার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। গত ২২ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় তরিকুলের পায়ে গ্রাফটিং সার্জারি করা হয়। চিকিৎসকরা পায়ের উপরের থাইয়ের একটু চামড়া কেটে হাটুর নিচে থেতলে যাওয়া অংশে লাগান। সেদিন থেকে তরিকুলের পায়ের ড্রেসিং করা বন্ধ ছিল। তবে আজ বৃহস্পতিবার আবার ড্রেসিং করা হবে।   

সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন আরো বলেন, তরিকুলের চিকিৎসা ভালোভাবেই চলছে। ঢাকায় অবস্থানরত আমাদের বন্ধুরা তরিকুলের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। গত ২২ তারিখের অপারেশনের সময় আমি নিজেও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলাম। আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকরা তরিকুলের চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়টি দেখছি। ঢাকায় আমাদের বন্ধুরাও তরিকুলের চিকিৎসা ব্যয়ে সহায়তা করছেন।

এর আগে গত ৫ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা অসম্পন্ন রেখেই ছাড়পত্র দেয়ার পর শহরের রয়েল হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ৬ জুলাই রয়্যাল হাসপাতালে গিয়ে তরিকুলের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষকরা। সেখানে চিকিৎসক জানান, তরিকুলের ডান পা ভেঙে গেছে। মাথায় ৯টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মেরুদণ্ডও সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের পরামর্শে ৮ জুলাই তরিকুলকে ঢাকায় পাঠানো ব্যবস্থা করেন চিকিৎসকরা। সেদিন বিকেল ৩টায় তরিকুল ঢাকায় পৌঁছালে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৯ জুলাই তার পায়ে অস্ত্রপচার করা হয়েছিল বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছিলেন রাবির নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকরা।

উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা পতাকা মিছিলের জন্য জমায়েত হয়। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। তরিকুলের উপরে চলে নির্মমতম অত্যাচার। বাঁশ, রড, রামদা ও হাতুড়ির আঘাতে তার মাথা ফেটে যায় এবং ভেঙে যায় ডান পায়ের হাটুর নিচের দুটি হাড়।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর