২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৭:৫৬

রাবিতে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার ছাত্রলীগের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

রাবিতে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার ছাত্রলীগের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবদুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। আজ সোমবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ‘গত শুক্রবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলে এক মাদকসেবীকে আটকের প্রেক্ষিতে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন। আবদুর রহমান নামে ওই শিক্ষার্থীকে রাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করেনি। মাদকসেবন করে ছাদ থেকে পালানোর সময় সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন তিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগকে জানান যে, হলের ছাদে বহিরাগত কয়েকজন ছাত্রদের নিয়ে মাদকসেবন করছে। এই সংবাদের প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বক্ল ‘ক’ এর ছাদে যায়।  এসময় ‘খ’ বক্লের ছাদে কয়েকজনকে মাদক সেবন করতে দেখা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের নিচে নামতে বললে মাদক সেবনকারীরা ভয়ে পালাতে শুরু করে এবং বহিরাগত একজন তার সাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে একজন মাদকাসক্ত আব্দুর রহমান সিঁড়ি দিয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এমতাবস্থায় মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাকে অতিথি কক্ষে নিয়ে আসে। তার কাছে জানতে পারে, তিনি বহিরাগত কয়েকজনকে নিয়ে হলের ছাদে মাদকসেবন করছিলেন। সেই সময় বিষয়টি হল প্রশাসন ও হলের পুলিশকে অবহিত করা হয়। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বলা হয় তাকে আপাতত পুলিশে না দিয়ে চিকিৎসা করাতে। সেই্ সময় হল শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায় ও হল প্রাধ্যক্ষ সেখানে আসেন এবং ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা মাদকাসক্ত আব্দুর রহমানকে হল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে প্রাধ্যক্ষের নির্দেশে মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই আব্দুর রহমানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।’

তবে এর আগে গত রবিবার গণমাধ্যম কর্মীদের ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান জানান, ‘মাদক সেবন করিনি জানানোর পরও রাবি ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহিল গালিব, সহ-সম্পাদক আব্দুল্লা হীল কাফি ও কর্মী শুভ্র দেব আমাকে মারধর করেছে। 

গাঁজা সেবনের বিষয়টি স্বীকার না করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভয়ে আমি বিষয়টি স্বীকার করি। তারা সেটি ভিডিও করে। পরে তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে চলে যায়।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ছাত্রলীগ মাদকের বিরুদ্ধে সব সময় জিরো টলারেন্স। ছাত্রলীগের হয়তো ছাদে যাওয়ার সময় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এটা না করা আমাদের ভুল হয়েছে। এরপর থেকে এই বিষয়গুলো আমরা খেয়াল রাখব। আর রাবি ছাত্রলীগের কেউ যদি মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত থাকে, আর তার প্রমাণ যদি কেউ আমাদের দেয় তবে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, মাহফুজ আল-আমিন ছাড়াও ঘটনায় অভিযুক্ত আসাদুল্লাহিল গালিব, আব্দুল্লাহ হীল কাফি ও শুভ্র দেব উপস্থিত ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর