২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৫:০৬

সাংবাদিককে ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধর, বিচারের দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

সাংবাদিককে ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধর, বিচারের দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী ও এক বহিরাগত ফটো সাংবাদিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় তাদের সাথে জাবি সাংস্কৃতিক জোট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখা, জাবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতিসহ আরো কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
 
মানববন্ধনে সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক মারুফ মোজাম্মেল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, একটি নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরাই এখন অলিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছে। এই ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হাতে এখন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আর নিরাপদ বোধ করছে না। তাদের ঔদ্ধত্য এখন এমন পর্যায়ে উঠে গেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একজন সাংবাদিকের উপরে হাত তুলতেও তারা আর দ্বিধা বোধ করে না। প্রশাসন যে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে আন্তরিক তাদেরকে এখন সেটিরই প্রমাণ দিতে হবে এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত করে।”

হামলাকারীদের বিচার দাবি করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, “এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গতকালকের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে নজির সৃষ্টি করতে হবে।” 

সাংবাদিকতা বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটা দীর্ঘ সময় ধরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছে। যার ভেতর দিয়ে এ ধরনের ঘটনাকে প্রচ্ছন্নভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে আরো ঘটবে।”

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুর রহমান (৪১ তম আবর্তন), ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি রিয়াজুল রশিদ, ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. মুসা (অর্থনীতি) এবং ৪৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দীন শামসুজ্জামান (সাংবাদিকতা) ও অরিত্র (আইন ও বিচার)।

প্রসঙ্গত, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল সংলগ্ন এলাকায় বহিরাগত এক আলোকচিত্রী এবং তার সঙ্গে থাকা মেয়ে বান্ধুবিকে কতিপয় ছাত্রলীগকর্মীর ছিনতাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক সোহাগ। পরবর্তিতে এই ছাত্রলীগ কর্মীরাই সংগঠিত হয়ে শারীরিক শিক্ষা ভবনের সামনে সোহাগ এবং তার সাথে থাকা একই বিভাগের আরেক নারী শিক্ষার্থীকে মারধর এবং লাঞ্ছিত করেন। পরে ভুক্তভোগীরা নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী নিলয়, বাংলা বিভাগের ৪৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শুভাশীষ ঘোষ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ৪৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ও ইয়া-রাফিউ শিকদার আপনের নাম উল্লেখ করে উপাচার্য এবং প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

উল্লেখ্য, অভিযুক্তরা সবাই শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী। এদের মধ্যে নিলয় শাখা ছাত্রলীগের আসন্ন হল কমিটিতে শহীদ রফিক জব্বার হলের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী।

বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর