৫ নভেম্বর, ২০১৮ ২২:৩৬

ইবির 'সি' ইউনিটের প্রশ্নপত্রে অসঙ্গতি, পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ

ইবি প্রতিনিধি

ইবির 'সি' ইউনিটের প্রশ্নপত্রে অসঙ্গতি, পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ও উত্তরপত্রে অসঙ্গতি দেখা গেছে। প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওএমআর মিল না থাকায় ফলাফল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম শিফটের পরীক্ষায় এই অসঙ্গতি পাওয়া যায়। 

এদিকে, বিকালে 'সি' ইউনিটের ইউনিট সমন্নয়কারী সদস্যদের সভা শেষে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির কাছে পরীক্ষা বাতিলে সুপারিশ করা হয়েছে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম শিফটে 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রশ্নপত্রে দেখা যায় মোট ৬০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন ১ থেকে ৩০ পর্যন্ত ইংরেজি, ৩১ থেকে ৪৫ পর্যন্ত ব্যবসায় শিক্ষা, ৪৬ থেকে ৬০ পর্যন্ত হিসাববিজ্ঞান বিষয় ক্রমবিন্যাস করা হয়। তবে ওএমআর শিটে প্রথমে ইংরেজী (১ থেকে ৩০) পরে হিসাববিজ্ঞান (৩১ থেকে ৪৫) এবং ব্যবসায় শিক্ষা (৪৬ থেকে ৬০) বিষয়টি ক্রমবিন্যাস করা হয়। এতে প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর এর সাথে অমিলের বিষয়টি উঠে আসে। তবে শিক্ষার্থীরা জানায় প্রশ্নপত্রে ৩১ থেকে ৪৫ নং এমসিকিউগুলোর ক্রমবিন্যাসে ব্যবসায় শিক্ষা থাকলেও মূলত এগুলো হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের। 

অপরদিকে, প্রশ্নপত্রে ৪৬ থেকে ৬০নং এমসিকিউগুলোর ক্রমবিন্যাস হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের দেয়া থাকলেও এগুলো মূলত ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের। এছাড়াও ২০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সাথে ওএমআর শিটেরও অমিল পাওয়া যায়। 

প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, ৬১ থেকে ৮০ নম্বর পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের ক্রমবিন্যাস করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা জানায় যে প্রশ্নপত্রে ৬১ থেকে ৮০ পর্যন্ত ক্রমবিন্যাস করা হলেও ওএমআর শিটে ক্রমবিন্যাস ১ থেকে ২০ পর্যন্ত করা হয়।

তবে পরীক্ষার কেন্দ্রে অসঙ্গতি দেখে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া হয় বলে জানায় কক্ষ পরিদর্শকরা। তারা জানায়, প্রশ্নে উল্লেখিত শিরোনামটা (ইংরেজি, ব্যবসায় শিক্ষা, হিসাববিজ্ঞান) বাদ দিয়ে প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত ক্রমানুসারে উত্তর দিতে বলি। এছাড়াও প্রশ্নপত্রে লিখিত পরীক্ষার ক্রমবিন্যাস ৬১ থেকে ৮০ হলেও তা ওএমআর শিটে অনুযায়ী ১ থেকে ২০ ক্রমানুযায়ী উত্তর দিতে বলি।

তারা আরও বলেন, যদি কোনো কক্ষে নির্দেশনা পৌঁছানোর আগেই শিক্ষার্থীরা উত্তর দিয়ে ফেলে তাহলে প্রশাসন থেকে আমরা অই কক্ষগুলোকে শনাক্ত করে রাখছি এ ব্যাপারে প্রশাসন পরে সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে বেশ কিছু কক্ষে এই নির্দেশনাটি দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। আবার বিভিন্ন অনুষদে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ভর্তিচ্ছুরা। যার ফলে তারা ওএমআর বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। 

একইসাথে বেশ কিছু পরীক্ষার হলে ওএমআর শিটে কাটাকাটি করে উত্তর দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। 

প্রশ্নে ক্রমবিন্যাসে ভুল থাকার পরও ওমএমআর শিটে হিসাববিজ্ঞানের পরিবর্তে ব্যবসায় শিক্ষা (৩১ থেকে ৪৫) এবং ব্যবসায় শিক্ষার পরিবর্তে হিসাববিজ্ঞান (৪৬ থেকে ৬০) বিষয়টি সংশোধন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ছাড়া অন্য কোন দাগ দিলে সে ওমএমআর বাতিল বলে গণ্য করা হবে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ওএমআর বাতিল হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা বলেন, আমরা প্রশাসন থেকে একটা নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু পরিদর্শকরা আমাদের নির্দেশনা যথাযথভাবে না মানায় কেন্দ্রে একটু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিব। যাতে কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি অবিচার করা না হয়।

এদিকে, প্রশ্নপত্রে ও উত্তরপত্রে অসঙ্গতির বিষয় নিয়ে জরুরি সভায় বসে 'সি' ইউনিটের ইউনিট সমন্নয়কারী সদস্যরা। তারা সভা থেকে ভর্তি পনীক্ষা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে জানান ইউনিটে সিনিয়র এক সদস্য। 

তিনি জানান, সভা থেকে ভর্তি বাতিলে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটিকে সুপারিশ করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে। 

বিডি প্রতিদিন/০৫ নভেম্বর ২০১৮/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর