৬ নভেম্বর, ২০১৮ ১৭:০৮

হল ছাড়লেন পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা, ভিসির পদত্যাগের আল্টিমেটাম

পাবনা প্রতিনিধি:

হল ছাড়লেন পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা, ভিসির পদত্যাগের আল্টিমেটাম

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের তোপের মুখে হল ছেড়েছেন। মঙ্গলবার সকালে হল ছাড়ার কথা থালেও তারা দুপুরে হল ত্যাগ করেন। গত রাতেই হল ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে বিদুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে বাধ্য হয়। 

তবে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্যম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক না হলে ভিসি-প্রক্টরসহ সকল প্রশাসনিক দায়িত্ব প্রাপ্তদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার আমাদের ৬টি দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ক্যম্পাসে আন্দোলন শুরু করলে ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আমাদের নিকট এক ঘণ্টা সময় নেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রিজেন্ট বোর্ডে সভা করে ১০ ছাত্রকে বহিষ্কারের সিদ্ধন্ত নেয় এবং মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করেন। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

এদিকে গত সোমবার রাতে দুই ডীন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানরাসহ ২০ শিক্ষক ও কর্মকর্তাসহ প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে আটকে রাখা হয়।

পতে সোমবার দিবাগত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যন্সেলর ড. আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিলে আটকে পড়া শিক্ষক কর্মকর্তাদের বের করে দেন। তারা মঙ্গলবারও দুপুর পর্যন্ত ক্যম্পাসে বিক্ষোভ করেন। এবং অযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা। 

প্রসঙ্গত, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রোস্তম আলী ফরাজি লাঞ্ছিতের ঘটনায় ১০ ছাত্রকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনার পর গোটা ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনার ছড়িয়ে পড়লে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের এক জরুরি সভায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ১১টার মধ্যে সকল ছাত্র-ছাত্রীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা দুপুর পর্যন্ত হলে অবস্থান নেয়। পরে পানি-বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করতে সক্ষম হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি করে আসছে, কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে নেবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। অথচ গত ৩/৪ মাস অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন প্রকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্যম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক করারও দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি: 
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষসহ পরবর্তী সকল ব্যাচসমূহের অর্ডিন্যান্সের আওতাভুক্ত করা, হলের ডাইনিংয়ের খাবার উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি প্রদান, ক্লাস রুম ও চেয়ার সংকট দূর করা, পরিবহন সংকট, ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও আগামী ১৬ নভেম্বর প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে এবং অফিস খোলা থাকবে বলে জানা গেছে। 

পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এবনে মিজান বলেন, বেলা ২ টা পর্যন্ত হলের সামনে উপস্থিত থেকে সকল শিক্ষার্থীদের বের করে হল দুটি সীলগালা করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ক্যম্পাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করলেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।


বিডি প্রতিদিন/৬ নভেম্বর ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর