১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৭:৫৬

রাবির মাস্টারপ্ল্যানে যুক্ত হচ্ছে ‘মিডিয়া সেন্টার’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

রাবির মাস্টারপ্ল্যানে যুক্ত হচ্ছে ‘মিডিয়া সেন্টার’

বক্তব্য রাখছেন রাবির মাস্টার প্ল্যান কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রস্তাবিত ৫০ বছর মেয়াদী ‘মাস্টার প্ল্যান’-এ মিডিয়া সেন্টার অন্তর্ভুক্তকরণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে এ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।

মাস্টার প্ল্যান কমিটি কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান। মাস্টার প্ল্যান কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ। 

দুই পর্বে বিভক্ত এই মতবিনিময় সভায় উদ্বোধনী অংশে উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যতের স্বার্থেই একটি মাস্টার প্ল্যান থাকা একান্ত প্রয়োজন। বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী। সে লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে প্রণীত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মাস্টার প্ল্যানের আলোকে আগামী ৫০ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনায় মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। বর্তমান বিশ্বে অবাধ তথ্য প্রবাহের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মিডিয়া সেন্টার স্থাপন আবশ্যক বলে কর্তৃপক্ষ মনে করে। সে ধারণা বাস্তবায়নে বিভিন্ন ইস্টেকহোল্ডারের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই আয়োজনের মাধ্যমে উপস্থিত গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনাকে টেকসই করতে সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য। 

সভাপতির বক্তব্যে মাস্টার প্ল্যান কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে গতিশীল ও আগামীর জন্য গড়ে তুলতে হলে একটি নতুন মাস্টার প্ল্যান একান্ত প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যা ক্রমে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন ও স্থাপনাসমূহের নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করতে একটি আর্কাইভও প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও কিছু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন চলছে। এই মতবিনিময়ে অংশগ্রহণকারীদের মতামত ও পরামর্শ কর্তৃপক্ষের গৃহীত পরিকল্পনাকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

উপ-উপাচার্য উল্লেখ করেন যে, দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই এ ধরনের একটি মিডিয়া সেল অন্তর্ভুক্তির কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে মাস্টার প্ল্যান কমিটির অন্যতম সদস্য ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর রকীব আহমদ ও প্রফেসর মো. রেজাউর রহমান মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রস্তাবিত মাস্টার প্ল্যানের বিভিন্ন কারিগরী দিক ও আনুসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেয়া হয়। 

প্রশ্নকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা প্রফেসর মো. ফখরুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের প্রফেসর মো. তারিকুল হাসান, আইসিটি সেন্টারের প্রশাসক প্রফেসর মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্লা, স্থানীয় সোনালী সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক মো. লিয়াকত আলী, সোনার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, মো. আনিসুজ্জামান (ইত্তেফাক), মেহেদী হাসান শ্যামল (মোহনা টিভি),  জিয়াউল গণি সেলিম (এসএ টিভি), মো. গোলাম রব্বানী (মাছরাঙা টিভি), জাবিদ অপু (যমুনা টিভি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শিহাবুল ইসলাম প্রমুখ। 

এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের মিডিয়া সেন্টার অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং মাস্টার প্ল্যান কমিটির সভাপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত ৫০ বছর মেয়াদী মাস্টার প্ল্যান তিন পর্বে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হবে। এর প্রথম পর্ব ৫ বছর মেয়াদী (২০১৮-২০২২), দ্বিতীয় পর্ব ২০ বছর মেয়াদী (২০২৩-২০৪২) ও তৃতীয় পর্ব ২৫ বছর মেয়াদী (২০৪৩-২০৬৭)।

এই অনুষ্ঠানে পিআইডি ও জেলা তথ্য অফিসের প্রধান, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশের টেলিভিশনের স্থানীয় প্রধানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ১৫০জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর