ক্যাডেট কলেজের পঞ্চম ব্যাচের বর্ষীয়ান বালকদের পদচারণায় মুখরিত জয়দেবপুরের দিপালি রিসোর্ট। এটি একটি বিশেষ মিলনমেলা। কারণ এ বছর ছিল তাদের কলেজ শুরুর পঞ্চাশ বছর পূর্তি। আর এই মিলনমেলায় অংশ নিয়ে ছিলেন বর্ষীয়ান বালকদের পরিবারের সদস্যরা।
দিনের শুরুতেই তারা কুচকাওয়াজ করেন, যেমন তারা কলেজে করতেন। দেখে মনে হচ্ছিল তারা এখনো সেই উদ্দাম এবং চঞ্চলতা ফিরে পেয়েছেন বাল্যস্মৃতির রোমান্থনে। সারাদিন চলল নিয়মতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডে।
ফুটবল, ক্রিকেট এবং অন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হলো ষাটোর্ধ্বদের মাঝে। ছিল নারী ও শিশুদের খেলার ব্যবস্থাও। তবে যারা ক্যাডেট জীবন দেখেননি তাদের কাছে হয়তো খাবার দৃশ্যটাই উপভোগ্য মনে হবে। সবাই খাবার নিয়ে চুপচাপ বসে আছে। প্রিফেট হলেন, ঘণ্টা বাজালেন। উচ্চস্বরে বললেন, জেন্টলম্যান ক্যাডেট 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম'। সকলে সমস্বরে পুনরাবৃত্তি করলেন। এরপরই শুরু হলো কাটা চামচের টুং টাং।
এরপর সন্ধ্যায় সতীর্থদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং চলল স্মৃতিচারণ। যেন আবেগ ঝরে পড়তে লাগলো। সেই সব ঘটনা কেউ শুনলে তুচ্ছ মনে করবে। কবেকার ফেলে আসা আন্তঃহাউজের প্রতিযোগিতার মনোভাব এবং কলেজের সুনামের গর্বে সবাই উদ্বেলিত হচ্ছিল।
পরের দিন ছিল আরও রঙিন। দিপালি রিসোর্টে সুইমিং পুলে শুরু হলো এক মিলনমেলা। এসময় সকলে উল্লাসে মেতে উঠেন।
রুমাল চুরি, নিশানা ভেদ ইত্যাদি সামাজিক খেলা চলল সারাদিন ভরে। নারীও মেতে থাকলেন বিভিন্ন খেলায়। সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিজ্ঞজনদের বিচারে এই অনুষ্ঠান হয়তো তেমন কোনো মাত্রা পাবে না, কিন্তু ক্যাডেটগণ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়েছে আলাদা এক মাত্রা।
মিলনমেলা ঠিকই শেষ, তবে রয়ে গেল রেশ। সকলে প্রতিযোগিতার এবং র্যাফেলের পুরস্কার নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন। পেলেন 'হারিয়ে যাওয়া' বন্ধুদের সান্নিধ্যের দুটি দিন।
বিডি প্রতিদিন/২৪ জানুয়ারি ২০১৯/আরাফাত